প্রতিমা বিসর্জন দেখতে আনন্দে মাতোয়ারা তখন মালবাজারবাসী। মাল নদীর ঘাটে তখন এককথায় খুশির মেজাজ। কিন্তু আচমকাই নদীতে হড়পা বান আসায় আনন্দের সুর তখন বিষাদে পরিণত হয়েছে। জলের তোড়ে ভেসে যেতে থাকে অসংখ্য মানুষ। আর সেই দৃশ্য দেখে নিজের কথা না ভেবেই ঝাঁপিয়ে পড়েন এক যুবক। অন্তত ১০ জনের প্রাণ বাঁচান সে। তারপর থেকেই মালবাজারের তেসিমলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা মহম্মদ মানিক এখন রিয়েল হিরো।
আরও পড়ুন: মার্লিন সেরা পুজো ২০২২

দশমীর দিনের ঘটে যাওয়া সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা এখনও ভুলতে পারছেন না মানিক। তিনি বলেন, বিসর্জন দেখতে সেও উপস্থিত ছিলেন মাল নদীর ঘাটে। আচমকাই হড়পা বান আসায় স্রোতের টানে খড়কুটোর মতো ভেসে নিয়ে যাচ্ছিল সাধারণ মানুষগুলোকে। আর তা দেখে এক মুহূর্তও নষ্ট না করে নিজের মোবাইল ফোনটা এক বন্ধুর হাতে দিয়ে নদীতে লাফিয়ে নামি। এরপর একের পর একজনকে টেনে তুলতে থাকেন মানিক। অন্তত ১০ জনকে উদ্ধার করেন তিনি।আর সেই কাজের জন্যই এখন নানা সম্মানে ভূষিত হচ্ছেন তিনি।
উদ্ধারে নেমে নিজের শরীরের কথা একরকম ভুলেই গিয়েছিল মানিক। উদ্ধার করতে গিয়ে তাঁর পায়ের আঙুলও কেটে যায়। এরপরই দমকল কর্মীরা তাঁকে মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়েও দেওয়া হয়।
ডুয়ার্সের মালবাজার শহরের পাশাপাশি আশেপাশের বিভিন্ন চা বাগান এলাকা থেকে পুজো উদ্যোক্তারা তাদের প্রতিমা নিয়ে বিসর্জন দিতে আসেন এই মাল নদীতে। আর সেই বিসর্জন দেখতে ডুয়ার্সের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক হাজার মানুষ দশমীর রাতে বিসর্জন ঘাটে জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু হড়পা বান আসে নদীতে। অনেকেই জলের তোড়ে ভেসে যেতে থাকেন। তখনই ভেসে যাওয়া মানুষদের প্রাণ বাঁচাতে ঝাঁপ দেন মানিক।
