দুদিনের সফরে ভারতে পা রেখেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় প্রোটোকল ভেঙে তাঁকে বিমানবন্দরে গিয়ে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। বন্ধু পুতিনকে এক বিশেষ উপহার দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। লোক কল্যাণ মার্গে বৈঠকের সময় রুশ ভাষায় প্রকাশিত শ্রীমদ্ভগবদ্ গীতা (Russian Gita) উপহার দেন তিনি। পরে সোশ্যাল মাধ্যমে সেই ছবি শেয়ার করে নরেন্দ্র মোদি লেখেন – গীতা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রেরণা দেয়।
কড়া নিয়ম ভেঙে নিজের সঙ্গে আনা অরাস সেনেটে না চড়ে নরেন্দ্র মোদির ফরচুনা গাড়িতেই বিমানবন্দর থেকে রওনা দেন পুতিন। গত সেপ্টেম্বরে চিনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের অরাস সেনেটে সওয়ার হয়েছিলেন মোদি। ২ দিনের ভারত সফরে প্রতিরক্ষা-সহ একাধিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে একেবারে ছক ভাঙা হৃদ্যতা প্রকাশ পেয়েছে মোদি-পুতিন সম্পর্কে। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের বাড়িতে নৈশভোজের জন্য পুতিনকে স্বাগত জানান মোদি। বিশেষ করে পুতিনকে গীতা উপহার দেওয়াটা অত্যন্ত নজরকাড়া।
রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনার মাধ্যমে পুতিনের (Vladimir Putin) সরকারি কর্মসূচি শুরু। বেলা ১১টা নাগাদ তিনি যাবেন রাষ্ট্রপতি ভবনে। সাক্ষাৎ করবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে। তারপর বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ রাজঘাটে (Rajghat) গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাবেন তিনি। এর পর হায়দরাবাদ হাউসে (Hyderabad House) হবে ২৩তম ভারত–রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ বৈঠক। সেখানেই দুই দেশের প্রতিনিধিদলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও মধ্যাহ্নভোজ। প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, ভূ-কৌশল – সব ক্ষেত্রেই আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।
ভারত-রুশ জ্বালানি সম্পর্ক নিয়েও এই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের অছিলায় রাশিয়া থেকে তেল কেনার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখায় অধিকাংশ ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) শুল্কও আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবশ্য রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম আমদানি অব্যাহত রেখেছে আমেরিকা। রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা নিয়ে মার্কিন ট্রাম্পের পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়ে ভারত সফরের আগেই প্রশ্ন তোলেন পুতিন। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে পুতিন বলেন, “যদি আমেরিকা আমাদের কাছ থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তা হলে ভারত এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে কেন?” পুতিন বলেন, “আমেরিকা তাদের পরমাণুকেন্দ্রগুলির জন্য আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে।” আমেরিকার রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনার অধিকার থাকলে, ভারতের কেন থাকবে না- প্রশ্ন তোলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “ভারত দারুণ দেশ। ভারতের অর্থনীতি ৭.৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বের একটি বড় সাফল্য।”
–
–
–
–
–
