অবশেষে নেপালের কাঠমান্ডুর জেল থেকে মুক্ত করা হল
“বিকিনি কিলার” চার্লস শোভরাজকে। নেপালের সুপ্রিম কোর্ট গত বুধবারই তার মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করেছিল। কিন্তু কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য নেপাল সরকার এই সিরিয়াল কিলারকে ওইদিনই মুক্তি দিতে পারেনি। অবশেষে সেই নির্দেশ আজ শুক্রবার মুক্ত করা হল চার্লস শোভরাজকে।

সাজা ঘোষণার পর থেকে “বিকিনি কিলার” চার্লস শোভরাজ প্রায় ১৯ বছর পরে কাঠমান্ডু জেল থেকে বেরোল। একাধিক সুন্দরী মহিলাকে খুন, ধর্ষণ, লুটের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল ফরাসি নাগরিককে। এদিন কাঠমান্ডু জেলের বাইরে বেরিয়ে পুলিশের গাড়িতে “অজ্ঞাত” স্থানে যান চার্লস শোভরাজ। অসমর্থিত একটি সূত্রের খবর, শোভরাজের হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা থাকায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্য একটি সূত্রের দাবি, থাইল্যান্ডে একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত “বিকিনি কিলার”কে ব্যাঙ্ককে পাঠাতে পারে নেপাল সরকার।


সত্তর ও আশির দশকের গোড়ায় থাইল্যান্ড-সহ বিভিন্ন দেশে মহিলা পর্যটকদের মাদক খাইয়ে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ রয়েছে চার্লস শোভরাজের বিরুদ্ধে। তাঁর অধিকাংশ শিকারের পরনেই নাকি থাকত বিকিনি। খুনের ধরন দেখে শোভরাজকে বলা হত “দ্য স্প্লিটিং কিলার”। হত্যাকাণ্ডের পরে সরীসৃপের মতো মসৃণ পথে পালানোর কায়দা তাকে নাম দিয়েছিল “দ্য সারপেন্ট”। পরে একটি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এই নামেই শোভরাজের জীবনীর অনুকরণে একটি ওয়েব সিরিজ তৈরি করেছিল।

বিশ্বের অপরাধ মানচিত্রে অন্যতম কুখ্যাত এই ‘সিরিয়াল কিলার’ দিল্লিতে ৩ পর্যটককে বিষ খাওয়ানোর অপরাধে ভারতের তিহাড় জেলেও ছিলেন দীর্ঘ দিন। একাধিক ভাষায় পারদর্শী শোভরাজ তার সুদর্শন চেহারা এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বকে কাজে লাগাতেন ‘শিকার’কে বাগে আনতো। একাধিক বার জেল থেকে পালানোর অভিযোগও উঠেছে শোভরাজের বিরুদ্ধে। ১৯৮৬ সালে তিহাড় থেকেও পালিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কিছু দিন পরেই গোয়ার এক রেস্তরাঁ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।


১৯৯৭ সালে ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে নিজের দেশ ফ্রান্সে গিয়েছিল শোভরাজ। এর পর নেপালে গেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৫ সালে কাঠমান্ডুতে দুই পর্যটককে খুনের মামলায় শোভরাজকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন জেলের সাজা দিয়েছিল নেপালের আদালত। পুলিশি জেরায় শোভরাজ ১২ জনকে খুনের কথা কবুল করেন বলে নেপাল পুলিশে দাবি। অবশেষে নেপাল সুপ্রিম কোর্ট প্রায় দু’দশক জেলবন্দি শোভরাজের মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করে। এবং আজ তাকে জেল থেকে মুক্ত করা হয়।
