এবার অবলুপ্তির পথে তিলোত্তমার ‘আইকন’ হলুদ ট্যাক্সি!

কারণ হিসাবে জানা গিয়েছে, লকডাউনের ধাক্কায় বহু ট্যাক্সির মালিকই গাড়ি বিক্রি করে দিয়ে অন্য ব্যবসা করতে বাধ্য হয়েছেন। 

তিলোত্তমা কলকাতা মানে শুধু রসগোল্লা, ফুটবল, হাতে টানা রিকশা, ট্রাম নয়। কলকাতার ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ‘হলুদ ট্যাক্সি’-ও! গোটা শহরে একটা সময়ে তাদেরই দৌরাত্ম্য ছিল। তারাই দাপিয়ে বেড়াত তিলোত্তমা জুড়ে। ভাবুন একবার, প্রথম চুমু থেকে প্রথম রোজগারে নবাবি, কত কিছুর না সাক্ষী এই চারচাকার ব্যাকসিট! কিন্তু এবার অবলুপ্তির পথে সেই ‘আইকন’।জানা গিয়েছে, আগে এই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ১৮ হাজার ট্যাক্সি চলত। কিন্তু বর্তমানে তা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬ হাজারে। কারণ হিসাবে জানা গিয়েছে, লকডাউনের ধাক্কায় বহু ট্যাক্সির মালিকই গাড়ি বিক্রি করে দিয়ে অন্য ব্যবসা করতে বাধ্য হয়েছেন।

শহরে যত হলুদ ট্যাক্সি বর্তমানে আছে, তারমধ্যে থেকে অর্ধেকের বেশি হলুদ ট্যাক্সি এবার তুলে নেওয়া হবে। এর মূল কারণ, সেইসব ট্যাক্সি ১৫ বছরের বেশি বয়সী, ফলে দূষণ ছড়াচ্ছে এবং সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সেই সব গাড়ি আর রাস্তায় চলতে পারবে না। রয়েছে ক্রমে বেড়ে চলা রক্ষণাবেক্ষণের খরচ। ২০১৮ সালে শেষ বার হলুদ ট্যাক্সির ভাড়া বেড়েছিল, তার পর পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে, কোভিড পরবর্তী সময়ে সব পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি হলেও হলুদ ট্যাক্সির ভাড়া বাড়েনি।

জানা গিয়েছে, ১৫ বছর বয়সের যে সব ট্যাক্সি বাতিল হয়েছে, তাদের বিকল্প হিসেবে নতুন গাড়ির পারমিট দেওয়ার কথা পরিবহণ দফতরের। কিন্তু সেই পারমিটও দেওয়া হচ্ছে না। ফলে ক্রমশ বাজার দখল করে নিচ্ছে ‘ওলা’, ‘উবের’-এর মতো অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলি। এরই পাসাপাশি, আজকের প্রজন্ম অনেক বেশি আরামপ্রিয়। তাদের আর গরমে ঘেমে নেয়ে ‘বুড়ো অ্যাম্বাসাডর’-এ চাপতে মন চায় না।

সম্প্রতি হলুদ ট‌্যাক্সিকে বাঁচাতে রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে চিঠি লিখেছেন রাজ্যের ট্যাক্সি মালিক এবং শ্রমিক ইউনিয়নগুলি।১৫ বছরের নিয়ম মেনে ট‌্যাক্সি বসে গেলেও গাড়ি মালিকদের দাবি, ওই পারমিটেই নতুন গাড়ি রাস্তায় নামাতে দেওয়া হোক। তার রং হোক হলুদ। কলকাতার নস্ট্যালজিয়া জড়িয়ে রয়েছে হলুদ ট‌্যাক্সির সঙ্গে। এটাকে উঠিয়ে দেওয়া একেবারেই ঠিক হবে না।এখন দেকার সেই আর্জি মেনে শেষ পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত কার্যকর করে রাজ্য পরিবহণ দফতর।

3.
4.
5.
6.
7.
8.
9.
10.