বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজভবনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সংঘাতের আবহ শিক্ষা দফতরের। এরই মধ্যে যাদবপুর, কল্যাণী, বর্ধমান-সহ রাজ্যের ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (CV Anand Bose)। আর এই বিষয় নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে টুইট করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। তাঁর মতে, রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে উপাচার্যদের এই নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনার পরে, পরিস্থিতি আরও জটিল হল শুক্রবার রাজ্যপালের মন্তব্য। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সিভি আনন্দ বোস বলেন, “আলোচনা করা মানেই সব প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে দেওয়া নয়।“

রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখেই নতুন উপাচার্য (Vice-Chancellor) নিয়োগ হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার অভিযোগ করেন শিক্ষামন্ত্রী। নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, “সংবাদ মাধ্যম থেকে জানতে পারলাম সরকার পোষিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মাননীয় রাজ্যপাল আজ আবার ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। এই নিযুক্তি দফতরের সঙ্গে কোনও আলোচনা ব্যতিরেক করা হলো, যা বর্তমানে উপাচার্য নিয়োগের যে নিয়ম আছে তার সম্পূর্ণ পরিপন্থী এবং বেআইনি। এই অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে আমরা বিভাগীয়ভাবে আইনি পরামর্শ নিচ্ছি ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ করা হবে সে বিষয়ে। বেআইনিভাবে নবনিযুক্ত মাননীয় উপাচার্যদের সকলকে উচ্চশিক্ষা বিভাগের পক্ষ থেকে সসম্মান অনুরোধ থাকবে যে, তাঁরা যেন এই নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেন।“

এর আগেও উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্রাত্য বসু। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার বিষয়ে বিল ইতিমধ্যেই বিধানসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে। সুতরাং এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাজভবনের নেই। ফের এই বিষয়ে নিয়ে তোপ দাগলেন শিক্ষামন্ত্রী। এর মধ্যে পড়ে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য দায়িত্ব প্রত্যাখ্যান করেছেন। দায়িত্ব নেওয়ার আগেই পদত্যাগ করেছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।

তবে, রাজভবনের দাবি, রাজ্যপাল আলোচনা করেননি, তেমন নয়। পয়লা জুন থেকে রাজ্যের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য পদ খালি। অন্তর্বর্তী দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যদেরই মেয়াদ বৃদ্ধির সুপারিশ করে রাজভবনে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। কিন্তু অভিযোগ, সেই সুপারিশ না মেনে নিজের ইচ্ছামতো অধ্যাপকদের বেছে নিয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন সিভি আনন্দ বোস। রাজ্যপাল এদিন জানিয়ে দিলেন, সিদ্ধান্তে অনড় থাকবেন তিনি।

আরও পড়ুন:রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, তিহাড় জেলে অনুব্রত-সুকন্যার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দাবি দোলার
