কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে CBI তদন্তের দাবি, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি!

কোনও এক অজ্ঞাত কারণে টুর্নামেন্ট আয়োজনের সেই বিডিং থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা। এআইএফএফ কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন ছাড়াই একতরফাভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ

অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তথা বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠল। পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে কল্যাণ চৌবে দুর্নীতি, ব্যক্তিগত সুযোগ-সুবিধালাভ এবং দলবাজি করছেন। যা আখেরে ভারতীয় ফুটবলের ক্ষতি করছে।

বিষয়টি নিয়ে গত পয়লা মে কল্যাণের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দফতরে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোপাল কৃষ্ণ কোসারাজু। শুধু সভাপতি নয়, চিঠিতে নালিশ জানানো হয়েছে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সচিব শাজি প্রভাকরণের বিরুদ্ধেও। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে গোপাল কৃষ্ণের হয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন আইনজীবী শ্রবণ কুমার। তাঁর কথায়, “আমার মক্কেলের অভিযোগ, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনে বেনিয়ম হয়েছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে সিবিআইকে দিয়ে তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোপাল কৃষ্ণ কোসারাজু। প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে পাঠানো সেই চিঠির প্রতিলিপি টুইটে পোস্ট করে এদিন বিষয়টি সকলের গোচরে আনেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।

 

কল্যাণ চৌবের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ? ২০২৭ সালে এএফসি-এশিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের আসর বসবে। প্রতিযোগিতা আয়োজনের দৌড়ে ছিল ইরান, সৌদি আরব কাতার এবং ভারতও। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে টুর্নামেন্ট আয়োজনের সেই বিডিং থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা। এআইএফএফ কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন ছাড়াই একতরফাভাবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গোপাল কৃষ্ণ। তাঁর আরও অভিযোগ, যেভাবে বিডিং থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আসরে দেশের বদনাম হয়েছে। ভবিষ্যতে ভারতকে তার মাশুল গুনতে হতে পারে। অলিম্পিক্স, ফুটবল সহ বিভিন্ন খেলার এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের ক্ষেত্রেও বিডিংয়ে ভারতের সম্ভাবনা সেক্ষেত্রে বাধা পাবে। গোপাল কৃষ্ণের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশনের কর্তাদের সঙ্গে আঁতাঁত রয়েছে এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট তথা বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের।

প্রধানমন্ত্রীর দফতরে দেওয়া চিঠিতে দলবাজি করার গুরুতর অভিযোগও এনেছেন গোপাল কৃষ্ণ। তাঁর দাবি, বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সচিব এআইএফএফ-এর অন্দরে এবং দেশের সমস্ত রাজ্য ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনগুলিতে গোষ্ঠীবাজিতে উৎসাহিত করছেন৷ যে অ্যাসোসিয়েশনগুলি তাঁদের লবিতে নেই, তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কাছে গোপাল কৃষ্ণ কোসারাজু অনুরোধ জানিয়েছেন, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের বিডিং থেকে নাম প্রত্যাহার এবং অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন ও সৌদি আরব ফুটবল ফেডারেশনের মধ্যে আঁতাতের তদন্ত করা হোক। এআইএফএফে আর্থিক অনিয়মের বিষয়েও তিনি সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। পিএমও’র কাছে তাঁর অনুরোধ, ডিরেক্ট কম্পট্রলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়াকে দিয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সমস্ত আর্থিক লেনদেনের অডিট করানো হোক। আর কোনওরকম আর্থিক অনিয়ম পাওয়া গেলে, দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে তা আদায় করা হোক। এবং শাস্তি দেওয়া হোক।