বিধানসভা নির্বাচনের আগে অসমে দোলাচলে বিজেপি। মানুষকে বিজেপির ডবল ইঞ্জিনে আশ্বস্ত করতে এক বছর আগে থেকে উন্নয়নের ঢালাও টাকা নিয়ে অসমে যেতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। মোদির সফরের পরই কার্যত বিধানসভা নির্বাচনের (Assam assembly election) ঢাকে কাঠি ফেলে দিল অসম বিজেপি (BJP Assam)। আর সেখানে তুলে ধরা হল – বিজেপি না থাকলে গোটা অসম মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষে ভরে যাবে। অদ্ভুতভাবে কংগ্রেসকে প্রতিহত করতে তৈরি ভিডিও-তে রাজনীতির উল্লেখই নেই। শুধুই ধর্মীয় সুড়সুড়ি দিয়ে যে নির্বাচনের বৈতরণী পার করতে চায় অসম বিজেপি, তার প্রমাণ তুলে ধরা হল এআই (AI) জেনারেটেড ভিডিওতে।

অসম বিজেপির তৈরি করা ভিডিওতে দেখানো হয়েছে অসম ও গুয়াহাটি শহরের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় কিছু এলাকা। সেখানে এআই ছবিতে শুধুই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে দেখানো হয়েছে। রাস্তার গরুর মাংস কাটা থেকে চা বাগানে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে দেখিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা চলেছে গোটা অসমে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের জমি হারাচ্ছেন। রাহুল গান্ধীকে পাকিস্তানের প্রচারক হিসাবে উল্লেখ করে কংগ্রেস (Congress) বিরোধিতার গোটা বার্তাতেই হিন্দুদের ভয় দেখানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু কীভাবে অসমে ইসলাম সম্প্রদায়ের মানুষ বাড়বে? তার উত্তরও এই এআই ভিডিও-তেই রয়েছে। দেখানো হয়েছে কাঁটাতারে বেআইনি বিচ্ছেদ করে প্রতিবেশী দেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা অসমে প্রবেশ করছে। যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিএসএফ (BSF) সেই সীমান্ত ও কাঁটাতার রক্ষা করে তাদের ব্যর্থতাকেই অসমের বিজেপি (BJP Assam) একেবারে স্পষ্ট করে তুলে ধরল। এরপরেও বিজেপির হাতেই অসমকে সুরক্ষিত রাখার দাবিও করা হল নির্বাচনী প্রচারে।

যদিও এভাবে নির্বাচনী প্রচারে সরাসরি ধর্মীয় বিষ ঢালা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে উঠেছে প্রশ্ন। বিরোধীদের প্রশ্ন এক্ষেত্রে কী কোনও নজরদারি করবে না নির্বাচন কমিশন? নির্বাচনী বিধি লাগু হতে ঢের দেরি। তা সত্ত্বেও এভাবে ধর্মীয় উস্কানির পথে বিজেপিকে অসমে নামতে হল। তার কারণ হিসাবে বিরোধীরা অসমের অনুন্নয়ন ও দুর্নীতিরই উল্লেখ করেছেন। তুলে ধরা হয়েছে সম্প্রতি কোটি কোটি টাকা জমি দুর্নীতিতে জড়িত আইএএস আধিকারিকের প্রসঙ্গ তোলা হয়।

আরও পড়ুন:

যে রাজ্যে জমি দুর্নীতিতে গোটা দফতরের জালিয়াতি প্রকাশ্যে চলে আসে সেই রাজ্যেই বিজেপির এআই প্রচারেও জমির স্থান রয়েছে। বিজেপির তৈরি করা ভিডিওতে দেখানো হয় সরকারি জমির জবর দখল হয়েছে। সেখানেই সেই ইসলাম সম্প্রদায়ের উপরই দোষ দেওয়া হয়েছে। আদতে বিজেপির তৈরি ভিডিওতেই স্পষ্ট – কীভাবে বেআইনিভাবে অসমে অনুপ্রবেশ হচ্ছে, প্রশাসনিক ব্যর্থতায় জমির জবরদখল, এমনকি সরকারি জমিও বেহাত হয়ে যাচ্ছে।
