রেসের মাঠে সব টাকা শেষ, তাই জীবনের ময়দানে লড়াই করার মতো সামর্থ্য নেই। কসবায় একই পরিবারের মৃত্যুর রহস্যে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্ত যত এগোচ্ছে ততই পুলিশের প্রাথমিক অনুমানই মান্যতা পাচ্ছে। অর্থাৎ খুন নয় বরং তিনজনে পরিকল্পিতভাবেই আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অন্তত সেই কথাই বলছে। সোমবার বিকেল সাড়ে চারটে থেকে মঙ্গলবার ভোর সাড়ে চারটের মধ্যে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলেই আত্মঘাতী হন কসবার গোল্ড পার্কের (Gold Park, Kasba) বাসিন্দা সরজিৎ, তাঁর স্ত্রী গার্গী ও ছেলে আয়ুষ্মান। ঘর থেকে উদ্ধার সুইসাইড নোটে নিজেদের পারলৌকিক ক্রিয়ার প্রসঙ্গে বিশেষ অনুরোধ করে গেছে সংশ্লিষ্ট পরিবার, খবর পুলিশ সূত্রে।
কসবা রাজডাঙার তিনতলার ফ্ল্যাটে একই পরিবারের তিনজন আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনায় যে সুইসাইড নোট মিলেছে তাতে মৃতদের নাম থাকলেও, হাতের লেখা কার তা এখনও স্পষ্ট নয়। তল্লাশি চালিয়ে হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ করছে পুলিশ (Kasba Police)।তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ছোটখাটো একটা কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি বিমার এজেন্সি ও দালালি করতেন সরজিৎবাবু। কিন্তু তার সঙ্গে রেসের মাঠে গিয়েও দেদার খরচ করতেন। এই নেশার কারণেই বাজার থেকে দেনা করতেন তিনি। বছর কুড়ি আগে বসতবাড়িও বিক্রি করে দেন। তার উপর ছিল আবার অসুস্থ ছেলের চিকিৎসার খরচ। সম্প্রতি নাকি পাঁচশো, হাজার টাকা ধার করেও সংসার চালানোর চেষ্টা করতেন বাড়ির কর্তা। আর টানতে না পেরে পরিকল্পিতভাবে আত্মহননের পথ বেছে নেন তাঁরা। সেই মতো আগাম কিনে নিয়ে আসা হয়েছিল শক্তপোক্ত দড়ি। সুইসাইড নোটের লেখা দেখে অবাক তদন্তকারীরা। পরিবারের তিন সদস্যের নাম দিয়ে ওই চিঠিতে লেখা রয়েছে, ‘‘যদি কোনও সহৃদয় ব্যক্তি একই সঙ্গে একই জায়গায় আমাদের তিনজনের দেহ সৎকার করে এবং আমাদের তিনজনের পারলৌকিক ক্রিয়া করেন, তবে আমাদের আত্মা শান্তি লাভ করবে। এটাই আমাদের শেষ অনুরোধ।’’ মৃত গার্গী ভট্টাচার্যর পরিবারের এক সদস্য রাজ্য পুলিশের আধিকারিক। তিনি কসবার পরিবারের শেষ ইচ্ছে পূরণের দায়িত্ব নিয়েছেন বলে লালবাজার (Lalbazar) সূত্রে জানা গেছে।
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–
–