ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ, নজরুল বেঁচে নেই। নইলে বিজেপি রবীন্দ্রনাথকে রোহিঙ্গা ও নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত। শনিবার পুরুলিয়া শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে আয়োজিত জনসভা থেকে সরাসরি স্পষ্ট ভাষায় এই অভিযোগ তোলেন তৃণমূল কংগ্রেসের আইটি সেলের প্রধান দেবাংশু ভট্টাচার্য। পাশাপাশি বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, বাংলায় মহিলারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই ভোট দেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার গড়ে দিয়েছে মহিলাদের ঐক্য। বিজেপি এসআইআর করে সেই মহিলাদের নামই ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে চায়।

বিস্তৃত ব্যাখ্যা না দিলেও পুরুলিয়া-সহ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে কীভাবে এসআইআরকে হাতিয়ার করতে চাইছে বিজেপি, তা জানিয়ে দেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল সভাপতি রাজীবলোচন সরেন। তিনি বলেন, সীমান্তের জেলাগুলিতে সাধারণভাবেই প্রতিবেশী রাজ্যগুলি থেকে বহু মহিলা বধূ হিসাবে আসেন। এঁদের মধ্যে প্রায় লক্ষাধিক মহিলা ২০০২ সালের পরেই বধূ হয়ে এই জেলায় এসেছেন। ফলে তাঁদের নাম ২০০২-এর ভোটার তালিকায় নেই। এবার তাঁদের নথি আনতে হবে বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসম বা ত্রিপুরা থেকে। আর তা না আনতে পারলেই তালিকা থেকে বাদ! কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস সেটা হতে দেবে না। উপস্থিত জনতাও তাঁকে সমর্থন জানান। মাত্র দু’দিন আগে এই ট্যাক্সি স্ট্যান্ডেই এক সভায় বিজেপির পরিযায়ী নেতা মিঠুন চক্রবর্তী ভিত্তিহীন কুৎসা করে গিয়েছেন। তার পরেই শহরবাসীর চাপে মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিশে শনিবার সেখানেই সভা করল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রথম রাউন্ডে অর্থাৎ ভিড়েই তারা বিজেপিকে বলে বলে দশ গোল দেয় দেয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক সুশান্ত মাহাত, মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু, জেলা সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাত প্রমুখ। সেখানেই তথ্য দিয়ে বিজেপিকে তুলোধোনা করে দেবাংশু বলেন, পুরুলিয়ার মানুষকে প্রতারিত করেছে বিজেপি। এই জেলার জন্য তারা কিছুই করেনি। তিনি আরও বলেন, এসআইআরের উদ্দেশ্যই হল মানুষকে ব্যস্ত রাখা। নোটবন্দি থেকে এসআইআর, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে মানুষকে ব্যস্ত রাখছে ওরা। আর ফাঁকতালে জিনিসের দাম বাড়িয়ে চলেছে। এদিন তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি রাজ্যে সরকার গড়লে তাদের মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন? তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী তো বন্দোপাধ্যায় ছাড়া কেউ নন। ওদের তো কোনও মুখই নেই। লড়াই হবে কীভাবে!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করে তিনি বলেন, উনি মিথ্যাচার ছাড়া কিছু করেননি। মানুষ ইঞ্জেকশনকে ভয় পায়। স্যালাইন দেওয়ার সময় সেই সুচ ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরে বিঁধে থাকে। সেটা সইতে হয়। তেমনই মোদির স্যালাইন সুচ গেঁথে আছে মানুষের শরীরে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে বাংলা থেকে লড়াই করতে হবে। তিনি বলেন, ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ, নজরুল বেঁচে নেই। নইলে বিজেপি রবীন্দ্রনাথকে রোহিঙ্গা ও নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত। বিরোধী দলনেতা বলছেন রাজ্যে নাকি দেড় কোটি রোহিঙ্গা ঢুকেছে। অথচ গোটা বিশ্বে রোহিঙ্গার সংখ্যা মাত্র ১৭ লক্ষ। আসলে ওঁর মগজের তারগুলো আগেই কেটে গিয়েছে। তাই সব গুলিয়ে ফেলছেন।

আরও পড়ুন- টাকা পেয়েও কাজে দেরি! ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে কড়া প্রশাসন, রিপোর্ট চাইল নবান্ন

_

_

_

_

_
_

