প্রাকৃতিক কারণেই কমেছে পদ্মার জলস্তর, মান্যতা বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে পাবনায় পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ জল প্রবাহ পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে। গঙ্গা-পদ্মা ঐতিহাসিক জল  চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে দুই দেশের জল বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত টিম ভারতের ফারাক্কা পয়েন্টে এবং বাংলাদেশের(BANGLADESH) পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে যৌথভাবে জল প্রবাহ পরিমাপ করে থাকেন। আর সেই অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে জল বন্টন হয়ে থাকে। ইতিমধ্যে ভারতের একটি দল বাংলাদেশের হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ও বাংলাদেশের একটি দল ফারাক্কা পয়েন্টে পৌঁছেছে।প্রাকৃতিক কারণেই জল কমছে পদ্মায়। মঙ্গলবার ফরাক্কা(FARAKKA) বাঁধ পরিদর্শন করে বিষয়টি মেনে নিল বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।

ভারতের তরফে বার বার দাবি করা হয়েছে যে, জলপ্রবাহের স্বাভাবিক ওঠানামার কারণেই জলের পরিমাণ কমবেশি হয়ে থাকে। মঙ্গলবার ভারতের সেই দাবিকেই বকলমে মেনে নিলেন ইন্দো-বাংলাদেশ জয়েন্ট রিভার কমিশনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান মহম্মদ আবুল হোসেন।মঙ্গলবার সকালে ব্যারাজ পরিদর্শন করেন বাংলাদেশের নদী বিশেষজ্ঞরা। গঙ্গা থেকে পদ্মায় প্রবাহিত জলের পরিমাণ এবং অবস্থা খতিয়ে দেখেন তারা। গঙ্গা থেকে জল কী প্রক্রিয়ায় পদ্মায়(PADMA RIVER) প্রবাহিত হচ্ছে, তা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করে দলটি।বাঁধ পরিদর্শনের পর ইন্দো-বাংলাদেশ জয়েন্ট রিভার কমিশনের প্রধান বলেন, জানুয়ারি মাসে আমাদের জলপ্রবাহ ভাল ছিল। ফেব্রুয়ারিতে কমেছে। জল কমা একটি প্রাকৃতিক বিষয়। তিনি আরও বলেন, যাবতীয় কাজ জলবণ্টন চুক্তি অনুযায়ী বাস্তবায়িত হচ্ছে। চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়টি বিবেচনা করবে বিশেষ কমিটি। কলকাতায় রুটিন বৈঠক হবে।

পদ্মা নদীর বর্তমান অবস্থা খুবই করুণ। নদীতে ন্যূনতম জলের প্রবাহও নেই বললেই চলে।জল না থাকায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজের ১৫টি পিলারের মধ্যে ৫টি পিলারে নিচেই শুকনো চর জেগে উঠেছে। যে ১০টি পিলার জলে আছে তার আশপাশেও মানুষ চাষাবাদ করছে। নদীতে মাছ নেই, জেলেরা নৌকা দিয়ে জাল টেনে নিজেদের খাবারের মাছও জোগাড় করতে পারছেন না। ফারাক্কার কারণে উত্তরাঞ্চলের ৫৪  নদী শুকিয়ে গিয়েছে। সেগুলো এখন জল শূন্য হয়ে পড়ছে।

আগামী ৬ মার্চ ইন্দো-বাংলাদেশ জয়েন্ট রিভার কমিশনের ৮৬ তম বৈঠক হবে। সেখানে দুই দেশের প্রতিনিধিরা গঙ্গা-পদ্মার জলবণ্টন ছাড়াও তিস্তা-সহ ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদীর বিষয়ে আলোচনা করবেন। ৭ মার্চ কলকাতায় একটি কারিগরি পর্যায়ের বৈঠক হবে বলেও জানা গিয়েছে।