‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকা নিয়ে কি যুদ্ধ এখনও চলছে? প্রকাশক বীজেশ সাহাকে লক্ষ্য করে তোপ দেগেছেন অংশুমান কর। সোশাল মিডিয়াতে দীর্ঘ পোস্ট করেছেন তিনি।অংশুমান লিখেছেন,” বীজেশ সাহা কো গুস্যা কিঁউ আতা হ্যায়? জরুরি প্রয়োজনে আমি দেশের বাইরে আছি। ফোন করে আমার অগ্রজ কবিরা অনেকে আমাকে জানাচ্ছেন যে, বীজেশ সাহা তোমাকে গালাগালি করছেন। গালাগালি শুনতে শুনতে আমার কান পচে গেছে। খুব একটা গায়েও লাগে না আজকাল। যা সঠিক মনে করি, তা লিখে এবং বলে চলি। এবং সত্যি বলতে কি, বীজেশ সাহা নামক ব্যক্তিকে এতখানি গুরুত্ব দিয়ে এই পোস্ট না করলেও চলত। কিন্তু কৃত্তিবাস সম্পর্কিত সাম্প্রতিক কিছু পোস্টের প্রেক্ষিতে কিছু কথা ইতিহাসের স্বার্থেই লিপিবদ্ধ করে রাখা দরকার বলে মনে করছি। কারণ, কৃত্তিবাস সংক্রান্ত বিভিন্ন মিথ্যে কথা বীজেশ সাহা এবং তাঁর দলের কয়েকজন লিখে চলেছেন যা আসলে ইতিহাস বিকৃতির সমতুল। এটিও পাঠকদের বোঝার প্রয়োজন আছে যে, বীজেশ সাহার আমার ওপরেই বা এতখানি রাগ কেন?”

অংশুমান আরও লিখেছেন, সুনীলদার প্রয়াণের পর যখন স্বাতীদিকে সম্পাদক করে কৃত্তিবাস কাজ শুরু করে তখনই কৃত্তিবাসের সম্পাদকমণ্ডলীতে আমি এবং শ্রীজাত আরও কয়েকজনের সঙ্গে যুক্ত হই। তার অনেক আগেই বীজেশ সাহা কৃত্তিবাস থেকে বিতাড়িত। মাঝের সময়টুকুতে কৃত্তিবাস প্রকাশ করত পুনশ্চ ও পরম্পরা। সুনীলদার প্রয়াণের পর কৃত্তিবাস সম্পাদনার কাজে যুক্ত হওয়ার জন্য আমাকে ফোন করেছিলেন প্রথমে দিব্যেন্দু পালিত এবং পরে বাদল বসু। তারপরে অবশ্যই স্বাতীদি নিজে। সুনীলদার পুত্রও এই সময় থেকেই কৃত্তিবাসের কাজের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন। এই সময়েই আমরা খুব বড়ো করে কৃত্তিবাসের ষাট বছরে পদার্পণ উপলক্ষ্যে একটি জাতীয় স্তরের অনুষ্ঠান করেছিলাম সাহিত্য অকাদেমির সহযোগিতায়, ভারতীয় জাদুঘরের আশুতোষ মেমোরিয়াল হলে।

এর কিছুদিন পরে কৃত্তিবাসের অভিভাবকতুল্য মানুষজনই সম্পাদক মণ্ডলীতে আরও একটি পরিবর্তন আনেন। আমি এবং শ্রীজাত সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পাই। আমাদের দু-জনেরই অন্য নানা কাজের চাপ ছিল প্রচুর। তবুও এই দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম কারণ ফোন করেছিলেন স্বাতীদি নিজে। বলা বাহুল্য সুনীলদার প্রয়াণের পর থেকে কৃত্তিবাস প্রকাশের যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করছিল সিগনেট প্রেস। আমি এবং শ্রীজাত যখন কৃত্তিবাসের সহ-সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করি তখন প্রথম দিকে কাজের চাপ এতই বেড়ে গিয়েছিল এবং মফস্সলের কবিদের কবিতা বেশি বেশি ছাপা হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে কয়েকজন কৃত্তিবাসের অন্দরমহলে এমনি জল ঘোলা করার চেষ্টা করেছিলেন যে, আমরা সকলে মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিই, পত্রিকার নীতি ও কার্যধারা নতুন করে ঠিক করার জন্য একটি সংখ্যা আমরা প্রকাশ করব না, হয়তো বা দু-টি সংখ্যারও বিরতি নেওয়া হতে পারে। কৃত্তিবাসের ইমেইলে প্রতিদিনই প্রচুর লেখা জমা পড়ত তাই কৃত্তিবাসের যে একটি বিরতি নেওয়া হচ্ছে এই মর্মে একটি ঘোষণাও করা হয় ফেসবুকে। বলা হয় যে, কৃত্তিবাস পত্রিকা প্রকাশ কিছুদিনের জন্য স্থগিত রাখা হল। এর অর্থ একেবারেই এই ছিল না যে, কোনো দিনই আর কৃত্তিবাস পত্রিকা প্রকাশ পাবে না বা কৃত্তিবাস পত্রিকা বন্ধ হয়ে গেল।

