শহরে হেলে পড়ল বাম আমলে তৈরি ফ্ল্যাট বাড়ি ! প্রাক্তন বিধায়ককে ঘিরে বিক্ষোভ

৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার সেখানে হাজির হন।তাকে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা।  

শহরের বুকে ধসে গিয়ে হেলে পড়ল বাম আমলে তৈরি হওয়া আস্ত বিল্ডিং! নেতাজিনগর থানার ঢিল ছোড়া দূরত্বে  বাঘাযতীনে  পুরসভার ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্যাসাগর কলোনির এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বহুতল হেলে যাওয়ার ঘটনায় কলকাতা পুরসভা মামলা দায়ের করবে বলে জানা গিয়েছে। বেলা একটা নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। ৯৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার সেখানে হাজির হন।শুভ অ্যাপার্টমেন্টের সামনেই তাকে পেয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হাইড্রোলিক জ্যাক দিয়ে বাড়িটি উঁচু করা হচ্ছিল। স্থানীয় কাউন্সিলর মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তিনি এটি করতে বারণ করেছিলেন। যদিও তার আপত্তি আগ্রহ্য করেই এই কাজ হচ্ছিল। বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, গ্রাউন্ড ফ্লোরের চাঙড় উঠে গিয়েছে। স্থানীয়  বাসিন্দা রিতা অধিকারী বলেন, ২০১৩ সালে তারা এই ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন।ঝাঁ চকককে ফ্ল্যাটের যে এই দশা হবে, তা তারা কখনও ভাবেননি।তিনি বলেন, বহুতলে অনেক আগে থেকেই ফাটল লক্ষ্য করা গিয়েছিল।প্রোমোটারকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেইভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে যে প্রোমোটার বিল্ডিং তৈরির দায়িত্বে ছিলেন, ঘটনার পর তার দেখা মেলেনি।স্থানীয়দের অভিযোগ, কমদামি সামগ্রী দিয়ে এই বহুতল তৈরি করা হয়েছিল।পুরো আবাসনটি তৈরি করা হয়েছিল জলাজমির ওপর।পুরসভার নিয়ম মেনেও তা তৈরি করা হয়নি।সেখানে একটি খাল ছিল বলে জানিয়েছেন অশীতিপর বৃদ্ধা দেবী সরকার।  এই ঘটনা তারই পরিণতি। বাড়িটিতে দুর্ঘটনার সময়ে কেউ ছিল না বলে বড়সড় কোনও ঘটনা ঘটেনি। নাহলে অনেকের মৃত্যু হতে পারত চাপা পড়ে।

এখন বহুতল এইভাবে হেলে থাকার জন্যও আশেপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত। তাদের আশঙ্কা,  যে কোনও সময়ে বহুতলটি পুরো ভেঙে পড়তে পারে তাদের বাড়ির ওপর। যদিও আশেপাশের বাড়ি থেকে সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।  তবে আপাতত হতাহতের কোনও খবর নেই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন দমকল এবং পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের লোকজন। রয়েছেন কাউন্সিলর মিতালি বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করবে পুরসভা।

কলকাতা পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে তৈরি হয়েছিল বহুতলটি। কিছুদিন আগে সেখানে ফাটল দেখা দেয়। খবর দেওয়া হয় ফ্ল্যাটের প্রোমোটারকে। তিনি মেরামত করার আশ্বাস দেন। এদিকে ফাটল দেখা দেওয়ার পরই কিছু বাসিন্দাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে হাইড্রোলিক জ্যাক দিয়ে আবাসনটি উঁচু করার কাজ চলছিল। মেরামতির কাজে কাউন্সিলরের অনুমতি ছিল না । মিস্ত্রিদের কাজ বন্ধ রাখতেও বলেছিলেন তিনি। তারপরেও কাজ চলছিল বলে অভিযোগ।