প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) নিয়ে ডকুমেন্টারি (Documentary) প্রকাশের জের। যার খেসারত যে এভাবে দিতে হবে তা হয়তো দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেনি বিবিসি (British Broadcasting Corporation)। ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চন’ (India The Modi Question) নিয়ে চরমে ওঠে বিতর্ক। এবার বিবিসি-র বিরুদ্ধে বিদেশি মুদ্রা লেনদেন আইন (Foreign Exchange Violation) লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি (Enforcement Directorate)। জানা গিয়েছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে ইডি মামলাটি দায়ের করে। ইতিমধ্যে বিবিসির ভারতীয় শাখার অন্যতম এক ডিরেক্টর সহ ৬ কর্মীকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।

উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে বিবিসি ইন্ডিয়া। মাসখানেক আগেই আয়কর দফতরের দল বিবিসির দিল্লি এবং মুম্বই অফিসে হানা দেয়। করের ক্ষেত্রে অনিয়ম, মুনাফা বদলানো এবং নিয়ম না মানার অভিযোগে ফেব্রুয়ারি মাসে বিবিসির দফতরে হানা দিয়েছিল আয়কর বিভাগ। আর তার কয়েক মাসের মধ্যেই এবার ইডির সমন গেল বিবিসি ইন্ডিয়ার অফিসে। উল্লেখ্য, বৈদেশিক বাণিজ্য নীতিতে গরমিলের অভিযোগে ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যমটির বিরুদ্ধে এবার তদন্ত করবে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, ফরেন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট-এর নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে বিবিসি ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে। ফেমা আইনে দায়ের করা হয়েছে মামলা। ইডি সাফ জানিয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগ ও লেনদেন সংক্রান্ত বিস্তারিত নথি দেখাতে হবে সংবাদ সংস্থাটিকে।


বিষয়টির সূত্রপাত মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গুজরাটের হিংসায় নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি দুই পর্বের একটি তথ্যচিত্র, ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’ সম্প্রচার করেছিল বিবিসি। আর তা নিয়েই শুরু হয় জোর বিতর্ক। এরপরই গত ২০ জানুয়ারি তথ্যচিত্রের প্রথম পর্বটি দেশে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদি সরকার। বিদেশ মন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে দাবি করে, মোদির চরিত্র হনন করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। এরপরই ফেব্রুয়ারি মাসে বিবিসির দিল্লি এবং মুম্বইয়ের অফিসে ম্যারাথন অভিযান চালায় আয়কর দফতর। বলা হয়, আয়কর সংক্রান্ত বিভিন্ন বেনিয়মের সন্ধান পেয়েছেন তারা। আর সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে বিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে তদন্তের কাজ শুরু করল ইডি।

তবে বিরোধীদের অভিযোগ, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কিছু বললেই তা অপরাধ বলে গণ্য করা হচ্ছে। জোর করে মিথ্যাভাবে মোদি বিরুদ্ধ কথা বললেই তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে। জোর করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে হেনস্থা করা হচ্ছে।

