এক সপ্তাহ বাড়ানোয় কমিশনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হতে এখন বাকি এক সপ্তাহ। মঙ্গলবার পর্যন্ত বাংলায় ইনিউমারেশন ফর্ম (enumeration form) সংগ্রহ কিছুটা বাকি রয়েছে। ডিজিটাউজেশনের (digitisation) কাজও ০.২৫ শতাংশ বাকি রয়েছে। অল্প সময়ে এই সুদীর্ঘ পথ বিএলও-দের (BLO) ঘাড়ে বন্দুক রেখেই পার করেছে নির্বাচন কমিশন। এরপর বিএলও-দের মৃত্যু বা অসুস্থতার পরে পিঠটানও দিয়েছে কমিশন। মঙ্গলবার বিএলও-দের দায়িত্ব কেন্দ্রের সরকার (Central Government) ও কমিশনের (Election Commission) উপরই দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। কমিশনের কাছে একই দাবি নিয়ে মঙ্গলবার সরব বাংলার বিএলও-রা। হাসপাতালে ভর্তি কাকদ্বীপের (Kakdwip) বিএলও-কে নিয়েই তাঁর পরিবার কমিশন দফতরে সিইও-র (CEO) কর্তব্য মনে করাতে হাজির। বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও স্পষ্ট করে দেয়, বিএলও-দের দায়িত্ব কমিশনের, কেন্দ্রের।
ফ্রেজারগঞ্জের বিএলও দেবাশিস দাস প্রায় ১৫ দিন আগে এসআইআর-এর (SIR) কাজ চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক জানান তিনি ব্রেন স্ট্রোকে (brain stroke) আক্রান্ত। এরপর নামখানা হাসপাতাল হয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) ভর্তি করা হয় তাঁকে। মঙ্গলবার তাঁকে হাসপাতাল থেকে ফিজিওথেরাপির জন্য ছাড়া হলে তাঁর পরিবার তাঁকে কলকাতার সিইও দফতরের বাইরে আন্দোলনের মঞ্চে নিয়ে আসে। পরিবারের দাবি, তাঁরা অসুস্থ বিএলও-কে তাঁর পদ থেকে অব্যহতি দিতে হবে। তিনি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পরেও কমিশন কৈফিয়ৎ চাইছে কেন তিনি কাজ করছেন। অথচ তাঁরা কখনই খোঁজ নেননি দেবাশিস দাস কেমন আছেন। উপরন্তু কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পঙ্গু হয়ে যাওয়া বিএলও-র (BLO) উপর কাজের চাপ দিচ্ছেন। তাই এই অসুস্থতার দায়ভার কমিশনের (Election Commission) উপরই চাপাতে চায় তাঁর পরিবার।
গত দুই সপ্তাহ ধরে সিইও দফতরের বাইরে এই ধরনের দাবিতেই অবস্থানে বসেছে বিএলও অধিকার রক্ষা মঞ্চ। এসআইআর প্রক্রিয়া চলাকালীন বিএলও-দের যে ক্ষতি হয়েছে, সব দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে, সেই দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে মৃত ও অসুস্থ বিএলও-দের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার দাবিও জানানো হয়। দিল্লি থেকে কমিশনের ভার্চুয়াল বৈঠকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে আলোচনা হয়েছে গত সপ্তাহে। অথচ তা নিয়ে আজও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি কমিশন। দেবাশিস দাসের পরিবারও মঙ্গলবার সেই একই দাবি জানায় কমিশনে মঙ্গলবার। সিইও-র সঙ্গে তাঁদের দেখা না হলেও তাঁরা দাবি পত্র জমা দিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন : বিএলওদের সুরক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্র- কমিশনের, SIR মামলার শুনানিতে জানালো সুপ্রিম কোর্ট
ঠিক একই কথা মঙ্গলবার দেশের শীর্ষ আদালত জানিয়েছে। বিএলও-দের দায়িত্ব কেন্দ্রের সরকার ও নির্বাচন কমিশনে, এমনটাই সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে জানানো হয়। সুপ্রিম নির্দেশের পরে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষও একইভাবে কমিশনের দায়িত্ব মনে করিয়ে দেন। তিনি জানান, বিএলও-দের নিরাপত্তার অভাব এরাজ্যে ঘটেনি। কাজের চাপ, কমিশনের হুমকির মুখে তাঁরা শারীরিক সংকটে। এই দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার, নির্বাচন কমিশনের। অন্য রাজ্যেও বিএলও মৃত্যু হয়েছে। কমিশন তাঁদের যথাযথ ফর্ম দেয়নি। নেট ঠিক নেই, অ্যাপ ঠিক নেই। কথায় কথায় বিজেপি নেতারা বলছেন, গ্রেফতার করিয়ে দেব। বিহারের মতো করিয়ে দেব। আমাদের রাজ্যে আইনশৃঙ্খল জনিত কোনও সমস্যা তৈরি হয়নি। সেই দিক থেকেই সুপ্রিম কোর্ট তাঁদের পর্যবেক্ষণে মূল বক্তব্য বলতে চেয়েছে, বিএলও-দের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের।
–
–
–
–
–
