রবিবার 16 ই ফেব্রুয়ারি 2020 তারিখে কলকাতার অ্যাক্রপলিস মল এ হিন্দিভাষী কর্মচারীদের দ্বারা অপমান এবং পরবর্তীতে শারীরিক নিগ্রহের শিকার হন বলে ঐদিন রাতে একটি ফেসবুক লাইভ ভিডিওর মাধ্যমে জানান মুর্শিদাবাদের সংগীতশিল্পী শ্রী সৌম্যদীপ শিকদার। সৌম্যদীপ এর বয়ান অনুযায়ী ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন তিনি মলের ফুডকোর্টে মোবাইল ফোনের জন্য একটি চার্জিং পয়েন্ট চান একজন মল কর্মচারীর কাছে। উত্তরে ঐ ব্যক্তি হিন্দিতে তুই-তোকারি শুরু করেন বলে সৌম্যদীপ এর অভিযোগ। সৌম্যদীপ প্রতিবাদ জানাতে বাকবিতণ্ডা হয় এবং পরবর্তীতে মলের সিকিউরিটি ডেকে তাঁকে রীতিমত শারীরিক নিগ্রহ করা হয় বলে সৌম্যদীপ তার লাইভ ভিডিওতে জানান। ওই দিন রাতেই তিনি কসবা থানাতে একটি জেনারেল ডায়েরিও করেন।

সামাজিক মাধ্যমের মধ্য দিয়ে এই ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়ে দিকে দিকে। ঐক্য বাংলা – বাংলার প্রথম মুক্ত পন্থী বাঙালি জাতীয়তাবাদী সংগঠন – প্রতিবাদ জানায়। ঐক্য বাংলার প্রতিনিধিরা সোমবার 17 ই ফেব্রুয়ারি বিকেলে পৌঁছে যান অ্যাক্রপলিস মল এ, মল কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের লিখিত দাবি পত্র জমা দিতে। মল কর্তৃপক্ষ সেই দাবিপত্র নিতে অস্বীকার করে। পরদিন মঙ্গলবার 18 ই ফেব্রুয়ারি আবার অ্যাক্রপলিস মল এ উপস্থিত হন ঐক্য বাংলার যোদ্ধারা। তাদের দাবি ছিল – লিখিত বা ভিডিওর মাধ্যমে বাঙালি গ্রাহক সৌম্যদীপ এর কাছে তার হেনস্থা র জন্য ক্ষমা চাইতে হবে, এবং পরবর্তীতে সিসিটিভি ফুটেজ এর ভিত্তিতে আভ্যন্তরীণ তদন্ত করে দোষী হিন্দিভাষী কর্মচারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

প্রথমে দাবি পত্র জমা নিতে আবার অস্বীকার করেন উপস্থিত কর্মচারীরা। পরবর্তীতে দাবি পত্র জমা নিলেও, ক্ষমা চাইতে অস্বীকার করেন তারা। এই পর্যায়ে মলে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন ঐক্য বাংলা প্রতিনিধিরা। আলোচনা শুনে এগিয়ে আসেন উপস্থিত বাঙালি গ্রাহক মন্ডলীর অনেকেই। তারা জানান তারা সামাজিক মাধ্যমে ঘটনাটির বিষয়ে অবগত আছেন। বহু বাঙালি ঘটনাটির নিন্দা করেন এবং মল কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চেয়ে নিতে অনুরোধ করেন। ঐক্য বাংলা যোদ্ধাদের লাগাতার আন্দোলন এবং উপস্থিত বাঙ্গালী জনতার চাপে অবশেষে ইমেইলে সৌম্যদীপ এবং ঐক্য বাংলা সংগঠনের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয় মল কর্তৃপক্ষ।

ঐক্য বাংলার তরফে শ্রীমতি সুলগ্না দাশগুপ্তের ভাষায়, “এই জয় বাঙালির জয়।” সৌম্যদীপ এই ক্ষমা প্রার্থনার ইমেইলটি কে “হাস্যকর” আখ্যা দিলেও জানান, “আমি ঐক্য বাংলা সংগঠন এবং সুলগ্না দি কে আন্তরিক ধন্যবাদ দিতে চাই তাঁদের এই আন্দোলনের জন্য। আজকে তাঁদের এই আন্দোলন না হলে মল কর্তৃপক্ষ হয়তো এটুকুও করত না।”

অ্যাক্রপলিস মল এর তরফে সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।উপযুক্ত আভ্যন্তরীণ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ঐক্য বাংলা সংগঠন এই আন্দোলনে অভিযোগকারী বাঙালি গ্রাহক সৌম্যদীপের পাশে আছে বলে সংগঠনের তরফে জানান সুলগ্না।