কিন্তু, এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই মাঠে নামেন বীজেশ সাহা। কারণ, ওঁকে কৃত্তিবাস প্রকাশের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন খোদ সুনীলদাই। ওঁর সম্বন্ধে কয়েকটি কথাও আমাকে বলেছিলেন যা এই মুহূর্তে লেখা অনুচিত হবে। যে-শব্দ সুনীলদা বীজেশ সাহার সম্বন্ধে ব্যবহার করেছিলেন তা ছিল আমার কল্পনার অতীত। যাই হোক, সদ্য ক্ষমতায় আসা শাসক দলের কয়েকজনের সমর্থন নিয়ে ‘নতুন কৃত্তিবাস’ নামে একটি পত্রিকা বীজেশ সাহা চালু করেন আমাদের ফেসবুকের ঘোষণার কিছুদিন পরেই। পত্রিকার উদ্বোধনে ক্ষমতাধর ব্যক্তিরাই হাজির ছিলেন। সংবাদ মাধ্যম সহ নানা জায়গায় এই কাজটি করার জন্য তখন বীজেশ সাহা প্রবল সমালোচনার মুখেও পড়েছিলেন। যথারীতি ছোট্ট বিরতির পর আসল কৃত্তিবাস নিয়মিত প্রকাশ পেতে থাকে।

আসল কৃত্তিবাসের ছোট্ট বিরতির পর্বেই প্রথম বীজেশদার কৃত্তিবাস সংক্রান্ত ফোন আসে আমার কাছে। তিনি সরাসরি আমাকে প্রস্তাব দেন আমি যেন ‘নতুন কৃত্তিবাস’ পত্রিকার সম্পাদকমণ্ডলীতে যোগদান করি কারণ উনি কোনো একটি সূত্র মারফত নাকি জেনেছেন যে, কৃত্তিবাস পত্রিকা চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেছে। আমি ওঁকে স্পষ্ট জানাই যে, কৃত্তিবাস পত্রিকা বন্ধ হয়নি এবং এই নামে আরেকটি পত্রিকা করা হবে নৈতিকভাবে অনুচিত। আমার তো যোগদানের প্রশ্নই নেই। এতে উনি মারাত্মক ক্ষুব্ধ হন। আমাকে পরিষ্কার হুমকি দেন যে, আমি যদি নতুন কৃত্তিবাস পত্রিকায় যোগ না দিই, আমার যে ক-টি বই উনি প্রকাশ করেছেন তা বিক্রি বন্ধ করে দেবেন (বলে রাখা ভালো, এর আগে আমাকে একাধিকবার উনি বলেছেন তোমার বইয়ের বিক্রি খুব ভালো। দ্রুত তোমাকে রয়্যালটি দেব, কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার বইয়ের ‘ভালো’ বিক্রি বাবদ একটি পয়সা রয়্যালটিও উনি আমাকে দেননি। অনেকদিন আগে একবার এই প্রসঙ্গ তোলায় আমাকে বলেছিলেন রয়্যালটি আমি পাব যদি আমি আমার শ্রেষ্ঠ কবিতার পাণ্ডুলিপিটি ওঁকে দিই। ধান ভাঙতে শিবের গীতের মতো এটুকু বলে মূল প্রসঙ্গে ফিরি)। আমি ওঁকে জানাই যে, ‘নতুন কৃত্তিবাস’ ছাড়া ওঁর অন্য যে-কোনো কাগজে লেখা দিতে আমি প্রস্তুত। এতে গলা আরও চড়ে যায় শ্রীসাহার। উনি আমাকে অবাক করে দিয়ে বলেন, প্রতিভাস আমাকে লেখক হিসেবে ‘ব্যান’ করছে। স্পষ্টত আমি অপমানিত বোধ করি এবং পালটা বলি, আমিও প্রতিভাস প্রকাশনাকে একজন লেখক হিসেবে ব্যান করছি। আপনার কোনো কাগজে কোনোদিন আর লিখব না। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে সেদিন আমাদের কথাবার্তা শেষ হয়েছিল। পাঠক খেয়াল করে দেখবেন বীজেশ সাহা সম্পাদিত কোনো কাগজে এই সময়ের পর থেকে আমার একটি লেখাও প্রকাশ পায়নি কিন্তু। বীজেশ সাহাও আমার বইগুলির বিক্রি বন্ধ করে দেন। যদিও সম্প্রতি খবর পেলাম যে, একটি বই নাকি উনি আবার বিক্রি শুরু করেছেন; ঠিক বা ভুল নিশ্চিত জানি না। প্রসঙ্গত বলে রাখি ‘নতুন কৃত্তিবাস’ পত্রিকা প্রকাশের আগে বীজেশ সাহা যে ক-টি কাগজ করেছেন প্রায় সেই সবক-টি কাগজেই আমি কোনো না কোনো সময়ে অনুরুদ্ধ হয়ে লিখেছি।

‘নতুন কৃত্তিবাস’-এ লেখার জন্য বীজেশ সাহা আবার আমাকে ফোন করেন উনি আল মাহমুদ সংখ্যা যখন করছেন, তখন। উনি জানতেন যে, আল মাহমুদ আমার প্রিয়তম কবিদের একজন। দু-একজন অগ্রজ এবং আমার সমবয়স্ক কবির নাম করে আমাকে বলেন, এঁরা লিখবেন এই সংখ্যায়, তাহলে তোমার আপত্তি কোথায়? আমি আবারও ওঁকে জানাই যে, আমার পক্ষে লেখা সম্ভব নয়। উনি বলেছিলেন, আল মাহমুদ বিষয় হলেও সম্ভব নয়? আমি বলেছিলাম, নাহ, সম্ভব নয়। এরপর আবার আমার কাছে বীজেশ সাহার ফোন আসে বেলাল চৌধুরীর ওপর একটি লেখা ‘নতুন কৃত্তিবাস’-এর জন্য লিখে দেওয়ার অনুরোধ সহ। এবার উনি আমাকে বলেন, কৃত্তিবাসের সঙ্গে তোমার তো সম্পর্ক চিরকালের মতো ছেদ হয়ে গেছে। আমাদের কাগজে লিখতে বা সম্পাদকমণ্ডলীতে যোগ দিতে তোমার অসুবিধে কোথায়? আমি ওঁকে জানাই যে, নতুন কৃত্তিবাস ছাড়া ওঁর যে কোনো পত্রিকায় লেখা দিতে আমি প্রস্তুত। কিন্তু আমার কথা ওঁর ভালো লাগেনি। সেদিনও বেশ উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়েই আমাদের কথাবার্তা শেষ হয়েছিল। ওঁর সেদিনের ব্যবহারে আমি যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়ে ফোনালাপ শেষ হওয়ার পরে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, আমি কোনোমতেই ওঁর কোনো কাগজেই কোনোদিনও আর লিখব না।

এরপর একটি বিশেষ ঘটনার প্রেক্ষিতে অবশ্য সিদ্ধান্ত খানিক পালটাই। মূলত আমাদের দু-জনেরই অত্যন্ত স্নেহভাজন এক তরুণ কবির বঞ্চনা ও হেনস্থার বিরুদ্ধে আমি ও বীজেশ সাহা আলাদা আলাদা ভাবে প্রতিবাদ করছিলাম। পরিস্থিতি এমনই হয়েছিল যে, ওই তরুণ কবির স্বার্থেই আমার মনে হয়েছিল বীজেশ সাহার ‘নতুন কৃত্তিবাস’ সংক্রান্ত কাজের বাইরে আমি যে ওঁর সম্পাদিত কাগজগুলোতে লিখব না বলেছিলাম, সেই অবস্থান থেকে সরে আসা উচিত। আমরা সম্মিলিত ভাবে প্রতিবাদ করলে হয়তো ওই তরুণ কবির লড়াইটি আরও জোরদার হবে। ওই তরুণ কবির সঙ্গে আলোচনার পরেই এই মর্মে আমি একটি বার্তাও পাঠাই বীজেশ সাহাকে। যদিও তিনি তার কোনো উত্তর দেননি। উলটে কিছুদিন আগে সেই তরুণ কবি আমার সম্পাদিত বা ছোঁয়া থাকা কাগজে কেন কবিতা/গল্প লিখছেন তা নিয়ে তাঁকে আক্রমণ করেন এবং তাঁকে বলেন যে-কোনো এক পক্ষকে বেছে নিতে হবে। এ প্রায় সেই থ্রেটই যা উনি আমাকে দিয়েছিলেন অনেক বছর আগে। এ হল বাংলা কবিতার জগতে ধীরে জাঁকিয়ে বসা থ্রেট কালচারেরই অংশ। উল্লেখ্য যে, সেই তরুণ কবির লেখা এবার আমরা পাইনি। আমার মনে হচ্ছে এই থ্রেট কালচারের শিকার হয়েছেন তিনি।

