গোটা এশিয়ার মধ্যে সবথেকে ধনী গ্রাম (Asia’s richest village)রয়েছে ভারতবর্ষের বুকেই। যেখানে জনসংখ্যা মাত্র ৩২ হাজার অথচ সম্পত্তির পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা!এই গ্রামের কোনও কোনও গ্রামবাসীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৭০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। শুনতে অবাক লাগলেও এই তথ্যে কোন ভুল নেই। কথা হচ্ছে গুজরাট রাজ্যের ছোট্ট গ্রাম মাধাপুরের (Madhapur, Gujrat)। আর যে পরিসংখ্যান দেওয়া হল সেটা ভারত সরকারের রেকর্ডে উল্লেখিত রয়েছে।

ভারতবর্ষের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন আর আগের মতো নেই। পরিবেশগত পরিবর্তনের পাশাপাশি আর্থসামাজিক পরিকাঠামোতে বদল এসেছে। তবে মাধাপুরের ‘ধনী গ্রামের’ তকমা পাওয়ার পিছনে ভারতবাসীর অবদান নাকি অন্য কোনও ফ্যাক্টর কাজ করেছে সেটা জেনে নেওয়া দরকার। আসলে গুজরাটের এই ছোট্ট গ্রামে মূলত অনাবাসী ভারতীয়দের বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ রয়েছে। বিদেশ থেকে আসা অর্থ এই গ্রামকে সমৃদ্ধ করেছে। আফ্রিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে বসবাসকারী ভারতীয়রা এই কাজে এগিয়ে রয়েছেন। প্রায় ২০ হাজার বাড়ি রয়েছে মাধাপুরে যার মধ্যে প্রায় ১২০০ পরিবার থাকে বিদেশে।এই পরিবারের সদস্যরাই বিদেশ থেকে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা পাঠায় স্থানীয় ব্যাঙ্ক এবং পোস্ট অফিসে। এনআরআইদের বিনিয়োগ মাধাপুরকে আর্থিকভাবে এতটাই সমৃদ্ধশালী করেছে যে বর্তমানে সরকারি বেসরকারি একাধিক ব্যাংক এখানে তাদের শাখা খুলেছে। তালিকায় এসবিআই, এইচডিএফসি, আইসিআইসিআই ও পিএনবি রয়েছে। এককথায়, ৩২ হাজার গ্রামবাসীর জমা সম্পত্তির দেখভালের জন্য মাধাপুর গ্রামে শাখা খুলেছে দেশের ১৭টি ব্যাঙ্ক।

আসলে এই গ্রামের মানুষেরা সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলেও তাঁদের নিজের শিকড়কে যাতে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করা যায় সেই চেষ্টা করে চলেছেন। এখানকার সম্পদের সিংহভাগে নেপথ্যে আফ্রিকার নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রবাসী ভারতীয়রা। জীবিকা নির্বাহের স্বার্থে বিদেশে থাকতে হলে মাধাপুরের কথা ভুলে যাননি তাঁরা। শিকড়ের টানকে গুরুত্ব দিয়ে এখানকার রাস্তা, স্কুল, হাসপাতালের উন্নতির জন্য নিয়মিত টাকা পাঠান। এখানকার মানুষেরা মনে করেন, শুধু এ দেশ বা এই মহাদেশ নয়, গোটা বিশ্বের কাছে এই গ্রামের মানুষের মানসিকতা, গভীর আত্মিক বন্ধন ও সম্পর্কের দৃঢ়তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।

–

–

–

–

–

–

–