নতুন মডিউলে ভুয়ো ভোটার EC-র! বাংলায় কারচুপি সফল হবে না, হুঁশিয়ারি তৃণমূলের

লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election) সময়ে সাড়ে ১৮ হাজারের মতো জনসংখ্য়া ছিল। নতুন তালিকায় (voter list) দেখা যায় জনসংখ্যা হয়েছে ২২,৪০০

মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, দিল্লি। একের পর এক বিরোধীদের রাজ্যগুলিতে বিজেপির অবিশ্বাস্য জয়ের পর কারণ খুঁজতে গিয়ে চোখ কপালে শিবসেনা (উদ্ধব শিবির), আপ বা কংগ্রেসের মতো দলের। ভোটের ফলাফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত যেখানে বিরোধীদের প্রতি মানুষের স্পষ্ট আস্থা দেখা গিয়েছে, সেখানে অল্পের জন্য লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। সেখানেই দেখা গিয়েছে ভোটার তালিকায় (voter list) ব্যাপক গরমিল। নির্বাচন কমিশনকে (Election Commission of India) সেই অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি, কারণ এই তালিকা তৈরির কাণ্ডারিই তো তারা। ২০২৬ বাংলার নির্বাচনের আগে সতর্ক বাংলার শাসকদলও। সেখানে একইভাবে ভোটার তালিকায় ধরা পড়ল ব্যাপক গরমিল। কোথাকার ভোটার কোথায় গিয়ে তালিকায় সংযোজিত হয়েছেন, দেখে স্পষ্ট নির্বাচন কমিশনের কারচুপির নতুন মডিউল (module)। তবে বাংলার প্রশাসন নির্বাচনের আগে যেভাবে সচেতন, তাতে কোনওভাবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি (central agency) দিয়ে বিজেপির বাংলা দখলের পরিকল্পনা যে সফল হবে না, তা স্পষ্ট করে দিল তৃণমূল।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে চম্পাহাটি (Champahati) পঞ্চায়েতের ভোটার তালিকা যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেল লোকসভা নির্বাচনের পরে মাত্র সাতমাসে ভোটার বেড়েছে চার হাজার। লোকসভা নির্বাচনের (Loksabha Election) সময়ে সাড়ে ১৮ হাজারের মতো জনসংখ্য়া ছিল। নতুন তালিকায় (voter list) দেখা যায় জনসংখ্যা হয়েছে ২২,৪০০। ২২টি গ্রাম সংসদের মধ্যে কোনও বুথে ২০০, আবার কোনও বুথে ৩০০ ভোটার বেড়েছে। এমনকি কোথাও ৬০০ ভোটার বাড়ার নজিরও পেয়েছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

কার্যত স্থানীয় প্রশাসনের চক্ষু চড়কগাছ এই ব্যাপক ভোটার বাড়ায়। তখনই আরও যাচাই করতে গিয়ে দেখা যায়, মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং শিলিগুড়ির জেলার বাসিন্দাদের নামও রয়েছে চম্পাহাটির (Champahati) ওই ভোটার তালিকায়। আবার কোথাও একই ফোন নম্বর দিয়ে নাম উঠেছে একাধিক ভোটারের (voter)। ঠিক এভাবেই ভোটার তালিকায় কারচুপি করে নির্বাচনে জেতার কৌশল তৈরি করতে চেয়েছিল বিজেপি। আর সেখানেই মহারাষ্ট্র (Maharashtra), দিল্লির (Delhi) মতো ফর্মুলা কাজে লাগাতে চেয়েছিল তারা। এই কারচুপি ঢাকতে তৃণমূলের উপর দায় চাপানোরও চেষ্টা হয়েছিল।

তবে গোড়ার গলদ ধরে তৃণমূলনের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, বাংলায় এই কারচুপি চলবে না। রাজ্যে অনুপ্রবেশের অজুহাত দিয়ে ভোটার তালিকা কারচুপির দায় চাপানো বিজেপিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ রাজ্যের শাসকদলের। তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, বাস্তব হচ্ছে অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়টা রাজ্যের আওতায় পড়ে না। সীমান্ত পাহারা দেয় বিএসএফ (BSF)। সেখানে গাফিলতি আছে বলে অনুপ্রবেশ হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসন সতর্ক বলেই এগুলো ধরা পড়ছে।

কীভাবে তালিকায় এই কারচুপি, স্পষ্ট করে দেন কুণাল। তিনি ব্যাখ্যা করে দেন, শারীরিকভাবে যাচাই না করেই নির্বাচন কমিশনের (ECI) সঙ্গে সেটিং করে, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে, নতুন মডিউলে (module) বহিরাগতদের নাম তুলছে। মহারাষ্ট্র বা অন্য রাজ্যগুলির পরে এবার বাংলাকে টার্গেট করছে। ভোটার তালিকায় কারচুপি করছে। শারীরিক যাচাই নেই। তৃণমূল বিজেপির এই চক্রান্ত, ইসি-র একাংশকে সেটিং করে শারীরিক যাচাই ছাড়া ভোটার তালিকায় অনলাইন সিস্টেমে ভুতূড়ে ভোটার ঢোকাচ্ছে। এটা গভীর চক্রান্ত।

বাংলায় যে এই চক্রান্ত বিজেপি চালাবে এমনটা আগেই আন্দাজ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। প্রতিটি জেলার প্রশাসনকে বারবার তিনি ভোটার তালিকা যাচাই করার স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন। ফলে সেই যাচাই পর্বেই বিজেপির যাবতীয় চক্রান্তের পর্দাফাঁস। রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের চ্যালেঞ্জ, প্রশাসন পুরো সতর্ক। যেখানে যা স্ক্রুটিনি বা যা নজর রাখার দরকার তা করছে। আমরা পুরোদস্তুর সতর্ক আছি।