“ভারত যেদিন থেকে স্বাধীন হয়েছে তারপর থেকে সবথেকে ব্যর্থতম এবং অপদার্থতম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ”। দিল্লি যাওয়ার আগে মঙ্গলবার দমদম বিমানবন্দর থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে (Amit Shah) তীব্র কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর সাফ কথা, “চিত্রনাট্য ৫ বছর ধরে দেখছি। বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ বলেছেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘুষপেটিয়া এবং পাকিস্তানি। ২ মাস আগে জগন্নাথ সরকার বলেছেন, বিজেপি যদি বাংলায় ক্ষমতায় আসে তাহলে বর্ডার বলে আর কিছু থাকবে না।”

অনন্ত মহারাজ ও জগন্নাথ সরকারকে (Jagannath Sarkar) নিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের প্রশ্ন, “স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন? কী শাস্তি দিয়েছেন?” এরপর আরও তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, “বাংলার সীমান্ত কে পাহারা দেয়? বিএসএফ। কার অধীনে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। দিল্লি বা জম্মু-কাশ্মীরের আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব কার? কেন্দ্রের। দায়িত্বে কে? অমিত শাহ। স্বাধীনোত্তর ভারতের ব্যর্থতম এবং অপদার্থতম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম অমিত শাহ। বাংলায় যদি অনুপ্রবেশ হয়ে থাকে তাহলে আপনি সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাহলে তো আপনার আগে পদত্যাগ করা উচিত।”

অভিষেক (Abhishek Banerjee) প্রশ্ন তুলেছেন, “বিহার নির্বাচনের ৪ দিন আগে দিল্লিতে বিস্ফোরণ হয়েছে, এর দায় কার? পহেলগামে ৪ জঙ্গি ২৬ জনকে দিনের আলোতে মেরেছিল এর দায় কে নেবে? ভারত যেদিন থেকে স্বাধীন হয়েছে তারপর থেকে সবথেকে ব্যর্থতম এবং অপদার্থতম স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।”
অভিষেকের অভিযোগ, “যদি কেউ বাংলায় কথা বলে তাহলে তাঁকে ধরে নিয়ে যাও, ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢোকাও বলেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তাঁর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?”

বুধবার, এসআইআর নিয়ে দিল্লিতে নিবার্চন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করবেন অভিষেক। ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন তিন। দিল্লি যাওয়ার আগে মতুয়া প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “ভারতীয় জনতা পার্টির মন্ত্রী বলছেন ১ লক্ষ মতুয়াদের নাম যদি বাদ যায় যাবে! দুর্নীতি বন্ধ করার কথা বলছে, আর সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজকে পাশে বসিয়ে প্রেস কনফারেন্স করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যাকে ক্যামেরায় ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী বাংলাকে বারবার অপমান করেছে। তার সঙ্গে প্রেস কনফারেন্স করে বাংলায় আসছেন। যারা রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিমচন্দ্র, স্বামীজিকে অপমান করেন, বাংলার ইতিহাস জানেন না, তাঁদের কাছে বাংলার জন্য মায়াকান্নার কথা শুনতে হবে? এসআইআরে ওদের জন্য ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যারা মারা গিয়েছেন, তারা অনুপ্রবেশকারী? কমিশন কেন এখনও বলছে না, এদের মধ্যে ক’জন রোহিঙ্গা ক’জন বাংলাদেশি? যাদের জন্য অনুপ্রবেশ হচ্ছে সেই আইবি চিফ তপন কুমার ডেকার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে কোন কারণে? কী লুকোতে চাইছেন?”

অভিষেকের কথায়, “আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বলেছেন রবীন্দ্রনাথ সান্যাল। রবি ঠাকুরের জন্মস্থান জানে না। এদের নেতারা মা দুর্গার বংশপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে, স্বামী বিবেকানন্দকে বামপন্থী প্রোডাক্ট বলে, তাদেরকেই শাহ পাশে বসিয়ে প্রেস কনফারেন্স করে বলেন সোনার বাংলা তৈরি করব। এই হচ্ছে বিজেপির প্রকৃত স্বরূপ। বিজেপির সম্পর্কে যত কম বলা যায় তত ভালো।”
আরও খবর: রবীন্দ্রনাথ সান্যাল! অমিত শাহের অজ্ঞতাকে ধুয়ে দিল তৃণমূল

শাহকে আরও তীব্র আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, “বাংলায় এসেছেন বাংলার শীত উপভোগ করুন বাংলার রসগোল্লা খান। এমনিই বাংলার মানুষ লাড্ডু দেবে ২-৩ মাস পরে। বাংলার আলুপোস্ত ভাত খান। বাংলার হাওয়া ভালো একিউআই ভালো। দিল্লির থেকে ভালো। আপনি বাংলায় নিঃশ্বাস প্রশ্বাস ভালো করে নিন প্রাণায়াম করুন। শুধু নির্বাচনের আগে নয়, প্রতিমাসে বাংলায় আসুন বাংলার মানুষের কথা শুনুন, বাংলার মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করুন।”

–

–

–


