বাংলাদেশ সরকার ভারতের আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি পুনরালোচনা করতে চায়। সরকারের লক্ষ্য, বিদ্যুতের দাম অনেকটাই কমিয়ে আনা, যদি না আদালত শেষমেশ এই চুক্তি বাতিলের নির্দেশ দেয়।এদিকে আদানি গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির বিরুদ্ধে মার্কিন আদালত ভারতে ২৬ কোটি ৫০ লাখ ডলারের ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছে। অন্তর্বর্তী সরকার আদানির চুক্তি ও অন্যান্য ছয়টি বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনা করতে পৃথক কমিটি গঠন করেছে। আন্তর্জাতিক আলোচনা ও সালিসিতে গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে এটা করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুসারে, ২০২২–২৩ অর্থবছরে আদানি প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরেছে ১৪ টাকা ০২ পয়সা, যেখানে দেশে বিদ্যুতের গড় দাম ৮ টাকা ৭৭ পয়সা।২০২৩-২৪ অর্থবছরে আদানি পাওয়ার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ধরেছে ১২ টাকা। ভারতের অন্যান্য বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদকদের দামের চেয়ে এটা ২৭ শতাংশ বেশি এবং সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে ৬৩ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ইউনিট প্রতি ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। এই দামেই প্রতিবছর সরকারকে ৩২০ বিলিয়ন বা ৩২ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।

তবে বাংলাদেশ আদানির বিদ্যুতের দাম পরিশোধ অব্যাহত রাখবে, যদিও আদানি সম্প্রতি অর্থ পরিশোধে দেরি করার কারণে সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছে।বাংলাদেশ সরকার নিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, সে দেশে এক ইউনিট বিদ্যুৎ কিনতে গড়়ে ৮ টাকা ৭৭ পয়সা খরচ করতে হয়। খুচরো বাজারে বিদ্যুতের দাম ৮ টাকা ৯৫ পয়সা। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই দামের থেকেও কম দামে আদানিদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে চাইছে বাংলাদেশ। বিদ্যুৎ দফতরের উপদেষ্টা জানিয়েছেন, চড়া দামে কেনা বিদ্যুৎ সস্তায় দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার। কিন্তু শুধুমাত্র আদানি নয়, সব বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকেই অপেক্ষাকৃত কম দামে বিদ্যুৎ কিনতে চাইছে ঢাকা।

২০১৭ সালে শেখ হাসিনার আমলে আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু এই চুক্তিতে একাধিক অনিয়ম ধরা পড়ায় গত সপ্তাহে বাংলাদেশের হাইকোর্ট তদন্তের নির্দেশ দেয়। তদন্তের জন্য বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দেয় আদালত। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ওই কমিটির রিপোর্ট দেওয়ার কথা।


