পাখির চোখ বিধানসভা নির্বাচন। রাজ্যজুড়ে ভূতুড়ে ভোটার ধরতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার দেখতে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay)। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সন্দেহ হলেই ভুয়ো ভোটার বাতিল করতে হবে। তৃণমূলে নতুন দুটি পদের কথা ঘোষণা করলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। শনিবার বিকেল চারটা থেকে সব সংগঠনিক স্তরের শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেন তিনি। সেখানেই BERO, PERO এই দুটি পদের ঘোষণা করেন অভিষেক। আগামী ৫ দিনের মধ্যে ভোটার তালিকা স্ক্রুটিনি নিয়ে জেলা স্তরের কমিটি এবং ২১ মার্চ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে রাজ্য স্তরের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে। ‘ভুয়ো ভোটার’ ধরতে তৃণমূলের নীচু তলার নেতাদের ট্রেনিং দেওয়া হবে।

২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের মেগা সভা থেকে ভূতুড়ে ভোটার নিয়ে সতর্ক করেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর অভিযোগ ‘ভূতুড়ে’ ভোটার দিয়ে বাংলা দখলের খেলায় নেমেছে বিজেপি। ভোটার লিস্ট পরিষ্কার করতে কমিটি গড়ে দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সুব্রত বক্সির নেতৃত্বে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ ৩৬ নেতা-নেত্রীকে নিয়ে তৈরি হয় নয়া কোর কমিটি। কয়েকদিন আগেই বৈঠকে বসেন সেই কমিটি। কিন্তু জরুরি কাজ থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি অভিষে এদিন ভার্চুয়াল বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ২০২৬ -এর নির্বাচনকে পাখির চোখ করে একগুচ্ছ নির্দেশ দেন তিনি। ভূতুড়ে ভোটার খুঁজতে জেলাভিত্তিক কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। কমিটি গঠনের জন্য সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন তিনি। জেলাভিত্তিক কমিটি গড়তে হবে পাঁচদিনের মধ্যে। আর ২১ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে গড়তে হবে ব্লক কমিটি।

প্রায় ৪ হাজার তৃণমূল (TMC) নেতা এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিয়েছেন বলে জানান অভিষেক। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের ভোটার লিস্ট মিলিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সন্দেহ হলেই ভুয়ো ভোটার বাতিল করতে হবে বলে জানান দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ভূতুড়ে ভোটার খুঁজতে দুটি পদের কথা ঘোষণা করেছেন অভিষেক।
•BERO
•PERO

ব্লক ইলেকটোরাল রোল সুপারভাইজার নিয়োগ করবে তৃণমূল। যারা সারাবছর ইলেকটোরালের কাজ করবে। ব্লক, অঞ্চল, ওয়ার্ডেও এই কাজ করা হবে। ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে আগামী ৫ দিনের মধ্যে জেলাভিত্তিক কোর কমিটি গঠন করা হবে। একইভাবে ২১ থেকে ২৭ মার্চের মধ্যে ব্লকে ব্লকে কোর কমিটি গঠন করা হবে। ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিলের মধ্যে অঞ্চল ও ওয়ার্ডে কোর কমিটি তৈরি করে দেওয়া হবে। ১৬ এপ্রিল থেকে ফিজিক্যাল ভেরিফিকেশন শুরু হবে। এই কাজ ২০২৬ সালের ভোট অবধি চলবে। বলেন, “এটা প্রশাসনিক পদ নয়, এটা হবে দলের পদ। একই ভাবে টাউন ইলেকটোরাল রোল সুপারভাইজার ও পঞ্চায়েত ইলেকটোরাল রোল সুপারভাইজার গঠন করা হবে। তাঁদের কাজ হবে ভোটার তালিকা ভালভাবে খতিয়ে দেখা। তিন মাস ভোটার তালিকার কাজ করে তারপর ছেড়ে দিলাম সেটা হবে না। বছরে চার বার ভোটার লিস্টের কাজ হয়। তাই নিয়মিত ভোটার লিস্ট নিয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। মানুষকে সচেতন করার দায়িত্ব আমাদের। নির্বাচন এখন ১ মাসের কাজ নয়, সারা বছর মানুষের পাশে থাকতে হয়।”
তৃণমূলের ব্লক স্তরে ১৫ এপ্রিলের আগে প্রতি বিধানসভায় প্রশিক্ষণ শিবির হবে। না হলে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে করিয়ে দেওয়া হবে। “প্রতি বিধানসভায় আমাদের প্রতিনিধি দল যাবে”- বলে জানান অভিষেক।

বৈঠকে অভিষেক বলেন, “আমাদের অবস্থান কমিশনে জানানো হয়েছে। আমরা ভূতুড়ে ভোটারের বিষয় ধরে ফেলেছি বলে গায়ে খুব জ্বালা।” মোদি সরকারের আমলে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন অভিষেক। তাঁর অভিযোগ, দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে কারচুপি করে বিজেপি জিতেছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের ভোট দিতে না দেওয়ার চক্রান্ত বিজেপি করছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

ভূতুড়ে ভোটার ধরতে জেলাভিত্তিক কমিটি গঠনে গড়িমসি করা যাবে না। দ্রুত কমিটি গড়তে হবে- বার্তা অভিষেকের।

–

–

–

–
