চিকিৎসা করাতে গিয়ে যেন সর্বহারা না হতে হয়: হাসপাতালের উদ্বোধনে বার্তা অভিষেকের 

দ্রব্যমূল্য ও পেট্রোপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে এমনিতেই চরম যন্ত্রণায় সাধারণ মধ্যবিত্ত থেকে নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ। এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসা করাতে গিয়ে যেন তাঁদের ঘটি বাটি বিক্রি করতে না হয়, জগন্নাথ গুপ্ত ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্স-এর নতুন হাসপাতালের উদ্বোধনে গিয়ে অনুরোধ সংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই সঙ্গে তাঁদের পরবর্তী মেডিকেল কলেজ থেকে উত্তীর্ণ চিকিৎসকরা যাতে দায়িত্বশীল চিকিৎসক হন সেই আবেদনও জানান অভিষেক।

কতখানি দায়বদ্ধতা থেকে বিশেষত এই বেসরকারি হাসপাতালের উদ্বোধনে যোগ দেন সংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমি যখন ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে ২ জানুয়ারি থেকে সেবাশ্রয় স্বাস্থ্য শিবিরের ঘোষণা করে শুভ সূচনা করেছিলাম। এবং প্রায় ৭৫ দিন বিভিন্ন বিধানসভায় প্রায় ৩০০ টি ক্যাম্প হয়েছিল। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে মানুষকে পরিষেবা দিতে সক্ষম, সফল, সার্থক হয়েছিলাম। সেই উদ্যোগে যেভাবে জগন্নাথ গুপ্ত ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স ও তাদের পুরো টিম আমাদের সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

সেই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা উল্লেখ করেন অভিষেক। তিনি বলেন ৯ বছরের আলতাফ হোসেন ঘোরামির কথা। মাত্র দুদিনের মধ্যে আলতাফের জীবন বাঁচিয়েছিল এই সংস্থার হাসপাতাল। শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে মন্দিরবাজারের আলতাফ সেবাশ্রয় ক্যাম্পে এসেছিল। তাকে এই হাসপাতালে পাঠানোর পর প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে চিকিৎসকরা সুস্থ করে তোলে। সেবাশ্রয় ক্যাম্পগুলির জন্য ১৫ থেকে ১৬ জন চিকিৎসক, ১০০ জনের বেশি নার্স ও ল্যাব টেকনিশিয়ান, হাজার হাজার ডায়াগনস্টিক টেস্ট করে সাহায্য করে এই সংগঠন। এছাড়াও পোর্টেবল ভেন্টিলেটর, পোর্টেবল এক্স রে মেশিন, পোর্টেবল ইসিজি মেশিন, টলার, স্ট্রেচার, বেড দিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছিল এই সংগঠন। সাধারণ মানুষের পরিষেবায় আলতাফের চিকিৎসা সফল হওয়ার পরই সোদপুরের নতুন হাসপাতালে উদ্বোধনের আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাঁরা ডায়মন্ড হারবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। প্রকৃত অর্থে সহযোগী জগন্নাথ গুপ্ত ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সকে ফিরিয়ে দিতে পারেননি অভিষেক।

সেই হাসপাতালের উদ্বোধনে এসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অনুরোধ করব, মানুষকে চিকিৎসা করাতে গিয়ে যাতে সর্বহারা না হতে হয়। যেন ঘটি-বাটি বিক্রি করতে না হয়। নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত – তাঁদের নাগালে যাতে চিকিৎসাটা থাকে, চিকিৎসা পরিষেবা পায়, এটা আপনারা সুনিশ্চিত করবেন। মানুষের জীবনের যেটুকু সঞ্চয় পরিবারের কেউ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে পাঁচ লাখ, দশ লাখ বিল হয়। যত বড় হাসপাতাল তত বড় বিল হয়। ১২০০ বেডের এই হাসপাতাল শনিবার থেকে শুরু হল। কয়েকদিন পরেই ২০০ সিটের মেডিক্যাল কলেজ একইসঙ্গে শুরু হবে। বজবজে ১৫০ বেডের হাসপাতাল, ২০০ সিটের মেডিক্যাল কলেজও একইসঙ্গে রয়েছে। ২৪ একর জমির উপর তৈরি সোদপুরের এই হাসপাতালটি।

সেই সঙ্গে আগামী পরিকল্পনা মেডিকেল কলেজের উদ্দেশ্যেও অভিষেক বার্তা দেন, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আশা করি মেডিক্যাল কলেজটাও হবে যেখান থেকে শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দিয়ে আগামী দিনের ডাক্তার নয়, দায়িত্বশীল ডাক্তার তৈরি হবে। যারা আগামী দিন মানুষকে পরিষেবা দেবে, পাশে দাঁড়াবে এবং মৃত্যুর মুখ থেকে মানুষের জীবন ফিরিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে, চিকিৎসার সুব্যবস্থা করে দেওয়া, তাঁদের জীবন দান করবেন।

আরও পড়ুন – ওয়াকফ আইন নিয়ে অশান্তি! কবিতা লিখে সম্প্রীতির বার্তা দেবাংশুরÂ