অনেকদিন অন্তরালে থেকে ফের ক্ষমতায় ফিরেছেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। এনকেডিএ-এর চেয়ারম্যান হয়েছে তিনি। আর তারপরেই তাঁর পুরনো বিধানসভায় এলাকায় শোভনের সমর্থনে পড়েছে পোস্টার। বিষয়টা কেমন ভাবে দেখছেন ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের বর্তমান বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়? ‘বিশ্ব বাংলা সংবাদ’ মুখোমুখি হয়েছিল রত্নার। আর সেখানে তাঁর স্পষ্ট জবাব অতি উৎসাহীরাই এই পোস্টার টাঙিয়েছে। এটাতে তাঁকে হেয় করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তবে একইসঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে প্রশাসক হিসেবেই এগিয়ে রাখতে চান রত্না, রাজনীতিবিদ তারপর।

ব্যক্তিগত সমীকরণ যাই হোক রাজনীতির দিক থেকে শোভনের ছেড়ে দেওয়া শেয়ার এই বসেছেন রত্না। তিনি এখন বেহালা পূর্বের বিধায়ক। একইসঙ্গে ওই অঞ্চলের কাউন্সিলরও। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন অন্তরালে থাকার পরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তারপর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পরেই দিদির প্রিয় কাননে ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে। তাঁকে NKDA-এর চেয়ারম্যান করেছেন মমতা। আর তারপরেই প্রাক্তন বিধায়কের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার পড়েছে বেহালা পূর্বে। কেমন লাগছে বর্তমান বিধায়ক রত্নার? বিষয়টাকে পাত্তা দিতেই নারাজ রত্না চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “এখানে আমাকে কেউ করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কারণ আমি পাঁচবছর ধরে এই এলাকায় কাজ করেছি। এলাকার গলি গলি আমি চিনি। প্রতিটা মানুষ আমার পরিচিত। হয়তো কেউ কেউ অতি উৎসাহিত হয়ে এই পোস্টটা দিয়েছে।^ তবে এর সঙ্গে তাঁকে আঘাত করার কোন সম্পর্ক নেই বলেই মত রত্নার।

NKDA-র চেয়ারম্যান হয়েছেন শোভন। তাহলে কি ২০২৬-এর নির্বাচনে বিধানসভার টিকিট পাবেন তিনি? প্রার্থী হবেন পুরনো কেন্দ্র বেহালা পূর্বে? রত্নার মতে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীর সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের ‘দয়াতেই’ তিনি এই চেয়ারে বসেছেন। তাঁরা যদি বলেন এই চেয়ার ছেড়ে দিতে তাহলে তাঁর কোনও সমস্যা নেই। বিধায়কের পদের জন্য লালায়িত নন তিনি- স্পষ্ট জানান রত্না। একই সঙ্গে তিনি জানান, পাঁচ বছর ধরে এই এলাকার জন্য অপরিসীম পরিশ্রম করেছেন তিনি। এখন বিধায়ক হিসেবে তিনি পরিণত। তাঁকে যেকোনো জায়গা দাঁড়ানো হলেই তিনি লড়ে নেবেন। হয়তো এলাকাটা পরিচিত হতে কিছুটা সময় লাগবে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, মহেশতলা আসনটি দুলাল দাসের থেকে নিয়ে রত্নাকে দেওয়া হতে পারে। আর বেহালা পূর্বে হয়তো প্রার্থী হবেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তবে পুরোটাই জল্পনা মাত্র।

৬ মাসের মেয়াদে NKDA চেয়ারম্যান হয়েছেন শোভন। খুব বেশি উন্নয়ন করতে পারবেন কি? রত্নার কথায়, একেবারেই না। কারণ কোনও জায়গাটাকে দেখে বুঝে নিতেই প্রায় ৬ মাস সময় চলে যায়। তারপরে সেই এলাকার উন্নয়ন প্রশাসক হিসেবে শোভন চট্টোপাধ্যায় দক্ষ হতে পারেন, খুব দ্রুত কোন জিনিস বুঝে নেওয়ার ক্ষমতাও তাঁর আছে কিন্তু তার মানে এই নয় যে এই সময়ের মধ্যেই তিনি নিউটাউনের ভেল বদলে দিতে পারবেন মনে করেন না রত্না।

রাজনীতিবিদ আর প্রশাসক কোন শোভনকে এগিয়ে রাখবেন রত্না? তাঁর কথায় ভালো রাজনীতিবিদ বলেই শোভনকে প্রশাসক হিসেবে নির্বাচন নির্বাচিত করেছে দল। তবে ভালো রাজনীতিবিদ হলে বেশ কিছু ভুল সিদ্ধান্ত হয়তো নিতেন না শোভন! সেক্ষেত্রে প্রশাসক শোভন চট্টোপাধ্যায়কেই এগিয়ে রাখছেন রত্না।

আরও পড়ুন- অপুষ্টিতে শিশুদের মৃত্যুমিছিল! ‘ডবল ইঞ্জিনে’ বিপন্ন মধ্যপ্রদেশ, তথ্য তুলে বিজেপিকে তোপ তৃণমূলের

_

_

_
_