শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার “অপরাধে” হরিয়ানার গুরুগ্রামে আটকে রাখা হয়েছিল মালদহের চাঁচলের আট পরিযায়ী শ্রমিককে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে অবশেষে বাড়ি ফেরার পথে ওই আট শ্রমিক। পরিবারগুলি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

বিজেপি শাসিত রাজ্যে একের পর এক পরিযায়ী শ্রমিক নিগ্রহের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ছড়িয়েছে মালদহ জুড়ে। শ্রমিকদের পরিবারের দাবি, পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র ভাষাগত কারণে পুলিশ তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। চার দিন থানায় আটকে রেখে হেনস্তা করা হয় তাঁদের।

এই ঘটনায় চরম ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিজন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান, শ্রমিকদের সঙ্গে থাকা স্ত্রী ও সন্তানদেরও পুলিশ হেনস্থা করে। এমনকি স্বামীদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে পুলিশ হুমকি দেয়, “তোমাদেরও জেলে ভরে দেব!” কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।

ঘটনার খবর পৌঁছতেই নড়েচড়ে বসে চাঁচল মহকুমা প্রশাসন। রাজ্য সরকারের তরফে হস্তক্ষেপের পর অবশেষে বুধবার গুরুগ্রামের থানা থেকে মুক্তি দেওয়া হয় আটজন শ্রমিককে। পরিবার সূত্রে খবর, মালদহের চাঁচল-১ ও চাঁচল-২ ব্লকের অন্তর্গত চন্দ্রপাড়া, মুলাইবাড়ি, কিসমতপুর, শ্রীপতিপুর ও বাকিপুরের বাসিন্দা ওই শ্রমিকরা গুরুগ্রামের একটি নির্মাণ প্রকল্পে কর্মরত ছিলেন।

ধৃতদের মধ্যে ছিলেন সায়েদ আলি, লালটু হোসেন, আনেসুর রহমান, আলম আলি, নাজিমুল হক, হবিবুর রহমান, নুর আলম ও মুকুল হোসেন। পাশাপাশি আনেসুরের জামাই আলমকেও তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে পরিবারের দাবি।

বাংলা ভাষাভাষী হওয়ায় তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক করার অভিযোগ ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে। প্রশাসনের নির্লিপ্ত ভূমিকা ও ভাষাগত বৈষম্যের এই ঘটনা আরও একবার স্পষ্ট করে দিল, পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা আজ কতটা প্রশ্নের মুখে।

আরও পড়ুন – ভোটার তালিকা সংশোধনে কমিশনের কড়া অবস্থান, ভাতা দ্বিগুণ বিএলও-দের

_

_

_
_
_
_
_
_