রাস্তার ওপরে এক যুবককে বেধড়ক মারছে এক যুবতী। রীতিমতো জামার কলার ধরে মার খাচ্ছেন ওই যুবক। তার কোনও কথাই শুনতে রাজি নয় যুবতী। তার সঙ্গী আরো দুই যুবতীও প্রায় মারমুখী। কেউই বুঝে উঠতে পারছেন না, আসল ঘটনাটা কি। তবু তাদের রাস্তা থেকে সরানোর চেষ্টা করলেন পথচলতি মানুষ।শেষ পর্যন্ত ডাকতে হল পুলিশ।ঘটনাস্থল কোন্নগর শকুন্তলা কালীবাড়ির মাঠ। সেখানে দিন দুয়েক ধরে চলছে বইমেলা। ফলে সন্ধ্যা নামতেই রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড়ে এমনিতেই যানজট। তার মধ্যে এই ঘটনায় যানজট বাড়ল বই কমল না। রাস্তায় থমকে গেল সমস্ত গাড়ি। দু’জনকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর স্পষ্ট হল গন্ডগোলের কারণ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রিষড়ার দুই যুবক-যুবতীর অনেক দিনের প্রেমের সম্পর্ক। তারা দুজনেই বিবাহিত। প্রেমের পরিণতির জন্য দুজনেই বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়ায় আছেন। কিন্তু পারিবারিক অশান্তিতে আর একসঙ্গে থাকা হয়ে উঠছিল না তাদের। তাই দু’জনেই স্থির করেছিলেন বিষ খেয়ে জীবন শেষ করে দেবেন।

যুবতীর অভিযোগ, যা কথা হয়েছিল সেই অনুযায়ী তিনি বিষপান করেছিলেন। কিন্তু প্রেমিক আত্মহত্যার কথা বললেও কোনও চেষ্টাই করেননি।যুবতী হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে যখন পাঞ্জা লড়ছিলেন, তখনও দেখা মেলেনি প্রেমিকের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও, প্রেমিকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাকে ‘ব্লক’ করে দেন প্রেমিক। ফোন করেও পাওয়া যায়নি। মঙ্গলবার হঠাৎ প্রেমিককে দেখতে পান কোন্নগরের রাস্তায়। তাই আর নিজের রাগ ধরে রাখতে পারেননি। সঙ্গীদের নিয়ে ‘শিক্ষা’ দিতে গিয়েছিলেন প্রেমিককে। যুবতী জানান, দু’দিন যমে-মানুষে টানাটানির পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছি, কিন্তু ওর দেখা পাইনি।প্রেমিক এই বিষয়ে কোনও কথা বলেননি। তিনি ভাবলেশহীন ছিলেন পুলিশের কাছেও।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যুবককে মারধর করার সময় নানান অভিযোগ করেছেন যুবতী। বিষয়টি যে প্রণয়ঘটিত, তা বুঝতে কারো অসুবিধা হয়নি।এমন নাটকীয় পরিস্থিতি দেখতে রাস্তায় ভিড় জমে যায়। শেষমেশ কোন্নগর ফাঁড়ির পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়।

–

–

–

–

–

–

–
