একই মঞ্চে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে দুই জনপ্রিয় শিল্পীর সাউন্ড টিমের ঝামেলার জেরে সোশ্যাল মিডিয়ায় দুই গায়িকার (Female Singers) বেনজির দ্বন্দ্বের সাক্ষী নেটদুনিয়া। পয়লা নভেম্বর টালিগঞ্জের বিজয়গড় সংলগ্ন একটি ক্লাবের সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ উদযাপনের অনুষ্ঠানে দুই সঙ্গীতশিল্পী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায় (Poushali Banerjee) ও জোজো মুখোপাধ্যায় (Jojo Mukherjee) অংশ নেন। এরপর বাড়ি ফিরে মধ্যরাতে ফেসবুক লাইভ করেন জোজো। সেখানে তিনি পৌষালীর টিম মেম্বার থেকে শুরু করে শিল্পীকেও অপেশাদারিত্বের অভিযোগে আক্রমণ করেন। রবিবার সকালে হাসিমুখে পাল্টা জবাব দেন লোকসংগীত শিল্পী পৌষালী।
ঠিক কী ঘটেছিল?
দুই তারকার ফেসবুক লাইভ থেকে যেটুকু জানা যায় তাতে অনুষ্ঠান মঞ্চে সাউন্ড চেক করার সময় ইন্সট্রুমেন্ট সরানো নিয়ে দুই শিল্পীর মিউজিসিয়ানদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। জোজোর অভিযোগ, তাঁদের কারুর অনুমতি না নিয়ে পৌষালীর টিম মেম্বাররা মঞ্চে থাকা ইন্সট্রুমেন্ট সরিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে লোকসংগীত শিল্পী জানিয়েছেন তাঁর দলের সদস্যরা কারো সাথে খারাপ আচরণ করতে পারে না বরং সিনিয়র শিল্পীর সহযোগীরাই সহযোগিতা করেননি।

শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে জোজো বলেন, “আমাদের সঙ্গীত দুনিয়াটা খুব ছোট। সকলকেই কমবেশি অ্যাডজাস্ট করতে হয়। আমার টিমের সদস্যরা আগে গিয়ে সাউন্ড চেক করে রেস্টরুমে চলে যায়। এইসময় পৌষালী ও তাঁর টিমের সদস্যরা আসেন এবং আমাদের অনুমতি ছাড়াই আমাদের বাদ্যযন্ত্র সরিয়ে দেয়। আমাদের না জানিয়ে এমনটা করেছে, এটা একপ্রকার অসভ্যতা। পৌষালির টিম আমাদের সঙ্গে অসভ্যতা করেছে। ওদের উচিত ছিল আমাদের বলা। এই অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। এমনকী এটাও বলে রাখি আমি আজকের এই অসম্মানের পর আমি শোটা করতাম না। কিন্তু ওখানে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের জন্য আমি শুধু শোটা করেছি। এভাবে কারও অনুমতি ছাড়া মঞ্চ থেকে বাদ্যযন্ত্র সরানো যায় না।”
পৌষালী ফেসবুক লাইভে বলেন পুরো বিষয়টা সম্পর্কে সকলকে না জানালে একতরফা অভিযোগ উঠতে পারে। তাই তাঁর পক্ষের বক্তব্য তিনি তুলে ধরেন। বলেন, ” আগে আমাদের অনুষ্ঠান ছিল। আমার পরে জোজোদি’র অনুষ্ঠান ছিল। সাধারণত, যাঁদের পরে অনুষ্ঠান থাকে তাঁরা আগে সাউন্ড চেক করেন। সেভাবেই জোজোদি’র টিমের আগে সেসব করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ও তাঁর টিম আগে সময়মতো পৌঁছতে পারেনি। প্রায় এক ঘণ্টা পরে পৌঁছয়। অনেকটা সময় লাগে সবটা সারতে। এক্ষেত্রেও তাই। শুধু তাই নয়, মঞ্চে জায়গা এতটাই কম ছিল যে জোজোদি’র টিম সমস্ত বাদ্যযন্ত্র রাখার পর আমাদের আর দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না। অনেক অনুরোধ করি আমরা জোজোদি’র টিমের কাছে তাঁদের ড্রামকিটটা সরানোর জন্যও। ওটা সরালেই আমরা স্বচ্ছন্দ্যে দাঁড়াতে পারতাম। কিন্তু জোজোদি’র টিম যখন আমাদের অনুরোধ শোনে না, একটু কথা কাটাকাটি হয়। যখন আমরা মঞ্চের উপর ঠিকভাবে দাঁড়াতে পারছি না তখন বাধ্য হয়ে ক্লাবের সদস্যদের উপস্থিতিতে আমরা দেড় ফুট থেকে দু’ফুট মতো সরাই ওই বাদ্যযন্ত্রটি। তখন কোথাও জোজোদির টিমের কেউ আসেননি। এবং এই পুরো বিষয়টাই একেবারে ভুলভাবে দিদির কাছে ব্যাখ্যা করা হয়। আমার অনুষ্ঠান শেষে জোজোদি মঞ্চে উঠে মাইকে সকলের সামনে এটা নিয়ে বলেন। তারপরেও উনি থামেননি। বাড়ি ফিরে লাইভ করে উনি আবারো ওনার কথাগুলো বলেছেন। আমি শুধু এটুকুই বলতে চাই, আমি ওনার থেকে অনেক জুনিয়র। আমি সিনিয়রদের কাছে নত হয়ে থাকতেই ভালোবাসি। কিন্তু যে ভুল আমি করিনি তার দায় আমি নিতে পারব না। প্রয়োজন হলে আমি এই ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করে দেব।”
–
–
–
–
–
–