Thursday, December 25, 2025

রেলস্টেশন একটাই, বিভক্ত দুই রাজ্যে! বিরল এই ছবি রয়েছে আমাদের দেশেই

Date:

Share post:

রেলস্টেশন একটাই, কিন্তু বিভক্ত দু’টি রাজ্যে! বিরল এই ছবি রয়েছে ভারতের রেল মানচিত্রেই। এই স্টেশনটির এক প্রান্তে এক রাজ্য, বিপরীত প্রান্ত রয়েছে অন্য রাজ্য। একটি রেলস্টেশন (Railway Station) এক সূত্রে গেঁথেছে দুই রাজ্যকে। দুই রাজ্যের সেতুবন্ধন করেছে স্টেশনটি। ভারতের পশ্চিম রেলে অবস্থিত বিরল এই স্টেশন। মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) নন্দুরবার আর গুজরাটের (Gujarat) তাপি জেলাকে মিলিয়ে দিয়েছে স্টেশনটি।

নবপুর (Nabapur) রেলস্টেশন। গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের একেবারে সীমান্তে অবস্থিত। একসঙ্গে রেলস্টেশনটি স্পর্শ করেছে দুই রাজ্যকে। এমন বিরল রেলওয়ে স্টেশন সারা দেশে একটাই রয়েছে। কিন্তু কেন এমন হল? কী করেই বা সম্ভব হল এক রেল স্টেশনের দুই রাজ্যের মধ্যে মেলবন্ধন তৈরি করা। আসলে এর মধ্যে রয়েছে রাজ্যভাগের গল্প। যখন স্টেশনটি নির্মিত হয়েছিল, তখন মহারাষ্ট্র (Maharashtra) ও গুজরাত (Gujarat) ছিল একটি রাজ্য। পরে তা ভাগ হয়ে যায়।

১৯৬১ সালের মে মাসের আগে পর্যন্ত ছিল একটাই রাজ্য মুম্বই প্রদেশ। ওই বছরের ১ মে মুম্বই প্রদেশকে ভেঙে দুটি রাজ্য করা হয়। মুম্বই ভেঙে হয় মহারাষ্ট্র আর গুজরাট। এই বিভাজন রেখা নবপুর স্টেশনকে আধাআধি ভাগ করে দেয়। তখন থেকেই আলাদা পরিচয় তৈরি হয় এই রেলস্টেশনের। দুই রাজ্যের সীমানা এমন একটি অংশ দিয়ে গিয়েছে যে, এই রেলস্টেশনে একটি বেঞ্চও দু-ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। একটি বেঞ্চের অর্ধেক মহারাষ্ট্রে এবং বাকি অর্ধেক গুজরাতে। এবং ওই বেঞ্চটি আজও সেই রাজ্যভাগের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। পর্যটকদের কাছে তা আকর্ষণীয়। সেই কারণে সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে আসনটি। সরানো হয়নি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে।

ওই সংরক্ষিত বেঞ্চে বসে যাত্রী ও পর্যটকরা দুই রাজ্যকে একসঙ্গে ছোঁয়ার সাধপূরণ করেন। এক বেঞ্চে, কিন্তু কেউ বসে থাকেন মহারাষ্ট্রে, আর কেউ গুজরাটে। এই বেঞ্চকে কেন্দ্র করে রেলস্টেশনে তৈরি করা হয়েছে একটি সেলফি পয়েন্ট। এই বেঞ্চে বসে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটক বা যাত্রীরা ছবি তোলেন, এই বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকতে। এখানেই শেষ নয় বিস্ময়ের। আরও বিস্ময় রয়েছে রেলস্টেশনটিকে ঘিরে। এই স্টেশনের টিকিট উইন্ডোটি মহারাষ্ট্রে পড়ে। আর স্টেশন মাস্টার বসেন গুজরাতে। শুধু তাই নয়, এই স্টেশনে চারটি ভিন্ন ভাষায় ঘোষণা হয়ে থাকে। হিন্দি (Hindi), ইংরেজির (English) সঙ্গে গুজরাতি (Gujarati) ও মারাঠি (Marathi) ভাষাতেও ট্রেনের ঘোষণা হয়। যাবতীয় তথ্যও লেখা থাকে চারটি ভাষায়। মহারাষ্ট্র ও গুজরাত উভয় রাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের সুবিধার্থে এই পদ্ধতিতে তথ্য সরবরাহ করা হয়ে থাকে। মোটকথা পরতে পরতে বিস্ময় লুকিয়ে রয়েছে মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের এই বিরল রেলস্টেশনকে কেন্দ্র করে।

উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র ও গুজরাট— এই দুই রাজ্যের মধ্যে অবস্থিত নবপুর রেলস্টেশনের মোট দৈর্ঘ্য ৮০০ মিটার। তার মধ্যে ৩০০ মিটার মহারাষ্ট্রে অবস্থিত। বাকি ৫০০ মিটার গুজরাটে। স্টেশনে রয়েছে মোট তিনটি প্ল্যাটফর্ম। চারটি রেলপথ দিয়ে ছুটে চলে ট্রেন।

spot_img

Related articles

সময়ের দেরিতেই বাঁধা প্রেমের গল্প-২৫ দিনের মাইলস্টোন ছুঁয়ে হলে ‘দেরি হয়ে গেছে’

সুদীপ্ত বন্দ্যোপাধ্যায় নস্টালজিয়া, আবেগ আর রহস্যের মিশেলে দর্শকদের মন জয় করে প্রেক্ষাগৃহে টানা ২৫ দিনের বেশি সময় ধরে সফলভাবে...

নতুন তিন বিমান সংস্থা: ইন্ডিগোর একচেটিয়া দখল ভাঙছে দেশের আকাশে 

দেশের আকাশপথে একচেটিয়া দখল ভাঙতে যাচ্ছে। ইন্ডিগোর বিমান বাতিল ও যাত্রী অসুবিধার পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার নতুন তিনটি সংস্থাকে...

ক্রিসমাস ইভে পর্তুগিজ চার্চে সকলের মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা মুখ্যমন্ত্রীর

ধর্ম যার যার, উৎসব সবার- এই মতাদর্শে বিশ্বাসী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যতটা শ্রদ্ধা ও গুরুত্বের...

শালবনিতে ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হুগলিতে ওয়্যারহাউস! সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভার 

কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প পরিকাঠামো বৃদ্ধি করতে বড় সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে...