বিহার নির্বাচনের অজুহাত দিয়ে বিরোধী দলগুলির মুখবন্ধ করার পন্থা যে স্বৈরাচারী মোদি সরকার বরাবর নিয়ে আসে, তার ব্যতিক্রম যে শীতকালীন অধিবেশনে হচ্ছে না, অধিবেশনের শুরুর বক্তব্যেই স্পষ্ট করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। সংসদ চত্বরে স্লোগান (sloganing) বন্ধের পথে যে এখনও বিজেপির সরকার নিজেদের জেদ বজায় রাখবে, সেই আভাস যেমন দিলেন মোদি। তেমনই বিরোধীদের বিরোধিতাকে পরাজিতের হতাশা বলে কটাক্ষ করে কণ্ঠরোধের আভাস দিয়ে রাখলেন অধিবেশনের (winter session) শুরুতে।
শীতকালীন অধিবেশনের আগে রবিবার সর্বদল বৈঠকে (all party meeting) বিরোধীরা স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন বিরোধী (opposition) সাংসদদের নিজেদের কথা বলার সময় দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে সব বিরোধীদলই এসআইআর নিয়ে আলোচনার দাবি জানান। সোমবার অধিবেশন শুরুর আগেই সেই আলোচনা সংসদে (Parliament) হবে কি না, তা জানানোর দাবি জানিয়েছিলেন বিরোধী সাংসদরা। কিন্তু সোমবার সেই দাবিতে কোনও সাড়া দেয়নি কেন্দ্রের সরকার।
বিরোধীরা যেখানে বর্তমানে দেশের সবথেকে জ্বলন্ত ইস্যু এসআইআর (SIR) নিয়ে আলোচনার দাবি জানায়, সেখানে সেই দাবিকেই বিরোধীদের হতাশার বহিঃপ্রকাশ বলে দাবি করেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি দাবি করেন, শীতকালীন অধিবেশন যেন বিহার নির্বাচনের পরে হারের হতাশার বহিঃপ্রকাশ না হয়। অধিবেশনের আগে যে সব বক্তব্য শুনেছি, তাতে বুঝেছি বিরোধীরা এখনও হারের হতাশা থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। তবে সংসদ পরাজয়ের গ্লানি প্রকাশ বা জয়ের অহংকার প্রকাশের জায়গা নয়।
বাস্তবে বিরোধীরা সাধারণ মানুষের যে দাবি নিয়ে সংসদে বক্তব্য পেশের পরিকল্পনা করেছেন, তাকে হতাশার বহিঃপ্রকাশ বলে কণ্ঠরোধের চেষ্টা অধিবেশনের আগে স্পষ্ট করে দিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই সঙ্গে সংসদ চত্বরে ‘বন্দোমাতরম’, ‘জয় হিন্দ’ স্লোগান দেওয়া বন্ধ করা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেও পিছু হটেছিল মোদি সরকার। কিন্তু পিছু হটতে বাধ্য হলেও তা যে কোনও প্রকারে যে লাগু করতে তৎপর থাকবে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী সরকার, তাও স্পষ্ট করলেন মোদি। তিনি জানালেন, নাটক করার জায়গা অনেক আছে। এখানে নাটকের নয়, কাজ করার জায়গা। স্লোগান (sloganing) দেওয়ার জন্য গোটা দেশ পড়ে রয়েছে। এখানে স্লোগান চলবে না।
আরও পড়ুন : সংসদে SIR আলোচনা: শীতকালীন অধিবেশনের আগেই দিল্লিতে চড়ল পারদ
রবিবারের বৈঠকের শেষে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (Kalyan Bandyopadhyay) স্পষ্ট দাবি করেছিলেন সংসদে বিরোধী সাংসদদের বক্তব্য পেশের জন্য বেশি সময় বরাদ্দ করতে হবে। সেই সঙ্গে আলোচনার বিষয়বস্তু আগে থেকে জানাতে হবে। অন্যতম বিরোধী তৃণমূলের এই দাবিতে যে কান দিচ্ছে না মোদি সরকার, তা স্পষ্ট করলেন নরেন্দ্র মোদি। সোমবার তিনি জানান, সংসদে নতুন ও যুব সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করা সাংসদদের আরও বেশি বলার সুযোগ করে দিতে হবে। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত তাদের বলার সুযোগ করে দেওয়া।
–
–
–
–
–