Thursday, May 22, 2025

ইভটিজিংয়ের প্রমাণ নেই! দুর্ঘটনায় মৃত্যু সুতন্দ্রার: জানালেন CP, বাকরুদ্ধ সন্তানহারা মা

Date:

Share post:

শ্লীলতাহানির অভিযোগ বদলে গেল সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পরে। দুর্গাপুর-আসানলোলের পুলিশ কমিশনার সুশীল চৌধুরী তথ্য প্রমাণ দেখে জানালেন, দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে সুতন্দ্রার। এদিকে চন্দননগরের বাড়িতে মেয়েকে হারিয়ে বাক্যহারা সুতন্দ্রার মা। কারণ, মাত্র ৯ মাস আগে তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত স্বামীকে হারিয়েছেন।

আসলে ছোট থেকেই বড় নৃত্যশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ক্যান্সারে বাবার মৃত্যুর পর হাল ধরেন সংসারের। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কাজের পাশাপাশি নাচের অনুষ্ঠানও করছিলেন পুরোদমে।রবিবার নাচের অনুষ্ঠানের জন্যই চন্দননগর থেকে ডান্স ট্রুপের সঙ্গীদের সঙ্গে বিহারের গয়ায় যাচ্ছিলেন সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেখানে আর পৌঁছনোই হল না।প্রথমে অভিযোগ ওঠে যে রাস্তায় ইভটিজারদের খপ্পরে পড়ে সম্মান বাঁচাতে গাড়ি নিয়ে দৌড়াতে থাকেন। মদ্যপ যুবকদের তাড়া খেয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা। ঘটনাস্থলেই মর্মান্তিক মৃত্যু।

কিন্তু পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখতে পায় যে গাড়ি ওভারটেক করা থেকে ঘটনার সূত্রপাত। ইভটিজিংয়ের কোনও ঘটনা ঘটেনি।তরুণীর গাড়ি প্রথমে অভিযুক্তদের গাড়িকে চেজ করেছিল। ওভারটেক করতে রাস্তার সরু বাঁকে গাড়ি উল্টে যায়। এটি নিছকই দুর্ঘটনা। এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, পানাগড়ের ঘটনায় তরুণীকে কটূক্তি, ইভটিজিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল কয়েকজন যুবকের বিরুদ্ধে। তাদের জন্যই এই মর্মান্তিক মৃত্যু বলে অভিযোগ উঠেছিল। অত্যন্ত খারাপ অভিযোগ। কিন্তু পুলিশ পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দেখেছে, গাড়ি ওভারটেকিংয়ের কেস।দুটি গাড়ির রেষারেষিতে এই দুর্ঘটনা।এর সঙ্গে মহিলাকে কটূক্তি,অশ্লীল মন্তব্য, গাড়ি চেজ করা কোনও কিছুরই যোগ নেই।ঘটনার পর কেউ বা কারা এগুলো রটিয়ে দেয়।

সুতন্দ্রার বাবা সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় ছিলেন রেলের ঠিকাদার।নয় মাস আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার।নাড়ুয়ার বাড়িতে আছেন সুতন্দ্রার বৃদ্ধা দিদিমা, ঠাকুমা আর মা। তার এমন পরিণতির খবর বাড়িতে পৌঁছতেই শোকে পাথর অথর্ব দুই বৃদ্ধা ও প্রৌঢ়া মা। তারা শুধু বলে চলেছেন, বিশ্বাস করুন  চোখে ভাসছে মেয়েটার মুখটা। এই ক’মাস আগে বাবা মারা গেল। মায়ের গলব্লাডার অপারেশন হল কয়েকদিন আগে। একাই সব সামলাতো মেয়েটা। নাচের প্রোগ্রাম করতে বন্ধুদের সঙ্গে বাইরেও যেত। বাবা মারা যাওয়ার পর তো যাওয়া অনেক কমিয়ে দিয়েছিল। কী যে হয়ে গেল। পরিবারের হাল ধরার কেউ রইল না। শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন মা। তার পরিবারে এমন পরিণতি হবে তা স্বপ্নেও ভাবেন নি।এক বছরের মধ্যে স্বামী আর মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তিনি।

নাড়ুয়া এলাকায় এই খবর ছড়াতেই লোকজন ভিড় করতে থাকে সুতন্দ্রাদের বাড়ির সামনে।প্রতিবেশীরা বলেন, আমরা ওকে আমরা মাম বলে ডাকতাম।রাস্তার কুকুরদের ডেকে ডেকে খাওয়াতো।খুব ভালো ব্যবহার করতে আমাদের সঙ্গেও।খুব ছোটবেলা থেকেই নাচ শিখত।নাড়ুয়া মেন রোডে ওদের বাড়ি ছিল আগে।অনেক দিন আগে রায় পাড়ায় চলে আসে।খুব ভালো নাচত।বন্ধুদের নিয়ে একটা নাচের গ্রুপ তৈরি করেছিল।সেই গ্রুপ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় অনুষ্ঠানে যেত।

 

 

 

 

 

 

spot_img

Related articles

কাশ্মীরের পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল উপত্যকায়, বৈঠক ওমর আবদুল্লার সঙ্গে 

পহেলগাম সন্ত্রাস হামলার পরবর্তী সময়ে কাশ্মীরের পরিস্থিতি পর্যালোচনায় তৃণমূল কংগ্রেসের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল পৌঁছাল উপত্যকায়। সীমান্তবর্তী...

পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি বিশেষ নজর মুখ্যমন্ত্রীর

বাংলার বিভিন্ন শ্রমিকদের ভিন রাজ্যে কাজ করতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। বাংলায় ফিরে এলে তাদের যাতে কোনওরকম...

শিক্ষকদের মতো আচরণ করুন! আন্দোলনকারী শিক্ষকদের বললেন বিচারপতি

বিকাশ ভবনে অবস্থানকারী শিক্ষকদের মুখ পুড়ল হাইকোর্টে। বুধবার একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেন,...

শুরু হচ্ছে ডিজিটাল ব্যবস্থা! রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন-পেনশন বিল এবার অনলাইনেই

রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন, বকেয়া ও মাসিক পেনশন বিল জমার প্রক্রিয়ায় আসছে বড়সড় পরিবর্তন। এবার থেকে এইসব বিল...