“সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। ওয়াকফ নিয়ে আমরা কিছু করিনি, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমরা বিধানসভায় আইন পাশ করেছিলাম, জোর করে অবৈধভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া যাবে না।” বৃহস্পতিবার বহরমপুর স্টেডিয়াম থেকেই ওয়াকফ আইন নিয়ে সতর্ক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বলেন, অনেকে গুজব ছড়াচ্ছেন। তাতে কান দেবেন না।
এদিন সভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বলেন, “বিজেপি আমাকে হিন্দুত্ব শেখাবে না। আমি হিন্দুত্ব জানি। আমরা জগন্নাথধাম করেছি। দক্ষিণেশ্বরে স্কাইওয়াক আমরাই করেছি। রাজ্যে মহাকাল মন্দির হচ্ছে। দুর্গা অঙ্গন তৈরি করছি। কোনটা করিনি? তোমরা কী করেছো? একচোখা, একপক্ষ… তোমাদের ধর্মের মূল কথা হলো, আসল ধর্মকে ভুলিয়ে দাও।”
এর পরেই ওয়াকফ (Waqf Act) বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে কিছু দুষ্কৃতী গুজব রটাচ্ছে, রাজ্য সরকার ধর্মীয় স্থানগুলো সরকারি সম্পত্তি হিসাবে নথিভুক্ত করছে। মিথ্যে কথা। সব ধর্মেই কিছু গদ্দার থাকে, যারা বিজেপির টাকা খেয়ে মিথ্যা প্রচার করে। মনে রাখবেন এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বেরিয়ে গিয়েছে। আমার মুখে অন্যের কথা বসানো হচ্ছে। ওদের অনেক টাকা, নোটবন্দির টাকা, চুরির টাকা.. সব টাকা দিয়ে বিদেশে গিয়ে একটা করে মালা পরে আসছে! অথচ মানুষের জন্য টাকা নেই। করে লুট, আর বলে ঝুট!”
কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ২০২৪ সালে অগাস্টে সংসদের ওয়াকফ সংশোধনী বিল (Waqf Act) পেশ করেছিলেন । সেই বিলের একাধিক ধারা নিয়ে আপত্তি তোলে তৃণমূল-সহ বিরোধীরা। ওয়াকফের বিরোধিতার পর তথ্যের বিবরণ আপলোড করা নিয়ে আপত্তি করেছেন বিরোধীরা। মুখ্যমন্ত্রীর জানান, “কোনও কোনও সাম্প্রদায়িক শক্তি ধর্ম নিয়ে বিভেদ করছে। তাদের বলি ওয়াকফ প্রোপার্টি কেন্দ্র সরকার আইন করেছে বিজেপি। আমরা করিনি। আমরা বারণ করেছি। আমরা যতদিন আছি, কোথায় কোনও ধর্মস্থানে হাত দিতে দেব না। বিজেপির কাছে হিন্দুত্ব শিখব না। কারণ আমরাও হিন্দুত্ব জানি। কালী মন্দির থেকে কনকালী তোল সব করেছি। তোমরা মানুষকে শোষণ কর।”
মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, “সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে। ওয়াকফ নিয়ে আমরা কিছু করিনি, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমরা বিধানসভায় আইন পাশ করেছিলাম, জোর করে অবৈধভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া যাবে না। তবে নতুন যে পোর্টাল করেছি, এখন যে পোর্টাল করেছি সেটা WMC পোর্টাল। এবং UMWD এর পার্থক হল আপলোড প্রক্রিয়া। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। আগে আপলোড করত ওয়াকফ বোর্ড। এখন আপলোড করত মতুয়ালিরা। এরা কাদের লোক? কোন সম্প্রদায়ের লোক?আমরা সুপ্রিম কোর্টে কেস করেছি। মতুয়ালিরা আপলোড করবে, করে রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ডকে দেবে। তাই নিশ্চিন্তে থাকুন। কারও সম্পত্তি কেউ দখল করবে না। কারও কথায় কান দেবেন না। যা বলছি এখানে দাঁড়িয়ে বলছি। আপনাদের নিরাপত্তা আমাদের দায়িত্ব। কারও সম্পত্তি কেউ বেদখল করবে না। মিথ্যা প্রচারে কাজ হবে না।”
আরও খবর: বিজেপিকে শূন্য করে দিন: SIR থেকে পুশব্যাক- মোদি সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ মমতার
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমি জগন্নাথ ধামও যেমন করি, আমি তেমন মুসলিম বেরিয়াল গ্রাউন্ডেও কবরস্থান করি। পুরহিতদের পাশাপাশি মোয়াজ্জেমদের ভাতা দিই। আমি লোকশিল্পীদেরও দিই। কাজেই একাজ আমরা করেছি,করব।”
–
–
–
–