আশা করি, এতক্ষণে পাঠকরা বুঝতে পেরে গিয়েছেন, বীজেশ সাহার আমার ওপরে এতখানি রাগের কারণ কী। ‘জাল কৃত্তিবাস’ (মৃদুল দাশগুপ্ত চিহ্নিত) সংক্রান্ত কাজে উনি বারবার আমার সাহায্য চেয়েও পাননি। এমনকি, যখন আমার সঙ্গে কৃত্তিবাসের সম্পর্ক ছেদ হয়ে গেছে, তখনও না। তবে, এইবার অবশ্য ফোনে আর রাগ উগরে দেননি বীজেশ সাহা। মৃদুল দাশগুপ্তর পোস্টের প্রেক্ষিতে যখন কৃত্তিবাসের নাম চুরি বিতর্ক ঘনিয়ে উঠল তখন উনি আমার তোলা কিছু প্রশ্নের (যেমন, কৃত্তিবাস থেকে উনি বিতাড়িত হয়েছিলেন কেন) উত্তর দিতে না পেরে, যথারীতি আমাকে ব্যক্তি আক্রমণের কুৎসিত পথে হেঁটেছেন। এক অগ্রজ কবির শেয়ার করা ওঁর পোস্টটি পড়ে ফেসবুকে ওঁর সঙ্গে কুতর্কে জড়াব না ভেবে আমি পূর্বের ঘটনা পরম্পরা উল্লেখ করে ওঁকে হোয়াটসঅ্যাপে বেশ কিছু কথা লিখে পাঠিয়ে বলি, এই তথ্যগুলির একটিও অসত্য হলে আপনি অস্বীকার করুন। আমার হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের প্রেক্ষিতে উনি নিরুত্তর থাকায় আমি বাধ্য হয়ে ওঁর পোস্টের নীচেই কয়েকটি কথা লিখেছি। সেখানেও যথারীতি ব্যক্তি আক্রমণে নেমে পড়েছেন বীজেশ সাহা। কাজেই আমাকেও এই পোস্ট করতে হল।

ভদ্রলোককে একটু বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেললাম কি? এতখানি গুরুত্ব কি উনি দাবি করেন? অনেকে এই প্রশ্ন তুলবেন জানি। জানাই যে, বাংলা সাহিত্যের এক পাঠক হিসেবে প্রতিভাস নিয়ে এক বেদনাবোধও আছে আমার। মৃদুল দাশগুপ্তর “জলপাইকাঠের এসরাজ” এক সময় প্রকাশ করেছিল হাফপ্যান্ট পরা এক স্কুল পড়ুয়া। এখন মনে হয় সেই বীজেশ সাহা আর এই বীজেশ সাহা এক ব্যক্তি নন।

তবে, এও সত্য যে, এই দ্বিতীয় বীজেশ সাহা সম্পর্কে এত কথা না লিখলেও হয়তো চলত। লিখলাম এই কারণেও যে, কৃত্তিবাসের রক্ষাকর্তা কোনো মসিহা হয়ে বীজেশ সাহার আগমন ঘটেনি বাংলা কবিতায় এই সত্যটুকু আজকের প্রজন্মের কবিদের সামনে পেশ করা দরকার। উনি মুনাফা করতে আর কৃত্তিবাস থেকে বিতাড়িত হওয়ার জ্বালা মেটাতেই ‘নতুন কৃত্তিবাস’ শুরু করেছিলেন। লিখলাম এটাও বোঝাতে যে, আমার মতো অনেকজনই আছেন যাঁদেরকে প্রলোভন দিয়ে বা ভয় দেখিয়ে দলে টানা যায়নি, কোনোদিন যাবেও না। সে তাঁরা আসল কৃত্তিবাসের অংশ হয়ে থাকুন বা না থাকুন! একইভাবে, ইচ্ছে করলেই কৃত্তিবাসের ইতিহাস নিজের খুশি মতো বীজেশ সাহা লিখে দিতে পারবেন না। কে আসল আর কে নকল সময় ঠিকই তার বিচার করবে। করছেও।’

এখন দেখার বিষয় বীজেশ সাহা এর উত্তর দেন কিনা, বা দিলে কী উত্তর দেন। সবমিলিয়ে ‘কৃত্তিবাস’ কাণ্ড আপাতত জমজমাট।
–