বিহারে আজ দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ভাগ্য পরীক্ষা হবে তেজস্বীর

প্রথম দফার নির্বাচন শেষ। চলছে দ্বিতীয় দফার প্রস্তুতি। সেখানেই একা কুম্ভ হয়ে বিহার কাঁপাচ্ছেন লালুপুত্র তেজস্বী যাদব। একদিনে ১৯টি জনসভা করে ভাঙছেন পূর্বসূরীর নির্বাচনী রেকর্ড, তো কখনও শত্রুর অস্ত্রের ঘায়েল করছেন শত্রুকেই। সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দফা নির্বাচনের আগে সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে বিহারের জনগণ সকলের মন কেড়ে নিয়েছেন একা তেজস্বী। লালু পুত্রের একের পর এক জনসভায় ভিড় জমছে চোখে পড়ার মতো। যদিও প্রতিপক্ষও কম শক্তিশালী নয়। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই বিহারের দ্বিতীয় দফার এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। বলা যেতে পারে এই নির্বাচনে ভাগ্য পরীক্ষা হয়ে যাবে বিহারের মসনদে নীতীশ যাবেন নাকি তেজস্বী?

মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩ নভেম্বর বিহারে দ্বিতীয় দফার নির্বাচন হতে চলেছে ১৭ টি জেলার ৯৪ টি কেন্দ্রে। এখানেই ভাগ্যনির্ধারণ হতে চলেছে লালু প্রসাদ যাদবের দুই পুত্রের। তেজস্বী যাদব এবার লড়ছেন পারিবারিক আসন রঘুপুর থেকে। পাশাপাশি তেজ প্রতাপ লড়াই করছেন হাসানপুর কেন্দ্র থেকে। আর এই দুটি কেন্দ্রে নির্বাচন হতে চলেছে আগামীকাল। সংখ্যাতত্ত্বের হিসেব বলছে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ৯৪ টি কেন্দ্রে আরজেডির প্রার্থী সংখ্যা ৫৬ টি। নীতীশ কুমারের জেডিইউ এখানে লড়ছে ২৪ টি আসনে। দ্বিতীয় দফার লড়াইয়ে বিজেপি প্রার্থী দিয়েছে ৪৬ টি আসনে। পাশাপাশি কংগ্রেস লড়ছে ২৪ টিতে। হিসেব অনুযায়ী আরজেডির সঙ্গে বিজেপির সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বীতা ২৭ টি আসনে।

তবে এই নির্বাচনের অন্যতম বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে এলজেপি(লোক জনশক্তি পার্টি)। আরজেডির বিরোধী দল হলেও সরাসরি নীতীশ কুমারের দলের বিরুদ্ধে সরব চিরাগ পাসওয়ান। নীতীশের শাসনকালে দীর্ঘ ১৫ বছরের অনুন্নয়ন ও অপশাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়ে উঠেছেন তিনি। চিরাগ পাসওয়ানের দল যে বড় সংখ্যক দলিল ভোট টানবে তা স্বীকার করে নিয়েছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে শাসকদল নাকি বিরোধী? কার জন্য বিপদজনক হয়ে উঠবে এলজিপি সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে বিহারের মসনদ এবার নীতীশের দখলে যাবে নাকি তেজস্বীর?

তবে নির্বাচনের কঠিন অংকে যাই ঘটুক না কেন, বিহার রাজনীতিতে আপাতত সমস্ত ফোকাস একা কেড়ে নিয়েছেন তেজস্বী যাদব। তিনি আগেই ঘোষণা করে দিয়েছেন ৯ নভেম্বর জেল মুক্তি হবে লালু প্রসাদ যাদবের। আর ১০ নভেম্বর বিহারের মসনদ থেকে সরে যাবেন নীতীশ কুমার। পাশাপাশি নির্বাচনী ইস্তেহারে চাকরি ও বিহারের উন্নয়নের আশ্বাস দিয়ে কাছে কাছে টেনেছেন বিহারবাসীকে। প্রচারের আলোতেও বাকিদের থেকে অনেক এগিয়ে তেজস্বী। একদিকে যখন লালুপ্রসাদ যাদবকে টেনে এনে অতীতের বিহারে দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছে এনডিএ জোট। সেখানেই সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও উন্নয়নের কথা তুলে ধরে একের পর এক প্রচারে মানুষের আস্থা অর্জন করছেন তেজস্বী যাদব। শত্রুর অস্ত্রেই বিঁধেছেন শত্রুকে। গত শনিবার পাঁচ বছর আগের নীতীশ কুমারের তৎকালীন প্রতিপক্ষ নরেন্দ্র মোদির একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আনেন তেজস্বী। যেখানে নীতীশের বিরুদ্ধে ৩৩ টি দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। তেজস্বীর এই চালে রীতিমতো বিপাকে পড়তে হয়েছে নরেন্দ্র মোদি ও নীতীশ কুমারকে। একের পর এক প্রচারে তেজস্বী যেখানে উন্নয়নের পক্ষে সরব, সেখানেই ব্যক্তিগত আক্রমণে তেজস্বীকে থামাতে তৎপর নরেন্দ্র মোদি, নীতীশ কুমার। তাতে অবশ্য ঘুরিয়ে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছেন লালু পুত্র। সব মিলিয়ে লন্ঠন জ্বলুক বা না জ্বলুক নির্বাচন লগ্নে প্রতিপক্ষকে নাকাল করতে সমস্ত দিক থেকে সফল তেজস্বী ।

Previous articleজেলা প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল রাজ্যের, নবান্ন বলছে রুটিন বদলি
Next articleব্রেকফাস্ট নিউজ