বাংলাসহ ১২ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বৃহস্পতিবার রাতেই শেষ হল ইনিউমারেশন ডিজিটাইজেশনের প্রক্রিয়া। বাংলার খসড়া তালিকা নির্ধারিত ১৬ ডিসেম্বরই প্রকাশিত হবে। অথচ ছয় রাজ্যে সেই সময়সীমা বাড়ালো নির্বাচন কমিশন। ডিজিটাইজেশন (digitisation) প্রক্রিয়া শেষ হতেই নির্বাচনের তৎপরতা শুরু কমিশনের। বৃহস্পতিবারই কমিশনের দফতরে রাজ্যের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে কমিশন। সেই সঙ্গে দিল্লির কমিশনের চাপে বহুতল আবাসনে (housing complex) নির্বাচনী বুথ তৈরির তৎপরতাও শুরু হয়।
সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুসারে, রাজ্যে ৯৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ ভোটারের এনিউমারেশন ফর্ম (enumeration form) ইতিমধ্যেই ডিজিটাইজ (digitise) করা হয়েছে। অনুপস্থিত, মৃত, স্থানান্তরিত বা একাধিক জায়গায় তালিকাভুক্ত ভোটারের সংখ্যা ৫৮ লক্ষের বেশি বলে জানানো হয়েছে। এদিন রাত বারোটার পর থেকে বি.এল.ও অ্যাপের (blo app) মাধ্যমে আর কোনও নতুন ফর্ম (enumeration form) আপলোড বা সংশোধন করা যাবে না, তবে জমা পড়া তথ্য যাচাইয়ের কাজ অব্যাহত থাকবে।যোগ্য ভোটারের নাম যাতে বাদ না যায় এবং অযোগ্য ভোটারের নাম যাতে তালিকায় না থাকে, সেই লক্ষ্যকেই সামনে রেখে এই বিস্তৃত আয়োজন চলছে বলে জানিয়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর।
কমিশনের নির্দেশ সত্ত্বেও পরপর দুইবার হাইরাইজ আবাসনে বুথ স্থাপনে ব্যর্থ হওয়ার পর কমিশন। বৃহস্পতিবার সিইও জানান, রাজ্যের সব জেলা নির্বাচনী আধিকারিকের কাছ থেকে হাইরাইজ আবাসনের বিস্তারিত তালিকা চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কোথায় কতগুলি হাইরাইজ আবাসন রয়েছে — তার পূর্ণ তালিকা এবার নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো হবে। সেই তালিকা খতিয়ে দেখেই কমিশন নিজের ক্ষমতাবলে আবাসনগুলিতে বুথ তৈরির নির্দেশ জারি করবে।
সিইও মনোজকুমার আগরওয়াল বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের কাছ থেকে প্রাক্-নির্বাচনী তথ্য সংগ্রহ করেন। সিইও দফতর (CEO office) সূত্রে জানানো হয়েছে, এটি রুটিন সমন্বয় বৈঠক হলেও আসন্ন ভোটের প্রেক্ষিতে মাঠপর্যায়ের পরিস্থিতির আগাম মূল্যায়ন করতেই এদিন বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে রাজ্য পুলিশের ডিজি, কলকাতা পুলিশের কমিশনার, বিএসএফ, এসএসবি, সিআইএসএফ এবং আরপিএফ-এর উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পাশাপাশি ডাকা হয়েছিল কলকাতা ইডি দফতরের বিশেষ ডিরেক্টরকেও।
আরও পড়ুন : ফলতায় এসআইআর পর্যালোচনায় গিয়ে বিক্ষোভের মুখে নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিদল
অন্যদিকে বৃহস্পতিবারই কৃষ্ণনগরের জনসভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister) জানান তিনি এখনও নিজের ফর্ম জমা করেননি। ফলে জল্পনা শুরু হয় মুখ্যমন্ত্রীর ফর্ম জমা পড়বে কিনা। বা তা না জমা দিলে তাঁর নাম খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে কিনা। তবে এ ব্যাপারে অবশ্য সংশয়ের কোন অবকাশ নেই বলে জানিয়েছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এর দপ্তর। কমিশনের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, বিচার বিভাগের সদস্য, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, ঘোষিত সরকারি পদে থাকা ব্যক্তিত্ব, এবং শিল্প–সংস্কৃতি–সাংবাদিকতা–ক্রীড়া ও জনসেবার ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম, যাঁরা আগেই ভোটার ডেটাবেসে চিহ্নিত, তাঁদের সকলের নামই খসড়া ভোটার তালিকায় রাখা হবে। তবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় নাম রাখার ক্ষেত্রে অন্য সকলের মতো এঁদেরও নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। কমিশন চিহ্নিত ১৪টি নথির যেকোনও একটি নথি জমা দিলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
–
–
–
–
