সুন্দরবনে বাড়ল নোনা জলের কুমিরের সংখ্যা। বন দফতরের সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী এখন এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আনুমানিক ২৪২-এ। এর আগে এই সংখ্যা ছিল ২২০-এর কাছাকাছি। ‘পপুলেশন অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড হ্যাবিটাট ইকোলজি অফ সল্টওয়াটার ক্রোকোডাইলস ইন সুন্দরবনস ২০২৫’ শীর্ষক সমীক্ষা থেকেই উঠে এসেছে এই তথ্য।

প্রসঙ্গত, ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ট্যাগ পাওয়া বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবনকে ঘিরে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। টানা তিন মাস ধরে নদী ও খাঁড়ি মিলিয়ে মোট ১১৬৮ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করেছেন বনকর্মীরা। খালি চোখে দেখা, ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা ছবি এবং কাদায় কুমিরের ছাপ মিলিয়ে এই সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সবচেয়ে বেশি কুমির দেখা গিয়েছে রায়দিঘি রেঞ্জে। পাশাপাশি সজনেখালি ও ন্যাশনাল পার্ক পশ্চিম এলাকাতেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কুমিরের অস্তিত্ব ধরা পড়েছে। বন দফতর জানাচ্ছে, শুধুমাত্র সরাসরি দেখা গিয়েছে ২১৩ বার কুমির। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সমীক্ষার বাইরে আরও কুমির সুন্দরবনে থাকতে পারে, যাদের ধরা যায়নি।

বন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নোনা জলের কুমির জলের জীববৈচিত্র্যের স্বাস্থ্যের অন্যতম সূচক। তাই এদের সংখ্যা বৃদ্ধি একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত। সমীক্ষায় জলের তাপমাত্রা, খালের প্রস্থ, বাঁকের ঢাল, পৃষ্ঠজল এবং উদ্ভিদ সম্পর্কিত তথ্যও সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত ১০ থেকে ১৩০ মিটার প্রস্থের খাল কুমিরদের বেশি পছন্দের।

গত বছর রায়দিঘির বিভিন্ন গ্রামের পুকুরে কুমির দেখা যাওয়ায় আতঙ্ক তৈরি হলেও, বন দফতরের মতে এই সংখ্যা বৃদ্ধিই প্রমাণ করছে সুন্দরবনের জলজ পরিবেশ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছে। সুপারিশে বলা হয়েছে, আগামী দুই বছর সমীক্ষা অব্যাহত রাখা উচিত, যাতে জনসংখ্যার প্রবণতা, চলাফেরার ধরণ ও ডিম পাড়ার জায়গা নিয়ে আরও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন – খড়্গপুর স্টেশনে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, লোহার বিমে চাপা পড়ে প্রাণ গেল ৮ বছরের শিশুর
_
_
_
_
_
