দিনহাটার সাবেক ছিটমহল পোয়াতুরকুঠি ও করলা এলাকায় গিয়ে এসআইআর (Summary Revision of Electoral Roll) নিয়ে বাসিন্দাদের বোঝালেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। সম্প্রতি এলাকায় এসআইআর এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে কিছুটা অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল। মঙ্গলবার যখন বিএলওরা ফর্ম হাতে সাবেক ছিটমহলে পৌঁছেছিলেন, তখন একাংশ বাসিন্দা ফর্ম পূরণে আপত্তি জানান।
বাসিন্দাদের অভিযোগ ছিল, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাদের নাম না থাকায় তারা ফর্ম পূরণে অনিশ্চয়তায় ছিলেন। কারণ, ২০১৫ সালের ৩১ জুলাই ভারত-বাংলাদেশের ছিটমহল বিনিময়ের পরই তাঁরা ভারতীয় নাগরিকত্ব পান। তাঁদের দাবি, নির্বাচন কমিশন আগে একটি স্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করুক, তারপরই তারা ফর্ম নেবেন।
এই পরিস্থিতিতে বুধবার দুপুরে মন্ত্রী উদয়ন গুহ ব্যক্তিগতভাবে পোয়াতুরকুঠি ও করলা এলাকায় যান। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তিনি তাঁদের উদ্বেগের বিষয়গুলি শোনেন এবং বোঝান যে এসআইআর ফর্ম নেওয়া তাঁদের নাগরিক অধিকারের অংশ। মন্ত্রী বলেন, “বিজেপি চাইছে আপনাদের নাম বাদ দিতে। তাই ফর্ম না নিয়ে ভুল করবেন না। সরকার আপনাদের পাশে আছে।”
মন্ত্রী আরও জানান, যেসব পরিবার এখনো ফর্ম নেননি, তাঁদের বাড়িতে বিএলওদের ডেকে এনে ফর্ম পূরণ করানো হবে। তিনি এলাকার তৃণমূল কর্মীদের নির্দেশ দেন যাতে প্রতিটি বাসিন্দা ফর্ম পান ও সঠিকভাবে জমা দিতে পারেন।
এদিকে, দিনহাটার মধ্য ও দক্ষিণ মশালডাঙা এলাকায় সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। সেখানে সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা এসআইআর প্রক্রিয়া ঘিরে উৎসবের মেজাজে। গ্রামবাসীরা পান-সুপারি ও মিষ্টি হাতে বিএলওদের অপেক্ষা করছেন। তাঁদের বক্তব্য, “২০১৫ সালে আমরা ভারতীয় হয়েছি, এবার প্রথমবার এসআইআর হচ্ছে—এটা আমাদের জন্য উৎসবের দিন।” উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ঐতিহাসিক ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে কোচবিহার জেলার মোট ৫১টি সাবেক ছিটমহল ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। সাত বছর পর এই প্রথম সেই ছিটমহল এলাকাগুলিতে এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা নিয়ে উচ্ছ্বাস ও আশার আলো দেখা যাচ্ছে স্থানীয়দের মুখে।
আরও পড়ুন – অবাধে কাজ করছে BLO-রা, কমিশনের ব্যাখ্যার পরেও কুৎসা! জবাব তৃণমূলের
_
_
_
_
_
