বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের (Aligarh) মিঠু সিংয়ের জীবনে যেন সেটাই সত্যি হতে বসেছিল। অবশেষে ৫৫ বছর ধরে থানায় হাজিরা দেওয়ার পরে জানতে পারলেন তিনি দোষী নন। তাঁর মতো আরও ৫৭ সঙ্গী জানতে পারলেন তাঁরা দোষী নন। তবে ৯০ বছর বয়সে পৌঁছানোর আগেই মিঠু সিং যদি জীবন যুদ্ধে পরাজিত হতেন, তবে হয়তো নিজেকে নির্দোষ (not guilty) জানতেও পারতেন না।

ঘটনার সূত্রপাত ৫৫ বছর আগে। গ্রামীণ একটি ঝামেলায় আলিগড় থানায় (Aligarh police station) অভিযোগ দায়ের হয়। ব্রিটিশ আমলের ‘হ্যাবিচুয়াল অফেন্ডার’ (habitual offender) অর্থাৎ স্বভাব অপরাধীর মতোই খাতায় নাম ওঠে মিঠুসহ ৫৮ জনের। তখন মিঠু সিংয়ের বয়স ৩০-এর কোঠায়। সেই খাতায় একবার নাম উঠে যাওয়ার পরে একটিই রুটিন ছিল এই ৫৮ জনের। প্রতি মাসে একবার থানায় হাজিরা দেওয়া।

একবার অপরাধী (guilty) হিসাবে নাম উঠে যাওয়ার পরে পুলিশের কর্তব্য ছিল তাঁদের অপরাধের বিবেচনা করা। দুর্ভাগ্যবশত ৫৫ বছরে তা আর হয়ে ওঠেনি। সময় পেরিয়েছে। বয়স বেড়েছে। সকলেই হয়েছেন দেশের হিসাবে প্রবীণ নাগরিক (senior citizen)। কিন্তু অপরাধীর (offender) তকমা ঘোঁচেনি। বাস্তবে যদিও তাঁদের অপরাধের খাতা শেষবার ১৯৬২ সালে খুলেছিল।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশ (Uttarpradesh Police) ফের একবার আর যাচাই করে দেখেনি তারা আর ‘স্বভাব অপরাধী’ রয়ে গিয়েছেন কি না। তাই কেউ লাঠি, কেউ নাতি আবার কেউ বা পাশের পাঁচিলে ভর করে প্রতি মাসে হাজিরা দিতেন আলিগড় থানায়। তাই শেষ পর্যন্ত পুলিশ যখন তাঁদের জানালো তাঁরা আর অপরাধী নন, কার্যত তা বিশ্বাস করাই কঠিন হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: দিনে দুপুরে স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ! অসমে বাড়ছে ক্ষোভ

তবে ডিসেম্বর মাসে যে আর তাঁদের থানায় হাজিরা দিতে হবে না, একথায় বাস্তবে খুশি মিঠু ও তাঁর সঙ্গীরা। একদিকে মুক্তির আনন্দ। অন্যদিকে পরিবার, আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশীদের কাছে অপরাধী তকমা ঘুঁচে যাওয়ার আনন্দ। দেরিতে হলেও অবশেষে বিচার পেলেন ৯০ বছরের মিঠু ও তাঁর সঙ্গীরা।

–

–

–

–


