Wednesday, November 26, 2025

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

Date:

Share post:

সন্দীপ সুর

বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে রয়েছে গভীর বং কানেকশন। তিনি দীপ্তি শর্মা(Dipti Sharma)। বেশ কয়েক বছর বাংলা দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন, কলকাতায় ছিল তাঁর ঘর। ফলে বাংলার খাওয়া-দাওয়া থেকে সংস্কৃতি সবকিছুই আপন করে নিয়েছিলেন।

দীপ্তিকে বাংলায় আনার মূল কারিগর ছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ও জাতীয় নির্বাচক মিঠু মুখোপাধ্যায়। দীপ্তিকে নিয়ে অনেক অজানা কথা ভাগ করে নিলেন বিশ্ব বাংলা সংবাদের সঙ্গে। মূলত মিঠু মুখোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টাতেই বাংলার হয়ে খেলতে আসেন দীপ্তি কিন্তু ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটারের জন্য বিশেষ আতিথেয়তার ব্যবস্থা করতে হয়নি সিএবিকে সব ব্যবস্থাই করেছিলেন মিঠু নিজেই। আসলে কলকাতায় দীপ্তির অভিভাবক ছিলেন মিঠুই।

কুমারটুলিতে  নিজের ফ্ল্যাটেই দীপ্তিকে রেখেছিলেন মিঠু। কয়েক বছরে দীপ্তি হয়ে উঠেছিলেন ঘরের মেয়ে। খুব কাছ থেকে দেখেছেন দীপ্তিকে। মাঠে শুধু কঠোর পরিশ্রমই নয়, দীপ্তি শর্মার আগুনে পারফরম্যান্সেপ নেপথ্যে রয়েছে কঠোর শৃঙ্খলা অনুশাসন এবং অবশ্যই অনুশীলন। সেই সঙ্গে দীপ্তি অত্যন্ত ভক্তিবাদী একজন মানুষ। নিয়ম করে হনুমান চল্লিশা পড়েন।

কলকাতায় বেশ কয়েক বছর থাকার ফলে দীপ্তি ভালোভাবেই রপ্ত করেন বাংলা ভাষাকে। এমনকি মাঠে রিচার সঙ্গে বাংলাতেই কথা বলেন ভারতীয় দলের তারকা অলরাউন্ডার। কুমারটুলি ফ্ল্যাটে বসে অতীতের স্মৃতিতে বারবার ফিরে যাচ্ছিলেন মিঠু।

তাঁর কথায়, “আমি যেহেতু অফ স্পিনার ছিলাম তাই অফ স্পিনারদের প্রতি আমার একটা দুর্বলতা ছিল। প্রথমদিন থেকে দীপ্তিকে দেখে ভালো লেগেছিল। আমি সিএবি কর্তাদের বলেছিলাম তাঁকে দলে নেওয়ার জন্য, কিন্তু ভারতীয় দলের ক্রিকেটারের জন্য বিরাট ব্যবস্থা করতে হতো আমি সিএবিকে বলেছিলাম কোনো ব্যবস্থাই করতে হবে না। দীপ্তি আমার কাছেই থাকবে সেই মতোই দীপ্তিকে ফ্ল্যাটে রেখেছিলাম। আমাদের প্রায় ঘরের মেয়ে হয়ে উঠেছিল দীপ্তি। তারকা ক্রিকেটার বলে আলাদা কোন অহংকার ছিল না।প্রত্যেকদিন হনুমান চালিশা পড়ে ঘুমাতে যায়। এটাই হয়তো ওকে জোর জুগিয়েছে। ”

একইসঙ্গে মিঠু বলেন, “খুব দ্রুত বাংলার সংস্কার শিখে নিয়েছিল।আমরা কোথায়ও যাওয়ার আগে আসছি বলি , সেটা দীপ্তি করত। ও নিরামিষভোজী দীপ্তি, তাই আমিষ খাবার মুখে তোলে না। তবে বাংলা এসে বেগুন ভাজার স্বাদে মজে ছিল, ওটা ও খুব ভালোবাসত। প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে চারটে করে আলমন্ড খেত। নিজেকে ফিট রাখতে ডায়েটও মেনটেন করত।”

বাংলার পাচনের প্রতি দীপ্তির আছে অগাধ আস্থা। যেটা তাঁকে বানিয়ে দিত মিঠুর বোন সৌমা।  কোনও সমস্যা হলেই একটি বিশেষ পাচন বানিয়ে দিতেন সৌমা। তিনি বলেন, “কোন সমস্যা হলে সেই পাচন দীপ্তির লাগবেই দেশ বিদেশের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন সমস্যায় পড়লে সেই পাচন চাই। দীপ্তিকে সেটা বানানোর পদ্ধতি লিখে পাঠাতে হয়।”

বিশ্বকাপে দীপ্তির পারফরম্যান্স  প্রসঙ্গে মিঠু বলেন, “বিশ্বকাপের প্রতিটি  ম্যাচেই দীপ্তি নিজের অবদান রেখেছেন। শুধু ফাইনালে পাঁচ উইকেট নেওয়াই নয় অন্য সব ম্যাচেই তার অবদান রয়েছে। আসলে ছোট থেকেই ও নিজের বিষয়ে অত্যন্ত সচেতন। দল জিতুক বা হারুক নিজের পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন প্রতি ম্যাচই করে। তাই ও বর্তমানে বিসিসিআইয়ের এ গ্রেডে আছে সেটা শুধুমাত্র স্মৃতি এবং হরমনপ্রীতির সঙ্গে।”

spot_img

Related articles

ভেরিফিকেশন পর্ব শেষ: বৃহস্পতিবার শুরু এসএসি-র ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ডিসেম্বরের মধ্যে এসএসসি-তে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করতে সব পদক্ষেপই নিয়েছে রাজ্য শিক্ষা দফতর...

চুক্তিভঙ্গ, যাত্রাভঙ্গ: হেলিকপ্টার সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের

মুখ্যমন্ত্রীর মতুয়া গড়ে যাওয়া নির্দিষ্ট থাকলেও তাতে কী গুরুত্ব দেয়নি হেলিকপ্টার সংস্থা? শেষ মুহূর্তে তাদের বিমার সমস্যায় হেলিকপ্টারে...

কীভাবে SIR চক্রান্ত বাংলায়: বিজেপিকে তোপে বনগাঁ থেকে বোঝালেন মমতা

এসআইআরের নামে এনআরসি করার চক্রান্ত চলছে! এমনই তোপ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বনগাঁর জনসভা থেকে তিনি অভিযোগ করেন,...

মন্দিরবাজারের সভা থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ তৃণমূলের, শুভেন্দুকে কটাক্ষ সুদীপের

দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারে তৃণমূল কংগ্রেসের সভায় রবিবার জনস্রোত চোখে পড়ার মতো। সভার নেতৃত্বে ছিলেন তৃণমূলের মুখপাত্র সুদীপ...