সম্প্রতি বারবার বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে যুদ্ধ বিরতির কারিগর হিসাবে নিজেকে প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)। এমনকি নোবেল শান্তি পুরস্কারের দাবিও জানিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু ইরানের (Iran) পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে যে ভুল তিনি করেছেন, তাতে যে পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধের আগুন খুব তাড়াতাড়ি থামবে না, সেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে খোদ রাষ্ট্রসঙ্ঘ (United Nations)। ইজরায়েল-ইরান সংঘাতে ফের একবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা করে ফেলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তা যে ইরান কোনওভাবেই মেনে নিচ্ছে না স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন খামেনেই (Khamenei)। এবার ইজরায়েলের (Israel) উপর ফের মিসাইল হামলায় সেটাই প্রমাণ করল ইরান। ফলে নস্যাৎ হয়ে গেল সংঘর্ষ বিরতির ট্রাম্পের দাবি।
ইরানের তিন পরমাণু কেন্দ্রে একসঙ্গে হামলা চালিয়ে কার্যত গোটা বিশ্বকে তাক লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাল্টা হারমুজ প্রণালী (Harmuj straits) বন্ধের একেরবারে দোর গোড়ায় চলে গিয়েছে ইরান। সেই সঙ্গে রাশিয়া, ভারত থেকে চিন – বিশ্বের সব দেশ এই হামলায় ট্রাম্পের প্রবল সমালোচনায় সরব হয়েছে। সেই সঙ্গে আমেরিকার উপর কী ধরনের আঘাত হানা হতে পারে তার প্রমাণ দিতে কাতারে মার্কিন সেনাঘাঁটিতে হামলা চালায় ইরান। এরপরই আচমকা ট্রাম্প স্বতঃপ্রণোদিতভাবে ঘোষণা করেন, ইরান ও ইজরায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষ বিরতিতে (ceasefire) রাজি হয়েছে। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে এই ঘোষণা করে দিয়ে রীতিমত সময়ও নির্ধারণ করে দেন তিনি। প্রথমে ছয়ঘণ্টা পর থেকে ইরান যুদ্ধ বিরতি শুরু করবে। পরে যুদ্ধ বিরতিতে যাবে ইজরায়েল। তারা ১২ ঘণ্টা পরে অস্ত্র সংবরণ করবে।
ট্রাম্পের সময় ধরে এই ঘোষণা করার পরই ইরানের বিদেশমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন কোনও সংঘর্ষ বিরতি হয়নি। ইজরায়েল প্রথমে ইরানের উপর হামলা চালিয়েছিল। ফলে ইজরায়েল ইরানের উপর আগ্রাসন বন্ধ করলে তার পরে ইরান ভেবে দেখবে তারা সংঘর্ষ বিরতির পথে যাবে কি না। সেই সঙ্গে ইরানের সর্বাধিনায়ক খামেনেই আবার জানান, ইরান এমন একটি দেশ যারা আত্মসমর্পণ করতে শেখেনি। ট্রাম্পের সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণার পরে খামেনেইয়ের এই বার্তা আরও স্পষ্ট করে দেয় আদৌ থামার পাত্র নয় ইরান।
ইজরায়েলের পক্ষ থেকে যদিও নেতানিয়াহু ট্রাম্পের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ইরান পারমাণবিক কর্মকাণ্ড স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তে আসার পরই সংঘর্ষ বিরতি কার্যকর হচ্ছে। সেই সঙ্গে ইরানে বন্ধ হয় ইজরায়েলের মিসাইল হামলা।
মঙ্গলবার ফের ইজরায়েলের (Israel) উপর মিসাইল হামলা চালিয়ে ইরান (Iran) স্পষ্ট করে দিল কোনও সংঘর্ষ বিরতি (ceasefire) আদৌ হয়নি। ইজরায়েলের সেনার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মঙ্গলবার ফের সাইরেনের শব্দে ভরে যায় ইজরায়েল। ইরানের মিসাইলের ফোয়ারা দেখা যায় উত্তর ইজরায়েলে। হামলার জেরে অন্তত চারজন ইজরায়েলবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে আইডিএফ। এই হামলার পরই ট্রাম্পের বাণিকে নস্যাৎ করে দিয়ে ফের উত্তপ্ত পশ্চিম এশিয়া। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইজরায়েল কাটজ দেশের সেনাকে কড়া ভাবে এই হামলার প্রত্যুত্তর দেওয়ার নির্দেশ দেন।
–
–
–
–
–
–
–
–
–