মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ বলে অভিযুক্ত প্রাক্তন প্রধান লাভলি খাতুনকে ঘিরে ফের উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। এসআইআর চালু হওয়ার পর থেকেই অনুপ্রবেশ ইস্যুতে শাসক-বিরোধী তরজা তুঙ্গে। তার মধ্যেই লাভলির এ্যনুমারেশন ফর্ম আপলোড হওয়া নিয়ে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান লাভলির ফর্মটি ৫৩ নম্বর বুথে আপলোড ও ডিজিটাইজেশন করা হয়েছে। যদিও এর আগেই প্রশাসনিক তদন্তে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র জাল বলে উঠে আসে এবং বাতিল হয় তাঁর প্রধান পদ। অভিযোগ ছিল, বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে জাল নথির ভিত্তিতে ভারতীয় নাগরিক পরিচয় তৈরি করে ভোটে লড়ে জয়লাভ করেন তিনি।
বিতর্কের কেন্দ্রে এবার বুথের বিএলও মুজিবর রহমান। জানা গিয়েছে, তিনি লাভলির ভাসুর। তাঁর দাবি, পরিস্থিতির চাপে পড়েই লাভলির ফর্ম আপলোড করতে হয়েছিল। লাভলিই নাকি তাঁর বাড়িতে গিয়ে ফর্ম পূরণ করিয়ে নেন। বিএলও বিষয়টি ইতিমধ্যেই প্রশাসনকে জানিয়েছেন। ফলে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। লাভলি খাতুন অবশ্য এ বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
বছর দুয়েক আগে প্রথম চাঞ্চল্য ছড়ায় যখন অভিযোগ ওঠে—লাভলির আসল নাম নাসিয়া শেখ, বাড়ি বাংলাদেশের ভিতরেই। পাসপোর্ট ছাড়াই সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে নকল পরিচয় তৈরি করা, বাবার নাম বদলে সরকারি নথি বানানো—একাধিক অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১৫ সালে ভোটার কার্ড, ২০১৮ সালে জন্মসনদ—একটার পর একটা নথি নিয়েই প্রশ্ন তোলে অভিযোগকারীরা। কংগ্রেসের প্রতীকে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে ওবিসি মহিলা সংরক্ষিত আসনে প্রধান হন লাভলি। পরে তাঁকে পরাজিত প্রার্থী রাহেনা সুলতানা-সহ চারজন অভিযোগ করেন, তাঁর ওবিসি শংসাপত্র জাল। হাইকোর্টের নির্দেশে মহকুমা শাসক তদন্ত শুরু করলে লাভলির প্রধান পদ খারিজ হয়। তৎকালীন এসডিও শোকজ নোটিশ পাঠালেও লাভলির তরফে কোনও উত্তর না আসায় পদচ্যুতির নির্দেশ জারি হয়। সব মিলিয়ে, এসআইআর পর্ব চলাকালীন লাভলি খাতুনকে ঘিরে ফের বিতর্কের আগুন জ্বলেছে মালদহে। প্রশাসন ও রাজনৈতিক মহল—উভয় ক্ষেত্রেই তোলপাড় অবস্থা।
আরও পড়ুন- চাপে পড়তেই পিচ নিয়ে বেসুরো ভারত, পন্থের অধিনায়কত্ব নিয়েও উঠছে প্রশ্ন
_
_
_
_
_
_