বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালিদের ওপর শুরু হয়েছে অত্যাচার। বাংলা ও বাঙালী (Bangla and Bangali) বিদ্বেষে ক্রমেই বাঙালিদের ওপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়ছে ডাবল ইঞ্জিন সরকারের রাজ্যে। দুর্গা পুজোই (Durga Puja) এবার যেন সেই বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠেছে। অশ্বিনীনগর বন্ধুমহলের (Ashwininagar Bandhumahal) পুজোর থিম এবার বাংলা ও বাঙালি। এই ভাষা এবং বাঙালির ঐতিহ্য যে কতটা পুরনো সেই বোঝাতেই এবার অভিনব উদ্যোগ বন্ধুমহলের। তাদের কথাতেই উঠে এল সেই কথা।

দুর্গা পুজো (Durga Puja) শুরু হতে বাকি রয়েছে আর মাত্র ৪৩টা দিন। জোরকদমে চলছে পুজোর প্রস্তুতি। অন্যান্য পুজো গুলোর সঙ্গে বন্ধু মহলের কর্তাদেরও এখন নিঃশ্বাস ফেলার সময় নেই। সেই ছবিই ধরা পড়ল অশ্বিনি নগর বন্ধু মহলের পুজোর প্যান্ডেলের অন্দরমহলে। তাদের থিম এবার বাংলা ও বাঙালি। বাঙালির ঐতিহ্য কতটা ইতিহাস সমৃদ্ধ সেটাই বোঝাতে চাইছেন তারা।

অশ্বিনীনগর বন্ধু মহলের (Ashwininagar Bandhumahal) থিম করার দায়িত্বে রয়েছেন এবার সম্রাট বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাত দিয়েই বন্ধুমহলের পুজোর থিম রূপ নিচ্ছে এক প্রতিবাদের ভাষায়। এই থিম সম্বন্ধে ক্লাব কর্তা স্বপন নাগ বলছিলেন, “এবছর আমরা যে থিমটি করছি সেটা অনেক বেশি ইনফরমেটিভ হবে। আমাদের আসল থিম হল গর্বের বাংলা ও বাঙালি। বাংলার অস্বিত্ব আমরা ৪২ হাজার বছর আগে পেয়েছি। এছাড়াও যে একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে আমাদের মনে হয়েছে বাংলা ও বাঙালি নিয়ে আমাদের সকলকে আরও বেশি জানানো দরকার। বাংলা একটি ক্ষুদ্র জাতি, এছাড়াও নানান ভুল বোঝানোর চেষ্টা চলছিল সেটাই বোঝাতে হবে। বাংলায় যেমন রামকৃষ্ণ আছেন, তেমনই রয়েছেন লালন ফকির। যেমন রবীন্দ্রনাথ রয়েছেন, তেমন বাংলায় রয়েছেন নজরুল ইসলামও। এই সমস্ত ইতিহাস বাংলার। সেইসঙ্গে কনিস্কের সময়ের বাংলা, পাল, সেন যুগের বাংলা, এই সমস্ত ইতিহাস ফুটিয়ে তোলা হবে”।

এই মুহূর্তে বিজেপি শাসিত প্রতিটি রাজ্যেই নেমে আসছে বাঙালিদের ওপর অত্যাচারের খাঁড়া। তারই প্রতিবাদ যে এই পুজো তা বলতে কোনও দ্বিধা নেই ক্লাব কর্তা স্বপন নাগের। তিনি জানালেন, অবশ্যই, “এটাতো প্রতিবাদই। অনেকেই অনেকরকম ভাবে প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু আমরা প্রতিবাদ করছি পুজোর মাধ্যমে। প্রতিবাদটি হল শিক্ষা। অশিক্ষার অন্ধকার দূর করতে গেলে আমাদের শিক্ষার আলো আনতেই হবে। সেই শিক্ষা সকলের সামনে তুলে ধরা। বাংলা কিন্তু কোনও ঠুনকো ভাষা বা সংস্কৃতি নয়। শুধুমাত্র ঐতিহাসিকভাবে নয়, আমরা পুরাতাত্ত্বিক ভাবে সেটা বোঝাতে চাইছি আমরা”।

এবারের পুজোর ক্লাব গুলোকে এক লক্ষ দশ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা যে তাদের আলাদা করে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই কথাই বারবার তাদের মুখে উঠে আসছিল।

কোনওবারই তাদের পুজোর উদ্বোধনে কোনওরকম তথাকথিত সেলিব্রিটিরা আসেন না। এবারও তার অন্যথা হবে না। ৪৫ বছরে পা দেওয়া বন্ধুমহলে থাকছে নানান চমক। হাতে সময় বেশি নেই, সেজে উঠছে অশ্বিনীনগর বন্ধুমহল।

–

–

–

–

–