বর্তমান রাজ্য সরকারের অনুপ্রেরণায় চিকিৎসা এখন বাংলার মানুষের ঘরে ঘরে। সাধারণ রোগ থেকে জটিল রোগে বাংলাতে চিকিৎসা করাকেই ভরসা করেন রাজ্যের মানুষ। একদিকে বাংলার পরিকাঠামো, অন্যদিকে বাংলার চিকিৎসকদের অদম্য প্রয়াসে এখন বহু জটিল থেকে কঠিন রোগও নিরাময় সম্ভব হচ্ছে এই বাংলায়। আর এবার সেই বাংলার চিকিৎসা মডেলের প্রশংসা বিশ্বমঞ্চে। যেভাবে বাংলার চিকিৎসকদের প্রয়াসে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের (Type-I Diabetes) বিরুদ্ধে বাংলায় লড়াই সম্ভব হচ্ছে, তা এবার তুলে ধরা হবে বিশ্বের কনফারেন্সে। এসএসকেএম হাসপাতালের (SSKM Hospital) চিকিৎসকদের এই সাফল্যে শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

রাজ্যের এসএসকেএম (আইপিজিএমইআর) তিন বছর ধরে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের চিকিৎসার নতুন পথ খুলে দিয়েছে। হাসপাতালের এন্ডোক্রিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক সুজয় ঘোষের নেতৃত্বে সেই চিকিৎসা ব্যবস্থা এখন বাংলার ১৫টি জেলায় পাওয়া সম্ভব। ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় আধুনিক পন্থা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানাভাবে নিয়েছে। কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রে মারণ হিসাবে উঠে আসা টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশের (developing country) ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা। আর সেখানেই নতুন দিশা দেখিয়েছেন এসএসকেএম-এর চিকিৎসকরা, একথা জানাচ্ছেন বিশ্বের এই ধরনের রোগের চিকিৎসায় অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের (Harvard Medical School) অন্যতম ডিরেক্টর জেন বাখম্যান (Gene Bukhman)।

বংশপরম্পরায় সঞ্চারিত না হওয়া টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের চিকিৎসা না হলে মৃত্যু অবধারিত। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের মতো ভারতেও এই ব্যয়বহুল ও জটিল চিকিৎসায় বহু ক্ষেত্রেই চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হতো শিশুদের। সেখান থেকে মুক্তির পথ হিসাবে ২০২২ সালে প্রথমবার এসএসকেএম-এর চিকিৎসকরা এই চিকিৎসার একটি মডেলের পাইলট প্রকল্প শুরু করেন ৫ জেলায়। সেখানে রোগ নির্ণয়, পরিচালনা, প্রয়োজনীয় রেফার, পুণর্বাসনের পাশাপাশি রোগীদের যথাযথ তালিকা মেনে চলা ও ফলোআপে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে বর্তমানে রাজ্যের ১৫ জেলার ১,৫০০ শিশু এই প্রকল্পে চিকিৎসা পাচ্ছে।

গত শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতালে আসেন জেন বাখম্যান। এসএসকেএম হাসপাতালের এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর দাবি, এই নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ (NCD) ক্লিনিকটি ভারতের মতো সম্পদের দিক থেকে দরিদ্র দেশে একটি বাস্তব সমাধান। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি কনফারেন্সে এই বিষয়টি আমরা তুলব। আমরা চাই ডাক্তার ঘোষ ভারতে আমাদের এই নেটওয়ার্কের পরিচালকের দায়িত্ব নিন। বর্তমানে বাখম্যান বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তিন গুরুত্বপূর্ণ রোগ নিরাময় নিয়ে কার্যক্রমে একজন পরিচালকের ভূমিকায় রয়েছেন জেন বাখম্যান।

আরও পড়ুন: প্রয়াত প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হক, শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর

বিশ্বস্তরে এই প্রশংসার পরে বাংলার চিকিৎসকদের ভূমিকায় উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, এটা আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘বেঙ্গল মডেল’ বিশ্বের রোগ নিরাময়ের মডেল হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সম্প্রতি হাভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের (HMS) অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর জেন বাখম্যান (Gene Bukhman), যাঁকে নন-কমিউনিকেবল রোগের (NCD) একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাবে ধরা হয়, তিনি এসএসকেএম হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং দেশের প্রথম এই ধরনের রাজ্য-পরিচালিত উদ্যোগ হিসাবে প্রশংসা করেন। এই উদ্যোগের সঙ্গে জড়িত সকলকে আমার অভিনন্দন।

I am delighted to announce that ‘Bengal model’ to fight Type I diabetes – has become a global model to emulate.
Recently, Harvard Medical School Associate Professor Gene Bukhman, considered as an authority on non-communicable diseases, has visited our SSKM Hospital and…
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 2, 2025
–

–

–


