সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারানো রাজ্যের শিক্ষক সমাজের চাকরি ফিরিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। আইনি পথে কীভাবে সেই চাকরি ফেরানো যায়, তার জন্য আইনি পরামর্শ নেওয়ার পথে রাজ্যের শিক্ষা দফতর গেলেও প্ররোচনায় বারবার ভুল পথে শিক্ষক সমাজ। সেখানেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) মনে করিয়ে দিলেন এমন কোনও কাজ করা উচিত হবে না যাবে রাজ্যের তরফ থেকে যে রিভিউ পিটিশন (review petition) করা হবে তা দুর্বল হয়ে যায়। সেই সঙ্গে শিক্ষক সমাজকেও আদালত অবমাননা হয়, এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিলেন তিনি। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে এসএসসি (SSC) মামলার শুনানি। তার আগে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নির্দেশের অবমাননা হয় এমন কোনও কাজ না করে, কীভাবে রিভিউ পিটিশনকে শক্তিশালী করা সম্ভব হয়, তারই পথে শিক্ষা দফতর, জানালেন ব্রাত্য বসু।

সোমবার দুপুর থেকে আচার্য সদন ঘেরাও করে বিক্ষোভে চাকরিহারা শিক্ষক সমাজ। তাঁরা একটিই দাবিতে অনড় – যোগ্য-অযোগ্য (tainted-untainted) তালিকা প্রকাশ করতে হবে এসএসসি-কে। ইতিমধ্যেই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ হলফনামা দিয়ে যাদের চাকরি থাকছে সেই তালিকা তৈরি করেছে। ১৭ হাজার ২০৬ জনের সেই তালিকা প্রকাশ্যে না এলেও তা ধরেই এগোচ্ছে শিক্ষা দফতর। সেখানেই মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) স্পষ্ট করে দেন, সুপ্রিম কোর্টের কোনও নির্দেশিকায় নেই তালিকা প্রকাশ করতে হবে। আমরা জানিয়েছিলাম আইনি পরামর্শ পেলে তবে প্রকাশ করব। কিন্তু আইনি পরামর্শ আমরা পাইনি তালিকা প্রকাশ করার জন্য।

দ্রুত রাজ্য রিভিউ পিটিশন দাখিল করবে জানান শিক্ষামন্ত্রী। সেই সঙ্গে বুধবার ডিভিশন বেঞ্চে মামলার কথাও উল্লেখ করে আবেদন করেন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী সর্বোতভাবে সহযোগিতার নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে অসহযোগিতা করে বিপদ ডেকে আনছেন। মাথায় রাখতে হবে, সুপ্রিমকোর্টে বিচারাধীন মামলা। দ্রুত রিভিউ পিটিশনে যাচ্ছি আমরা। অর্থাৎ আইনি প্রক্রিয়া লাগু রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মানতে দায়বদ্ধ আমরা। এই সময়ে এমন কোনও কিছু করা উটিত নয় যা রিভিউ পিটিশনকে দুর্বল করে। আমরা প্রত্যেকটা ধাপ আইনি পরামর্শ অনুযায়ী করছি। আপনারাও গিয়ে আপনাদের কাজ করুন।

মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কোনও যোগ্য শিক্ষকের বেতন নিয়ে কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি এখনও পর্যন্ত। শুধুমাত্র যোগ্য-অযোগ্য তালিকায় আটকে থেকে শিক্ষকরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আর তাতে আটকে পড়েছে এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার। তাঁর খাবার ও ওষুধ সোমবার আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। সেখানেই শিক্ষামন্ত্রীর বার্তা, পর্ষদে মহিলা কর্মী আটকে রয়েছেন। পুলিশদের খাবার আটকে দেওয়া হচ্ছে। তা সত্ত্বেও কোনও কড়া মনোভাব নেওয়া হয়নি এখনও পর্যন্ত, হবেও না। এসএসসি চেয়ারম্যানকে খাবার খেতে দেবেননা। আবার কন্টেম্পটও করবেন। এই দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না।


চলতি সময়ে এই আন্দোলনের জেরে ঝুঁকির মুখে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা, এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি সতর্ক করেন, মাধ্যমিকের ফল বেরোবে। গুরুত্বপূর্ণ নথি রয়েছে এসএসসি দফতরে। লক্ষ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যৎ রয়েছে। সেখানে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাছাড়া কোনও মানুষ বা আধিকারিকের যদি জীবন বিপন্ন হয়ে যায় সেটা করা উচিত হবে না।


–

–

–

–

–

–
