শ্রাবণ মাসে মাংস বিক্রি করা যাবে না, এই দাবিতে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বসুন্ধরা এলাকায় কেএফসি ও নাজির ফুডস-এর আউটলেট জোর করে বন্ধ করে দিল হিন্দু রক্ষা দল। শুক্রবার ওই সংগঠনের সদস্যরা ওই দোকানে মিছিল নিয়ে হাজির হয়। এই ঘটনার একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায় “জয় শ্রী রাম” স্লোগান দিতে দিতে দোকানের ভেতরে ঢুকছে হিন্দু রক্ষা দলের সদস্যরা। দোকানের ভেতরে ঢুকে তারা দোকানের কর্মীদের হুমকির স্বরে জানায় শ্রাবণ মাসে মাংস বিক্রি করা যাবে না। শুধু তাই নয়, তারা জোর করে ওই দুটি দোকান বন্ধ করিয়ে দেয়।

প্রসঙ্গত, শ্রাবণ মাসে অনেকেই পেঁয়াজ, রসুন খান না। মাংস খান না। অনেকেই এই সময় উপোষ করে থাকেন। হিন্দু ধর্মে এই মাস খুবই পবিত্র মাস হিসেবে ধরা হলেও মাংস বিক্রির উপর কোনও সরকারি নিষেধাজ্ঞা নেই। তারপরেও হিন্দু রক্ষা দল রীতিমত পুলিশের উপস্থিতিতে জোর করে বন্ধ করিয়ে দেয় দোকান। এই ঘটনার পর, সাধারণ মানুষের অধিকার নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, হিন্দু রক্ষা দলের সদস্যরা হুমকির সুরে বলছে, “এটা হিন্দুস্তান, এখানে হিন্দু যা চাইবে সেটাই হবে।” ওই দলের এক সদস্যের মতে “এটা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। এখানে ধর্মীয় যাত্রা হয়। ওরা এখানে মাংস বিক্রি করছে! হিন্দুদের অনুভূতির প্রতি সম্মান না দেখালে প্রতিবাদ হবেই।” শুধু তাই নয়, তাদের এই কর্মসূচির জন্য কোনো লিখিত অনুমতি ছিল না বলে জানিয়ে এক সদস্যের দাবি,”আমরা প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখি। মৌখিকভাবে অনুমতি নিয়েছি।এরা আবার দোকান আবার খুললে আবারও প্রতিবাদ করব, এবং ফের বন্ধ করাব।”

এই ঘটনার পর সংগত ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিজেপি শাসিত রাজ্যে মানুষের সাংবিধানিক অধিকার কি আদৌ সুরক্ষিত? এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে তৃণমূল নেত্রী শ্রেয়া পান্ডে জানিয়েছেন, “কে এই সংগঠনকে এই অধিকার দিয়েছে এটা ঠিক করার যে আমরা কি খাবো, আমরা কি পছন্দ করব বা আমরা কি মেনে চলবে তা ঠিক করার? যে মুহূর্তে এই ধরনের ক্ষমতা কোন একটা নির্দিষ্ট দলের হাতে চলে আসে তখন আর গণতন্ত্র থাকে না।” তিনি আরো বলেন, “গাজিয়াবাদে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটা একটা একটা স্পষ্ট ইঙ্গিত, একটা সতর্কতা যে বিজেপি কোন ভারত তৈরি করতে চাইছে। যেখানে একদল মুষ্টিমেয় লোক ঠিক করবে আপনি কি খাবেন, আপনি কি পড়বেন, আপনি কি বিশ্বাস করবেন, আপনি কি মেনে চলবেন। এটা গাজিয়াবাদের কেএফসি স্টলে হয়েছে কাল এটা আমার বাংলায় কোন বিরিয়ানি স্টলে হবে, পাঞ্জাবের কোন ধাবায় হতে পারে, মুম্বইয়ের কোনও দোকানে হতে পারে, কোনও ক্লাউড কিচেনে হতে পারে।”

আরও পড়ুন – সংসদের বাদল অধিবেশনের আগে এক জোট I.N.D.I.A.: ৮ প্রশ্ন কেন্দ্রের কাছে

_
_

_

_

_

_

_

_

_
_
_