শনিবার বিকালে আচমকাই সংঘর্ষ বিরতি। তাও সেটা ঘোষণা করলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনঘণ্টার মধ্যে সেই চুক্তি ভেঙেও ফেলল পাকিস্তান। তারপরই পাকিস্তানের তরফে জানানো হল পাক সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবরকম সহযোগিতা করবে চিন। যদিও চিনা বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, দুই দেশের রাজনৈতিক স্থিরতার অনুরোধ জানানো হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে। তবে শনিবার ঘটা করে ট্রাম্পের সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণার পরেও ভারতে পাকিস্তানের গোলাগুলিতে চরম অপ্রস্তুত আমেরিকা। ফের একবার দুই দেশের মধ্যস্থতায় রাজি, জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি ট্রাম্পের। যদি বিশ্বের দুই শক্তিধর দেশের কেউই পাকিস্তানকে চুক্তি লঙ্ঘন (ceasefire violation) করে ভারতের উপর হামলা চালানোর নিন্দা করেনি।

এর আগে যতবার যে সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে আগ বাড়িয়ে আমেরিকা সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা করেছে, সেখানেই দেখা গিয়েছে তা কার্যকর হয়নি। কার্যত আমেরিকার দাদাগিরি মেনে নেয়নি রাশিয়া, ইউক্রেন থেকে ইজরায়েল। পাকিস্তানের ক্ষেত্রের সেই ধৃষ্টতার আশা হয়তো ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) কল্পনাও করেননি। তবে শনিবারই তিনঘণ্টার মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির আলোচনার ফলাফল লঙ্ঘন করায় কার্যত নিজেদের মুখ রক্ষায় ব্যস্ত ট্রাম্প। ফের একবার তিনি দাবি করেন, ভারত ও পাকিস্তানের শক্তিশালী নেতৃত্বের জন্য আমি অত্যন্ত গর্বিত, কারণ তাদের শক্তি, জ্ঞান এবং দৃঢ়তা রয়েছে, যারা সম্পূর্ণরূপে জানতে এবং বুঝতে সক্ষম যে বর্তমান আগ্রাসন বন্ধ করার সময় এসেছে, যা একটা বিরাট পরিমাণ মানুষের মৃত্যু এবং ধ্বংসের দিকে পরিচালিত করতে পারে।

তবে এখানেও একবারও পাকিস্তান যে সংঘর্ষ বিরতির চুক্তি লঙ্ঘন (ceasefire violation) করেছে, তা নিয়ে তাদের দোষারোপ বা নিন্দা করা পথে যাননি ট্রাম্প। বরঞ্চ এই পরিস্থিতিতে নিজেদের আরও বড় জাহির করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। তাঁর কথায় সংঘর্ষে পরমাণু শক্তির ব্যবহারেরও ইঙ্গিত রয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন, লক্ষ লক্ষ ভালো ও নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, তোমাদের উত্তরাধিকার থেকেই সাহসী পদক্ষেপের ক্ষমতা রাখো। আমি গর্বিত যে আমেরিকা তোমাদের এই ঐতিহাসিক ও বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পেরেছে। যদিও অপ্রকাশিত, তবুও আমি এই দুই মহান জাতির সাথেই বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে যাচ্ছি। উপরন্তু, আমি তোমাদের দুজনের সাথেই কাজ করব, যাতে হয়তো হাজার বছর পরে কাশ্মীরের বিষয়ে কোন সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে। ঈশ্বর ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃত্বকে ভালো কাজের জন্য আশীর্বাদ করুন।
ট্রাম্পের বক্তব্যে যেখানে স্পষ্ট ভারত-পাকিস্তানকে বাণিজ্যের টোপ দিয়ে দাদাগিরি জারি রাখতে তৎপর তাঁরা, সেখানে চিন তাদের চিরাচরিত ধীরে চলো নীতিতে এগিয়েছে শনিবার থেকে। পাক বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় চিন সব রকম সাহায্য করবে। যদিও চিনের তরফে সেরকম কোনও বিবৃতি প্রকাশ্যে দাবি করা হয়নি। সেখানেই কূটনীতিকদের প্রশ্ন অর্থনৈতিক শক্তিধর আমেরিকা সংঘর্ষ বিরতির আবেদন করার পরেও কার মদতে পাকিস্তান সেই চুক্তি ভঙ্গ করতে পারে, যদি না অন্য কোনও বড় শক্তি পাকিস্তানকে মদত দেয়।

সেই সঙ্গে পাকিস্তানের উপর ভারতের প্রমাণসহ দোষারোপের পরেও কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থা ভারতের পক্ষ নিয়ে পাকিস্তানকে ভর্ৎসনা করার পথে হাঁটেনি। এমনকি ইন্টারন্যাশানাল মনিটরি ফান্ড (IMF) দাবির থেকে বেশি অর্থ সাহায্যের ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের পক্ষে। সম্প্রতি রাষ্ট্রসঙ্ঘকে বিভিন্ন খাতে অর্থ খয়রাতি বন্ধ করে দিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের হঠকারি সিদ্ধান্তের পরে অর্থ সাহায্য নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের পাশে দাঁড়িয়েছে চিন। ফলে আইএমএফ (IMF) যদি সন্ত্রাসবাদে মদতের প্রমাণের পরেও পাকিস্তানকে অর্থ সাহায্য করে, সেখানে কোন দেশের কলকাঠি নাড়ার প্রমাণ মিলছে তাও স্পষ্ট হয়, দাবি বিশ্বের কূটনীতিকদের।
–

–

–

–

–


–

–

–

–
