এ যেন রিয়েল লাইফ কৃষ্ণ ভক্ত মীরার গল্প। কৃষ্ণ প্রেমে বিভোর আর অবশেষে তাঁর মূর্তিতেই মালা দিলেন উত্তরপ্রদেশের মহিলা। উত্তরপ্রদেশের বাদাউন জেলায় ২৮ বছর বয়সী পিঙ্কি শর্মা (Pinki Sharma) ঐতিহ্যবাহী হিন্দু রীতি মেনেই ভগবান কৃষ্ণের একটি মূর্তির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। শনিবার পিঙ্কি বিবাহের সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি শ্রীকৃষ্ণের মূর্তিকে কোলে ধারণ করেন। পরের দিন রীতি অনুযায়ী তাঁর বিদায় অনুষ্ঠানটিও সম্পন্ন হয়।
এই বিয়ের অনুষ্ঠানে গোটা গ্রাম তাঁর পরিবারের ভূমিকা পালন করার জন্য একত্রিত হয়েছিল। তাঁর স্বামীর ভাই ইন্দ্রেশ শর্মা, প্রতীকীভাবে ভগবান কৃষ্ণের পক্ষ থেকে ‘বড়কর্তা’ হয়েছিলেন এই বিবাহ অভিযানে। এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পিঙ্কি জানান এটা তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি তাঁর জীবনে ঈশ্বরের সংকেত বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি তিন মাস আগে বৃন্দাবনের বাঁকে বিহারী মন্দির পরিদর্শনের সময় প্রসাদ হিসাবে একটি সোনার আংটি পেয়েছিলেন। তিনি আংটিটিকে দেবতার কাছ থেকে বিবাহের একটি বার্তা হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি বলেন, সেই মুহূর্ত থেকে তাঁর ভক্তি আরও গভীর রূপ নেয়। এখন তাঁর একমাত্র ইচ্ছা হল বৃন্দাবনে বসবাস করা, পূজা, ধ্যান এবং কৃষ্ণ সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করা। জানিয়ে দিলেন তিনি নিজের জীবিকা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত নন, কারণ তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে ভগবান কৃষ্ণ তাঁর সবকিছুর যত্ন নেবেন।
পিঙ্কির পরিবার প্রথমে তাঁর এই সিদ্ধান্তে রীতিমত হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তার বাবা সুরেশ চন্দ্র শর্মা বলেছিলেন যে তারা বছরের পর বছর ধরে একজন উপযুক্ত পাত্রের সন্ধান করছিলেন, কিন্তু পিঙ্কি সবসময় বলতেন ভগবান কৃষ্ণর ইচ্ছা মতোই সবকিছু হবে। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ছিল অলৌকিক কিছু ঘটবেই। সোনার আংটির ঘটনা দেখার পর পরিবার অবশেষে তাঁকে সমর্থন করতে রাজি হয়। এরপর বিয়ের দশ দিন আগে বৃন্দাবনে গিয়ে প্রতিমাটি তাঁরা বাড়িতে নিয়ে আসে।বিবাহ অনুষ্ঠানের পণ্ডিত রামশঙ্কর মিশ্র (Priest Ramashankar Mishra) জানিয়েছেন যে আধ্যাত্মিকতার সাথেই গোটা বিবাহ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছিল। পিঙ্কি এখন তার দেওরের বাড়িতে থাকেন, যা প্রতীকীভাবে কৃষ্ণের পরিবার হিসাবে বিবেচিত হয়। গ্রামবাসীরা তাঁকে অত্যন্ত স্নেহের সাথে “মীরা” বলে ডাকতে শুরু করেছে।
–
–
–
–
–
–
–
