তান্ত্রিক যোগ, সম্পত্তি বিবাদ, না কি পারিবারিক বিবাদের শিকার হতে হল গুপ্তিপাড়ার (Guptipara) ছোট্ট স্বর্ণাভকে। পরিবারের তিনজনকে গ্রেফতার করে তদন্ত চালাচ্ছে হুগলি গ্রামীণ পুলিশ (Hooghly Rural Police)। তবে গ্রেফতার শিশুর দাদু, ঠাকুমা ও জ্যেঠিমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এত নৃশংস খুনের পিছনে সঠিক কারণ নিয়ে এখনও ধন্দে পুলিশ। অনেক ক্ষেত্রেই তারা পুলিশকে ভুল তথ্য দিচ্ছেন বলেও সন্দেহ। সোমবার চুঁচুড়া আদালতে তাদের তোলা হয়।

পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে স্বর্ণাভর মায়ের সঙ্গে শাশুড়ি এবং জায়ের সম্পর্ক ভালো ছিল না (family dispute)। এমনকী স্বর্ণাভ খুব একটা বেশি ঠাকুমার কাছেও যেত না। মা বাড়িতে না থাকলে প্রতিবেশী মাধবী ঘোষের বাড়িতেই বেশিরভাগ সময় থাকত সে। স্বর্ণাভর মা সুপ্রিয়া জানান, তাঁর শ্বশুর মাঝেমধ্যেই তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করত। ব্যক্তিগত কারণেই সম্পর্কে অবনতি, জানান তিনি। স্বর্ণাভর বাবা যাদব সাহা পেশায় গাড়ি চালক। আবার প্রতিবেশীদের কথায় উঠে এসেছে সম্পত্তি সংক্রান্ত (property dispute) কারণে ভাসুর ও শ্বশুরের বিরাগভাজন ছিল স্বর্ণাভর বাবা-মা।

স্বর্ণাভ নিখোঁজ হওয়ার পরে প্রথম তার দেহ দেখতে পায় দাদু। তখনই দাদুর কথায় অসঙ্গতি পায় পুলিশ। ড্রোন ও পুলিশি তল্লাশিতে যে দেহ পাওয়া যায়নি তা এত সহজে শৌচাগারে কীভাবে পাওয়া গেল, প্রশ্ন জাগে পুলিশের তদন্তে। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, শিশুটিকে বাড়িতেই খুন করে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশি তৎপরতায় দেহ লোপাট করা সম্ভব হয়নি। তাই বাথরুমে তা ফেলে দেওয়া হয়। গ্রেফতার করা হয় দাদু শম্ভু সাহা, ঠাকুমা চায়না সাহা এবং জেঠিমা টুম্পা সাহাকে। শিশুটির দেহের ময়নাতদন্ত (postmortem) করা হয় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে। করা হয় ভিডিয়োগ্রাফিও (videography)।

ছোট্ট স্বর্ণাভর মর্মান্তিক মৃত্যুতে একদিকে শোক আর বিস্ময় এলাকায়। এক প্রতিবেশীর পোষা কুকুর অ্যালেক্সের সঙ্গে স্বর্ণাভর ভালো সম্পর্ক ছিল। ৪৮ ঘণ্টার বেশি ‘বন্ধু’-র দেখা পায়নি অ্যালেক্স। হঠাৎই নিশ্চুপ এই সে। সকাল থেকেই কিছু মুখে তোলেনি অ্যালেক্স, দাবি প্রতিবেশীর। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি ছোট্ট শিশুকে যেই খুন করুক তাকে দ্রুত শনাক্ত করে কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি দেওয়া হোক।

