বকেয়া দেয়নি। জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে মোদি সরকার। তার পরেও বাংলায় কর্ম সংস্থানের লক্ষ্যে বাজেট ঘোষণা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সরকারের। বুধবার, বিধানসভায় অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya) বাজেট (State Budget) পেশের পরে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ”আমরা কথা দিলে কথা রাখি”।
মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “কেন্দ্রীয় বাজেটে শুধু প্রতিশ্রুতি থাকে। আমরা নিজস্ব রাজস্ব থেকে বাজেটে বরাদ্দ করি। বাজেটে যা বলি, তাই করি।” আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। তাঁর কথায়, ”জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ৯৪টি স্কিম আছে আমাদের।” এবার বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর। মুখ্যমন্ত্রী আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বাজেটে সাধ্যমতো সরকারি কর্মীদের ডিএ-র কথা ভাবা হবে। সেই মতো এবারের বাজেটে আরও ৪ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হল।
লক্ষীর ভাণ্ডার নিয়ে মমতা জানান, এই প্রকল্পে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয় রাজ্যের। মমতার মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্প বাংলার থেকে নিয়ে অনেকই নকল করছে। মুখ্যমন্ত্রী কথায়, ”আমাদের থেকে টুকলি করে অনেক রাজ্য এটা চালু করেছে। আবার কেউ কেউ বন্ধও করে দিয়েছে। অনেকে অনেক শর্ত রাখে। আমাদের লক্ষীর ভাণ্ডার ইউনিভার্সাল। ১২ কোটি মহিলা পায়। দুয়ারে সরকারে আরও কয়েক লক্ষ মেয়ে যুক্ত হয়েছে।”
রাজ্যের আরেক জনকল্যাণমুখী প্রকল্প স্বাস্থ্যসাথী। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের প্রায় ৯ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা পান। পাশাপাশি, বিধবা ভাতা পেয়েছেন ২০ লক্ষের বেশি মহিলা। ৩০ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ পান বার্ধক্য ভাতা।
ছাত্র ও যুবদের উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৮০ হাজার পড়ুয়া স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে ঋণ পেয়েছে। তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে ৫২ লক্ষের বেশি স্মার্টফোন দেওয়া হবে। মমতার কথায়, ”এছাড়া আমরা বই, পোশাক দিই বিনামূল্যে। ১৮ কোটি পড়ুয়া এতে উপকৃত হয়।” রূপশ্রী প্রকল্পের বাইরে ১ লক্ষ ৪৩ হাজার শ্রমিকের পরিবার বিয়ের জন্য টাকা পেয়েছে। ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ চাকরি করছে এমএসএমই-তে। ৬৮,০০০ মানুষকে কৃষি পেনশন দেওয়া হচ্ছে।
আরও খবর: State Budget: গঙ্গাসাগর সেতু থেকে গ্রামীণ পথ: যোগাযোগে বরাদ্দ বাড়ল রাজ্য বাজেটে
সম্প্রতিই অনুষ্ঠিত হল অষ্টম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। এই প্রসঙ্গে এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবারের সম্মেলন বাদ দিয়ে আজ পর্যন্ত যতগুলো সম্মেলন হয়েছে, তাতে রাজ্য মোট ১৯ লক্ষ কোটি টাকা পেয়েছে। তার মধ্যে ১৩ লক্ষ টাকার প্রজেক্ট শেষ হয়ে গিয়েছে।
মমতা বলেন, ”অনুর্বর জমি আমরা উর্বর করেছি। রাজ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশ পেঁয়াজ উৎপন্ন হচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী জানান, আগে ইলিশ মাছের জন্য বাংলাদেশের উপর ভরসা করতে হত। তৃণমূল সংরকার ক্ষমতায় আসার পরে ইলিশ মাছের রিসার্চ সেন্টার তৈরি করেছে। তারপর থেকে আর ওপারের অপেক্ষায় বসে থাকতে হয় না।
বিজিবিএস-এই দেউচা পাঁচামির কাজ শুরুর দিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো নির্ধারিত দিনে কাজও শুরু হয়। সেই সঙ্গে এদিন মমতা বলেন, ১ লক্ষ ছেলেমেয়ে কাজ পাবে দেউচা পাঁচামিতে। ওখান থেকে কয়লা পেলে বিদ্যুতের দাম অনেক কমে যাবে।
একই সঙ্গে জানান, ৬টা ফ্রেট করিডর গোটা বাংলাকে কভার করবে। রাস্তার দুই পাশে শিল্প হবে। আমাদের লোকেরা অন্য জায়গায় কাজ করতে গেলে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। আমরা এখানে কারও স্কিলকে ছোট করি না।
–
–