Sunday, May 11, 2025

বাম ব্রিগেডে চমক সেই “টুম্পা সোনা”, দুপুরের মেনুতে রুটি-সবজি

Date:

Share post:

‘‘‌চল টুম্পা তোকে নিয়ে ব্রিগেড যাব’‌’‌ কথার সঙ্গে চটুল বাজনা। বামেদের রবিবাসরীও ব্রিগেড সমাবেশের প্রচারে “টুম্পা সোনা” গানের প্যারোডি। আর এই নিয়েই সমালোচনা, বিতর্ক নানা মহলে। কারণ, বামফ্রন্টের ব্রিগেড মানেই লাল পতাকা আর গণ সঙ্গীত। সলিল চৌধুরীর গান থেকে প্রয়াত অজিত পান্ডে, শুভেন্দু মাইতি হয়ে হালফিলে শুভ প্রসাদ নন্দী মজুমদার। দীর্ঘ দিনের চেনা ছবিতে এবার বদল? সবকিছু ওলট-পালট করে এবার ছাত্রনেতা রাহুলের “টুম্পা সোনা” মাতাচ্ছে ব্রিগেড। যে প্যারোডি ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের কোনায় কোনায়। পছন্দ হোক বা না হোক, প্রশংসা হোক কিংবা নিন্দা, টুম্পা সোনার তালে তালেই চললো ব্রিগেড প্রস্তুতি। এবং সিপিএমের সিনিয়র লিডার সুজন চক্রবর্তী থেকে ছাত্রনেতা সৃজন ভট্টাচার্য, নতুন প্রজন্মের তরুণ তুর্কি শতরূপ ঘোষ বাহবা দিচ্ছেন “টুম্পা সোনা”-কে। সব মিলিয়ে এবার সিপিএমের ব্রিগেডের আগে-পরে চমক “টুম্পা সোনা”! সুজন চক্রবর্তী তো বলেই দিলেন, “বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গান নিয়েই প্যারোডি হয়। মানুষ পছন্দ করলে সমস্যা কোথায়? বাংলার রাজনীতিতে যে ভাষা সন্ত্রাস তৈরি হয়েছে, তার থেকে এই গানের ভাষা অনেক ভালো। তাছাড়া প্যারোডি, কার্টুন তো বাংলার সংস্কৃতি। রাজনীতিতে সেগুলি ফিরে আসুক।” শতরূপ বললেন, “পার্টি থেকে কেউ এই গান বানাতে বলেনি। কিন্তু প্যারোডি জনপ্রিয় হয়েছে। আমার তো খুব ভালো লেগেছে। যাদের ভালো লাগবে না, তাঁরা শুনবেন না”!

মাস কয়েক আগে একটি বাংলা ওয়েব সিরিজের জন্য কলকাতার এক রেডিও জকি এই ‘‌‘‌টুম্পা সোনা’‌’‌ গানটি বানান। মজাদার কথা আর কোমর দোলানো সুরে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যায় গানটি। গানের কথা বদলে ব্রিগেডের সমাবেশে ছাত্র–যুবদের টানতে প্যারোডি বানানো হয়েছে। প্রচারের উদ্দেশ্যে তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুধু বিরোধী রাজনৈতিক দলের কটাক্ষই নয়, এতে বিস্তর চটেছেন অনেক বাম সমর্থক। এমনকি বাম শরিকরাও মানতে পারছেন না এহেন গান।

অন্যদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বামফ্রন্টের এক বর্ষীয়ান নেতার গলায় ক্ষোভ। ‘‌‘‌ও আলোর পথযাত্রী’‌’‌ , ‘‌‘পথে এবার নামো সাথী’‌’ এসব গান শুনেছি। আর এই গানে ‘‌‘‌ভোগে যাক’‌’‌, “মাইরি”, ‘‌‘‌সেটিং’‌’‌ এসব শব্দ শুনতে হচ্ছে’‌’‌। মজার বিষয় হল, যে যাই বলুন বাম ছাত্র যুবদের মধ্যে ইতিমধ্যেই হিট এই গান। আবার রক্ষনশীলরা বলছেন, দলের আরও অধঃপতন হলো।

এদিকে, রবিবারের ব্রিগেডকে সামনে রেখে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া বামেরা। বামেরা মূল উদ্যোগতা হলেও নির্বাচনী সহযোগী কংগ্রেস, আইএসএফের সমর্থকরা উপস্থিত থাকবেন। দশ লক্ষ মানুষকে মাঠে এনে ঐতিহাসিক সমাবেশ করাই লক্ষ্য তাদের। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের থেকে আসবেন সমর্থনকারীরা।

কিন্তু উত্তরবঙ্গ-সহ দূরের জেলাগুলি থেকে যে সকল সমর্থকরা ইতিমধ্যেই কলকাতায় আসা শুরু করেছেন, তাঁদের থাকা-খাওয়ার কী ব্যবস্থা?‌ ব্রিগেডের আশেপাশে অস্থায়ী শিবির করা হয়েছে। দূরের জেলা থেকে যাঁরা এসেছেন, ওই শিবিরের রাত কাটাবেন তাঁরা। আর খাবার হিসেবে থাকছে হাতে গড়া রুটি-‌সবজি। টিফিন হিসেবে থাকছে রাজ্যজুড়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে শুকনো খাবারও সংগ্রহ করা মুড়ি, চানাচুরও, লাড্ডু।

কংগ্রেসের তরফে অবশ্য হাওড়া, মধ্য কলকাতার বেশ কিছু ধর্মশালা, হোটেল বুক করা হয়েছে। বুক করা হয়েছে বহু কমিউনিটি হল। ব্রিগেডের মাঠে কিছু ক্যাম্প করে তাঁদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন- ভোট ঘোষণার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কমিশনের নজরবন্দি অনুব্রত মণ্ডল

Advt

 

spot_img

Related articles

‘বৈভবের ক্রিকেট’, উৎপল সিনহার কলম 

ছাড়ার বল ছাড়োমারার বল মারোএটাই ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের আদি আপ্তবাক্য ।এর মানে , ভালো বলকে সম্মান দাও এবং...

সংঘর্ষ বিরতির পর থমথমে জম্মু- কাশ্মীর, সীমান্তবর্তী সব রাজ্যে সতর্কতা

ভারত- পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতি (Ceasefire between India Pakistan) আবহে রবিবাসরীয় সকালে থমথমে ভূস্বর্গ। শনিবার রাতে সীমান্তের ওপার...

জম্মুর নাগরোটা মিলিটারি স্টেশনে হামলার চেষ্টা! আহত কর্তব্যরত সেন্ট্রি  

সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের (Ceasefire Violation)মাঝেই শনিবার রাতে জঙ্গি আক্রমণের কায়দায় জম্মুর নাগরোটা মিলিটারি স্টেশনে হামলার চেষ্টা। ভারতীয় সেনার...

বাংলাদেশে আওয়ামি লিগের রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিষিদ্ধ, ঘোষণা ইউনুস সরকারের

বাংলাদেশে বড় সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তী ইউনুস সরকার। শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বিচার প্রক্রিয়া...