রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পকে আরও শক্তিশালী করতে বিশ্বব্যাংক–সমর্থিত র্যাম্প (RAMP) প্রকল্পের আওতায় বিস্তৃত সমীক্ষা চালাতে চলেছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প ও বস্ত্র দফতর। গোটা রাজ্যের এমএসএমই ক্লাস্টারগুলির সমস্যা ও সম্ভাবনা সরেজমিনে যাচাই করে দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের ভিত্তি আরও মজবুত করা এবং শিল্পগুলির দক্ষতা, প্রযুক্তি ও বাজার সম্প্রসারণে সহায়তা করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য।

দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন সেক্টরে ছড়িয়ে থাকা ক্ষুদ্র শিল্প ইউনিটগুলির বাস্তব সমস্যা বোঝার জন্য একাধিক সংস্থাকে সমীক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা উদ্যোক্তাদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করবে, ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশনে অংশ নেবে, শিল্প ইউনিট পরিদর্শন করবে এবং জেলা শিল্প কেন্দ্র ও শিল্প সংগঠনগুলির সঙ্গে পরামর্শ করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করবে। এই সমীক্ষা তিনটি জ়োনে ভাগ করে করা হবে—জ়োন ১–এ পড়ছে কলকাতা ও আশেপাশের চামড়া শিল্প ক্লাস্টারগুলি, আর জ়োন ২ ও ৩–এ প্লাস্টিক ও কেমিক্যাল, হস্তশিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং গুডস, জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি, টেক্সটাইল এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য শিল্প অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

সমীক্ষা পর্বের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ মডিউলের খসড়াও প্রস্তুত করেছে দফতর। সরকারি প্রকল্পের জ্ঞান, ONDC নেটওয়ার্কে এমএসএমই–কে যুক্ত করা, আর্থিক সাক্ষরতা, জিএসটি–র ওপর প্রশিক্ষণ, ডিজিটাল মার্কেটিং, ই–কমার্স সক্ষমতা, রপ্তানি প্রস্তুতি থেকে শুরু করে পণ্য উন্নয়ন, আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তি ও পরিবেশ–সহায়ক টেকসই শিল্পচর্চা—সবই রাখা হয়েছে সম্ভাব্য তালিকায়। তবে চূড়ান্ত বিষয়বস্তু নির্ভর করবে সমীক্ষায় উঠে আসা প্রয়োজনের ওপর।

নির্বাচিত সংস্থাগুলিকে প্রতিটি অন্তত ৫০টি প্রশিক্ষণ সেশন পরিচালনার নির্দেশ রয়েছে, প্রতি সেশনে অংশ নেবেন ন্যূনতম ৫০ জন উদ্যোক্তা বা কর্মী। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখা, বহু–ভাষিক সহায়তা এবং প্রশিক্ষণ–পরবর্তী প্রতিক্রিয়া সংগ্রহের দায়িত্বও তাদেরই। দফতর জানিয়েছে, সমীক্ষা থেকে প্রশিক্ষণ শুরু—সমগ্র প্রক্রিয়া চার মাসে সম্পূর্ণ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের দাবি, এই উদ্যোগে রাজ্যের ক্ষুদ্র শিল্প খাত আরও প্রতিযোগিতামূলক হবে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে উৎসাহ বাড়বে এবং দেশ–বিদেশে বাজারের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে চামড়া, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, হস্তশিল্প, টেক্সটাইল–সহ এমএসএমই খাতে রাজ্যের উন্নয়নের ধারা আরও গতি পাবে বলেই আশাবাদী দফতর।

আরও পড়ুন – নির্বাচনের আগে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতি: নেতৃত্বকে ১০০ শতাংশ ফর্ম জমার টার্গেট দিলেন অভিষেক

_

_

_

_

_
_

