Sunday, August 24, 2025

মমতাকে প্রণাম করেই বিজেপির সম্বর্ধনা সভায় হাজির সুনীল-বিশ্বজিৎ

Date:

Share post:

দুপুরে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিলো, সন্ধ্যায় দেখা গেলো ধারনাটি বোধহয় পুরোটাই ভুল৷

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো বনগাঁর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং সোমবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বিধানসভায়৷ তখনই একটা জল্পনা তৈরি হয়, এই দুই বিধায়ক তাহলে তৃণমূলেই ফিরছেন৷ বিশ্বজিৎ ও সুনীল বহু আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তৃণমূল অন্দরের দাবি, সুনীল- বিশ্বজিৎকে ‘ঘরে ফেরাতে’ চেষ্টাও একটা চলছিলো৷
এদিন দুপুরে বিধানসভার করিডোরে হঠাৎ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি পড়ে যান দু’জনই৷ বিশ্বজিৎকে দেখে মমতা বলেন, “কীরে, কিছু ভাবলি?” বিশ্বজিৎ উত্তর দেননি৷ এর কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে ঢুকছেন এই যুগল, বিশ্বজিৎ ও সুনীল। মুহুর্তে জল্পনা তৈরি হয়৷ উত্তর ২৪ পরগণার একাধিক তৃণমূল বিধায়ক তো বলেই দেন, “এই তো ফাইনাল হয়ে গেলো৷ এই দু’জন যে কোনওদিন তৃণমূলে ফিরছেন”৷

ওদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর ঘর থেকে বেরিয়ে দুই বিধায়কই বলেন, “উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়েছিলাম। বিধায়ক তহবিলের টাকা ও প্রকল্প আটকে আছে৷ সেই বিষয়েই কথা বললাম৷” এই কথার মধ্যেও অনেকেই দলবদলের ইঙ্গিত খুঁজে পান৷

বিষয়টি কিন্তু বেশিক্ষণ এতখানি মসৃন রইলো না৷ এমনিতে গেরুয়া-শিবিরের হালচালে বিশ্বজিৎ কিছুদিন ধরেই ক্ষুব্ধ৷ গেরুয়া সূত্রে জানা যায়, বিশ্বজিতের রাগ, বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সক্রিয় এবার তাঁকে যাতে প্রার্থী করা না হয়৷ সুনীলের ‘অশান্তি’ আর এক বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংকে নিয়ে৷ ইদানিং অর্জুন নাকি সুনীলকে ‘সহ্য’ করতে পারছেন না৷ বিজেপি নেতারা আগে থেকেই এসব জানেন৷ কিন্তু পদ্ম-শিবির ভাবতেই পারেননি, সুনীল-বিশ্বজিৎ সরাসরি তৃণমূলনেত্রীর কাছে পৌঁছে যাবেন৷

বিধানসভায় যখন মমতা- বিশ্বজিৎ-সুনীল পর্ব চলছে, তখন হেস্টিংসে বিজেপি (BJP) পার্টি অফিসে দলে নবাগতদের সংবর্ধনা দেওয়া হচ্ছিল। তখনই দুই বিধায়কের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার খবর পৌঁছে যায়৷ পরিবেশ থমথমে হয়ে যায়। ভোটের মুখে দলবদল হলে মুখ পুড়বে৷ তাই তখনই হেস্টিংসের বিজেপির নির্বাচন অফিসে ডাকা হয় দু’জনকে৷ বনগাঁর বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিং-র সঙ্গে দ্রুত বৈঠক করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায় ও অর্জুন সিং৷ বোঝানো হয় দু’জনকে৷ প্রার্থীপদ নিশ্চিত করা হয়৷ সম্ভবত, কাজ হয় এতে৷ এরপর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাঝে পথে সুনীল-বিশ্বজিৎকে মঞ্চে তুলে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। আপ্লুত হন দুই বিধায়ক ৷ ওদের বডি -ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে কারো বোঝার উপায় ছিলো না, দুপুরে এদের নিয়েই জল্পনা ছিলো ‘ঘর ওয়াপসি’-র৷

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার খবর ছড়িয়ে পড়ায় অনেকটাই লাভ হয়েছে সুনীল- বিশ্বজিতের৷ বিজেপিতে নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন এবং প্রায় খাদের কিনারায় চলে যাওয়া দলের টিকিট ফিরে পাওয়ার মৌখিক গ্যারান্টি আদায় করেছেন গেরুয়া-নেতাদের কাছ থেকে৷

‘ঘর ওয়াপসি’ এ যাত্রা বোধহয় আর হচ্ছে না৷

p

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...