বাম আমলে ইংরেজিকে ব্রাত্য করে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে জলাঞ্জলি দিয়েছিল তৎকালীন শাসকদল। ইংরেজি শিক্ষার জন্য একসময় রাজ্যের যে পড়ুয়ার ইংরেজি মিডিয়াম-মুখী (English medium) হয়েছিলেন, এবার তাঁরাই রাজ্য সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখছেন। একাদশ শ্রেণীতে রাজ্য সরকারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির হারই প্রমাণ করে দিচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) আমলে শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের ছবিটিকে। উচ্চ পর্যায়ের সিলেবাস কমিটি (syllabus committee) গঠন করে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ১৯ টি বিষয়ের সিলেবাসের বদল করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ (West Bengal Council of Higher Secondary Education)। চালু হচ্ছে সেমিস্টার সিস্টেম। সংসদের দাবি এই পরিবর্তনের জেরেই উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির হারে ঘাটতি হওয়ার পরিবর্তে বেড়েছে ভর্তির প্রবণতা।

সংসদের পরিসংখ্যান বলছে এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৫২ জন পরীক্ষার্থী। অন্যদিকে একাদশ শ্রেণীতে ইতিমধ্যেই রেজিস্ট্রেশন (registration) সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে ৭ লক্ষ ৬৮ হাজারের বেশি পড়ুয়ার। মাধ্যমিক উত্তীর্ণের সংখ্যা থেকে প্রায় ১৯ হাজার পড়ুয়া একাদশে বেশি ভর্তি হয়েছে। আর এই অতিরিক্ত পড়ুয়া এসেছে সিবিএসই (CBSE) আইসিএসসই (ICSE) শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্যের দাবি রাজ্য সরকার যেভাবে সেমিস্টার সিস্টেম (semester system) চালু করে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন এনেছে রাজ্য সরকার তাতে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির আগ্রহ বেড়েছে পড়ুয়াদের।

তবে শুধুই সেমিস্টার সিস্টেম নয়। এখানে কাজ করেছে আরো অনেকগুলি ফ্যাক্টর। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্যের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সিলেবাসে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। যা আকৃষ্ট করেছে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রের পড়ুয়াদের। তিনি আরো বলেন একটা সময় প্রচলিত ধারণা ছিল রাজ্য সরকারের বোর্ডে নম্বর কম পাওয়া যায়। যাতে পরবর্তীকালে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার (competitive exam) ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের পরীক্ষাগুলিতে রাজ্য সরকারের বোর্ড থেকেও অনেক বেশি নম্বর পাওয়ার সুযোগ হয়েছে পরীক্ষার্থীদের। যা এই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও আকর্ষণীয় করেছে।

সেই সঙ্গে এই ভর্তির হার বাড়ার প্রবণতা বেশি দেখা গিয়েছে কলকাতা শহরে। জেলাগুলিতেও একই রকম প্রায় প্রতিফলন। বৈদ্য-র দাবি, যেভাবে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে (English medium school) পড়াতে গেলে একটা বিরাট অংকের টাকা খরচ করতে হয় পড়ুয়াদের পরিবারকে তার থেকে মুক্তি পেতেও অভিভাবকরা রাজ্য সরকারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আস্থা রেখেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর জনমুখী চিন্তাভাবনায় একাদশ শ্রেণী থেকে তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে মোবাইল ফোন (smart phone) পান পড়ুয়ারা, যা তাদের উচ্চ শিক্ষায় সাহায্য করে। এই ব্যবস্থা অভিভাবকদের সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়াদেরও আকৃষ্ট করেছে রাজ্য সরকারের শিক্ষা ব্যবস্থায়।

–

–

–

–

–

–

–
