পেশায় শ্রমিক। পেটের দায়ে তারা নানা জায়গায় ছোটেন। কাজের তাগিদে অন্যত্র গেলেই একশ্রেণির মিডিয়া চিৎকার করে ওঠে, ওই তো বাংলাদেশি। এসআইআর (SIR) আতঙ্কে পালিয়েছে বাংলাদেশে (Bangladesh)। শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) যে সুরে কথা বলছেন, তা-ই প্রতিধ্বনিত হচ্ছে একাংশ গণমাধ্যমে (media)। সংখ্যালঘু মুসলিমদের গায়ে সেঁটে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশি (Bangladeshi) তকমা। কিন্তু এসআইআরে শুধু মুসলিমরাই টার্গেট নয়, এটি দরিদ্র, দলিত, আদিবাসীদেরও অধিকার কেড়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র। বিজেপি নেতাদের পাশাপাশি একশ্রেণির মিডিয়ার এই মিথ্যাচারে ক্ষুব্ধ বাংলার জনতা। তারা জোট বাঁধছে, বিজেপিকে মোক্ষম জবাব দেবে সময় এলেই।

সম্প্রতি সল্টলেকের ঝুপড়িতে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। এক যুবককে সরু গলির মধ্য দিয়ে দৌড়াতে দেখা যায়, ক্যামেরা হাতে সাংবাদিকদের একটি দল তাঁকে ধাওয়া করে। যিনি দৌড়াচ্ছিলেন তাঁর নাম রফিকুল সর্দার। একজন দিনমজুর। তাঁর বাবা-মা এবং পরিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগর-১ ব্লকের দোসা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শ্যামনগর গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা। তাঁদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় (voter list) রয়েছে। জনৈক রফিকুলকে মিডিয়ার প্রশ্ন, তুমি বাংলাদেশি, তুমি এখানে কী করছো? দলে দলে মিডিয়ার প্রতিনিধিরা আসতে থাকে। আধার ও ভোটার আইডি দেখানোর পরেও তারা থামেনি। তারপরই তাঁদের হাত থেকে বাঁচার জন্য রফিকুল পালানোর চেষ্টা করেন। এরপরই গণমাধ্যমের (media) একাংশ বিকৃত করে সংবাদ পরিবেশন করে। রফিকুলকে ‘পলাতক বাংলাদেশি’ (Bangladeshi) তকমা দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বাধ্য হয়েই আইনের দ্বারস্থ হন রফিকুল।

আরও পড়ুন: SIR আতঙ্কে মৃত্যু: পরিবারের পাশে তৃণমূল নেতৃত্ব

এভাবেই গণমাধ্যমের একটি অংশ বিজেপির ঘৃণা ও বিভাজনের অ্যাজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এখানেই প্রশ্ন, গণমাধ্যম কর্মীদের কি নাগরিকের পরিচয়পত্র পরীক্ষা করার অথবা শুধুমাত্র চেহারা বা অর্থনৈতিক অবস্থার ভিত্তিতে কাউকে তাড়া করার অধিকার আছে? বিজেপি রাজ্যজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। তাঁদের বিভাজনের রাজনীতিতে ইতিমধ্যেই ২২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারী সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেন, এসআইআর (SIR) কার্যক্রম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ‘বাংলাদেশি’রা কলকাতার বস্তি থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। পরে সেই সংবাদ একটি গণমাধ্যম থেকে ডিলিট করে দেওয়া হয় এবং জানানো হয়, এটি ভুল সংবাদ (fake news)। কিন্তু বিজেপির নেতারা বাংলাদেশি তকমা চাপিয়ে দেওয়ার খেলা চালিয়েই যাচ্ছে। মানুষও জোট বাঁধছে তাদের গণতান্ত্রিক উপায়ে জবাব দিতে।

–

–

–

–

–

–


